দেবশ্রী আজ পড়েওছে দারুন সেক্সি একটা পোশাক। নিচে কালো রঙের একটা লং স্কার্ট, কোমর থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত ঢাকা। কালোর উপর চুমকি দেওয়া, চিক-চিক-চিক-চিক করছে লং স্কার্টটা। আর উপরে টাইট গেঞ্জি কাপড়ের ছাই-ছাই একটা টি-শার্ট। গোল গলা। গেঞ্জির হাতগুলো খুব ছোট, কাঁধের দুপাশে ৩ ইঞ্চি মতো এসেই শেষ। তারপরে মাখনের মতো মসৃন কোমল দুটো বাহু পুরো উন্মুক্ত। চুলটা বিনুনি করে পিছনে বেঁধে রেখেছে দেবশ্রী। পিছনে গেঞ্জির উপরে তার ফর্সা পিঠের অল্প-একটু উন্মোচিত। তার উপর কালো লম্বা বিনুনিটা দুলছে। কিন্তু যেটা তার উদ্ভিন্ন যৌবনের সবচেয়ে বেশি নির্লজ্জ বিজ্ঞাপন করছে, তা হলো তার উন্নত দুটো স্তন। ডবকা সাইজের স্তনদুটো পাতলা গেঞ্জি কাপড় ঠেলে যেন বেরিয়ে আসতে চায়। ছোটবেলা থেকেই দেবশ্রীর স্তনের সাইজ একটু বড়োই। কিন্তু বিয়ের আগে পারিবারিক সম্মান ও রক্ষণশীলতার কথা ভেবে কাউকেই সে বয়ফ্রেন্ড করেনি। বিয়ের পরে সৈকতের হাতেই প্রথম টেপন খেয়েছে তার রসালো স্তনযুগল, প্রথম কিছু মাস। তাও বহুদিন এখন বন্ধ। ফলে জিনিষদুটো ভীষণ টাইট আর একটুও ঝোলেনি। ব্রা না-পড়লেও তার ডাবের মতো স্তন দুটো উঁচিয়ে থাকে, বোঁটা সমেত। তবু ব্রা পড়তে লাগে এই কারণে যে ব্রা না থাকলে এরকম পাতলা গেঞ্জি কাপড় থেকে বোঁটা খুবই অশ্লীলভাবে দৃষ্টিগোচর হয়। সেটা চায় না দেবশ্রী। তাই ব্রা দিয়ে ঢেকেই রাখে। কিন্তু বোঁটা বোঝা না গেলেও, স্তনের পুরোটাই ভিতর থেকে থেকে উঁচিয়ে আছে যেন কেউ যাবজ্জীবন গেঞ্জি-দন্ড দিয়েছে ওদেরকে। সেই দেখে মেহতাজির মুখে লালা ঝরবে, এ আর আশ্চর্য কি!
মেহতাজি বেরিয়ে যাবেন বলে ল্যাপটপের ব্যাগ গুছিয়ে নিতে নিতে দেবশ্রীকে ঢুকতে দেখলেন রুমে। দেবশ্রীর শরীর থেকে ৩ ইঞ্চি এগিয়ে আছে তার জোড়া-স্তন। সেইদিকে তাকিয়ে মেহতাজির হাত থেমে গেলো। এই মেয়েটা রোজ দারুন দারুন ড্রেস পরে আসে, শরীরের কোনো না কোনো একটা দিক সে ছেলেদের জন্য ডিসপ্লে করবেই। ভাবতে ভাবতে দেবশ্রীর সুউচ্চ স্তন থেকে চোখ না সরিয়েই তিনি বললেন, 'এসে গেছো ? এসো এসো'। দেবশ্রী মেহতাজির চোখে চোখ রেখে বুঝতে পারলো উনি কী দেখছেন। তাকে টীজ করার জন্য সে একটু এগিয়ে এসে বললো, 'হ্যাঁ, আপনি ডাকছিলেন স্যার ? তো এই নিন আপনার জন্য আমি হাজির। কিন্তু আপনি কি আজ বাইরে যাবেন নাকি ?' মেহতাজি এবার চোখ তুলে দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে বললো, 'হ্যাঁ, টেন্ডারটা পাস করাতে যেতে হবে, ওরা তো উচ্চবাচ্যই করছে না, আই থিঙ্ক আই নিড টু মিট দেম ইন পারসন। কিন্তু তোমাকে দেখে তো আর যেতেই ইচ্ছা করছে না।' দেবশ্রী বুঝলো এই বুড়োর খাই না মেটালে তাকে সঙ্গে করেই হয়তো নিয়ে যাবে। সে আরও একটু কাছে এসে মেহতাজির একদম সামনে দাঁড়ালো, আর হাসি হাসি মুখে বললো, 'যেতে ইচ্ছা করছে না, তো আমাকে দেখে কী ইচ্ছা করছে মেহতাজি ?'। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বাকি দূরত্বটুকু মেহতাজি নিজেই এগিয়ে এলেন, আর দেবশ্রীর বুকের সাথে প্রায় ঠেকে দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললেন, 'ইচ্ছা করছে খেলা করতে, কতদিন যে খেলা হয় না এসব নিয়ে।' মেহতাজির চোখের দিকেই তাকিয়ে থেকে দেবশ্রী হালকা করে তার বুকদুটো এবার মেহতাজির সাথে টাচ করিয়ে বললো, 'কীসব নিয়ে মেহতাজি ?'
দেবশ্রীর এই কামুক আচরণে তীব্র বাসনার একটা স্রোত ঠেলা মারলো মেহতাজির যৌন ধাতুতে। চট করে একবার কাঁচে ঘেরা রুমের বাইরে তাকিয়ে নিয়েই তিনি নিজের দুটো হাত দিয়ে দেবশ্রীর কাঁধের কাছে চেপে ধরলেন। তার ইচ্ছা তো করছিলো দেবশ্রীকে বুকের সাথে একেবারে চেপে ধরেন, কিন্তু অতোটা করতে সাহস পেলেন না ঠিক। দেবশ্রীও একবার টাচ করিয়েই তার এগিয়ে থাকা বুক দুটো আবার সরিয়ে নিয়ে এক ইঞ্চি তফাতে রেখেছে মেহতাজির বুক থেকে। মেহতাজি দেবশ্রীর কাঁধ দুটো চেপে ধরে বললেন, 'তোমাকে নিয়ে খেলতে ইচ্ছা করে, তোমার... তোমার... ফুটবল নিয়ে -'। দেবশ্রী খিলখিলিয়ে হেসে উঠে বললো, 'আচ্ছা, তো আপনার নজর শুধু আমার ফুটবলের দিকেই থাকে সবসময় ? আপনার ভালো লাগে আমার ফুটবল ?' বলেই সঙ্গে সঙ্গে আবার বুক দুটো দিয়ে ঠেলা মারলো মেহতাজির বুকে।
আবার একটা কারেন্ট বয়ে গেলো মেহতাজির শরীরে। দেবশ্রীর হালকা ধাক্কাটা পরম আশ্লেষে অনুভব করে তিনি বললেন, 'একদম পটাকা হো তুম।' দেবশ্রী মিষ্টি করে হেসে বললো, 'জানেন তো, পটাকার কাছে কিন্তু বেশি আসতে নেই মেহতাজি, নইলে সব ধ্বংস হয়ে যাবে।' মেহতাজি তার হাতদুটো দেবশ্রীর কাঁধে ঘষতে ঘষতে মন্ত্রমুগ্ধের মতো বললেন, 'ঠিক হ্যায়, উসমে ক্যায়া - তোমার জন্য বরবাদ হতেও রাজি আছি।' দেবশ্রী মুখ টিপে একটু হেসে বললো, 'তাই নাকি ? ভীষণ রোমান্টিক আপনি মেহতাজি -'। সাথে সাথে আবার তার বুক দুটো সামনে ঠেলে দিয়ে বুক দিয়ে ছোঁয়া দিলো মেহতাজিকে। এই নিয়ে তিন-তিনবার সে তার পাকা বেলের মতো ছানার তালদুটো মেহতাজিকে টাচ করালো। বয়স হলেও মেহতাজি আফটার-অল একজন পুরুষ-ই। যতই অফিসের বিধি-নিষেধ থাক, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা তার পক্ষে আর সম্ভব হলো না। মেহতাজি হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে তার মুখের দিকে মুখ নামিয়ে আনছেন দেখে দেবশ্রী চট করে একটু নিচু হয়ে গেলো। সে বুঝতে পারলো যে সে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে। মেহতাজি বাস্তবিকই ওকে কামনা করছেন এই মুহূর্তে। যতই তার নিজের খাই-খাই ভাব থাক, মেহতাজির মতো বয়সের একজন যৌবন-উত্তীর্ণ পুরুষের কাছে নিজের সব সম্পদ তুলে দেবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই দেবশ্রীর। চাকরির প্রয়োজনে আর সুযোগসুবিধার্থে শুধু নিজের শরীর দিয়ে লোভ দেখানোটাই তার উদ্দেশ্য ছিলো, কিন্তু আজ বোধহয় একটু ওভারডোজ হয়ে গেছে। সে একটু নিচু হতেই তার কাঁধে মেহতাজির হাতের চাপ আলগা হয়ে গেলো। তৎক্ষণাৎ পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে এসে দেবশ্রী বললো, 'এতো উতলা হবার কি আছে - আগে টেন্ডারের কাজটা মিটিয়ে আসুন। দেরি হলে টেন্ডার অন্য কেউ নিয়ে নিতে পারে কিন্তু স্যার।' দেবশ্রীকে ছিটকে যেতে দেখে মেহতাজি যেন একটু নিজেকে ধাতস্থ করে নিলেন। টেবিল থেকে ল্যাপটপের ব্যাগ আর ফাইলটা তুলে নিয়ে বললেন, 'ও-কে, তাহলে আজকে চলি। এখানে আর বেশিক্ষন থাকলে আমার আজ আর সত্যিই যাওয়া হয়ে উঠবে না।' মনঃক্ষুন্ন হলেও চাকরির প্রয়োজনে মেহতাজি তখনকার মতো বেরিয়ে গেলেন টেন্ডারের ব্যাপারে।
দেবশ্রী নিজের ডেস্কে ফিরে এসে ঘন্টাদুয়েক কিছু কাজকর্ম করলো। আজকে সেই হারটা আনতে যেতে হবে মলে, কাল যেটা সে দেখে পছন্দ করে এসেছে। লাঞ্চের পরে পরেই সে তার ডেস্ক গুছিয়ে রেখে কম্পিউটারটা অফ করে অফিস থেকে বেরিয়ে এলো। আজ আর ছোট পার্সটাও আনেনি সে, হাতে শুধু মোবাইলটা আছে। খুব ফ্রি লাগে কোনো ব্যাগ-ট্যাগ সঙ্গে না থাকলে। খালি হাতে বেশ আরামসে চলা-ফেরা করা যায়। অফিস থেকে বেরিয়ে এসে ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতেই সে চলে এলো মলের কাছে। মলের সিকিউরিটি গার্ডগুলোর নোংরা লোলুপ দৃষ্টির সামনে দিয়ে ঢুকে নিজের দেহপল্লবী দুলিয়ে দুলিয়ে দেখিয়ে সে সোজা চলে গেলো বেসমেন্টে। এখানেই সব ইমিটেশনের দোকানগুলো আছে। কালকের সেই দোকানটা কাছেই ছিলো। দেবশ্রী সেখানে ঢুকলো। 'দাদা, কালকে একটা লাল-সবুজ পাথর বসানো সোনার জল করা হার দেখে গিয়েছিলাম যে, সেটা নিতে এলাম।' দোকানী লোকটির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে বললো সে।
বিকেলের দিকে এই সময়টায় মলে বেশি কাস্টমার থাকে না। দোকান প্রায় খালিই ছিলো। দেবশ্রীর বাতাবী লেবুর মতো ডাঁসা দুধ দুটো তার টাইট গেঞ্জির ভিতর থেকে ঠেলে বেরিয়ে আছে দেখে দোকানীর অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো প্রায়। দেবশ্রী দাঁড়িয়েছে এসে এমনভাবে যে দোকানের সামনের কাউন্টার টেবিলটা দেবশ্রীর বুকের কাছাকাছি। আর সে তার ভারী স্তনদুটো ঠিক যেন ওই কাউন্টার টেবিলের ওপরেই রেখে দাঁড়িয়েছে। এটা যেহেতু ইমিটেশনের দোকান, সেই কারণে দোকানী লোকটিও লেডিস কাস্টমার হ্যান্ডেল করেই অভ্যস্ত। ভালো-খারাপ সবরকম মেয়েই লোকটি নিত্য দেখে। কিন্তু দেবশ্রীর মতো সুন্দরী অথচ টাইট মাল তার দোকানে কমই আসে। তাই দেবশ্রীকে দেখেই সে চিনতে পারলো। বড়োলোক সুন্দরী কেউ তো আর ইমিটেশন অতো কেনে না। তারা শাঁসালো কোনো হাজব্যান্ড সহজেই পাকড়াও করে নেয়... আর তারপর তাদের লাইফ সেটলড। ওরকম সুন্দরী মেয়েরা উপরে তানিস্ক বা পি সি চন্দ্র জুয়েলার্সের মতো শোরুমে ঢোকে অথবা অঞ্জলি জুয়েলার্সের মতো দোকানে যায়। ইমিটেশন কিনতে কেন আসবে। তাই মেয়ে কাস্টমার নিয়ে আকছার কাজ চালালেও দেবশ্রীর মতো সেক্সী দেহধারিনী মেয়ে দেখতে সে কমই পায় এখানে। কিন্তু কাস্টমারের বুকের দিকে তাকানোটা ব্যবসার পক্ষে খুব ভালো কথা নয়। অতএব কাউন্টার টেবিলের উপর রাখা দেবশ্রীর স্তনের ঝলকটুকু দেখে নিয়েই দেবশ্রীর মুখের দিকে তাকালো লোকটি। 'হ্যাঁ ম্যাডাম, আপনি তো কাল এসেছিলেন, রেডি আছে আপনার হার।' বলে সে শোকেস থেকে কালকের হারটা বার করলো। তারপর কাউন্টারের উপর রেখে বললো, 'সাড়ে চারশো। এক দাম।'
দেবশ্রী কাল শুধু দেখে গিয়েছিলো হারটা। দরদাম তখন করেনি কারণ সঙ্গে ক্যাশ ছিল না। এখন হারটা নিয়ে আবার নেড়েচেড়ে দেখলো। তার মুখে খুশির চিহ্ন ফুটে উঠলো। সে বললো, 'এক দাম বললেই হবে ? আমার জন্য একটু কম করুন ?' বলে দেবশ্রী কাউন্টারের দিকে নিজের শরীরটা আরেকটু এগিয়ে দিয়ে একদম চেপে দাঁড়ালো। ফলে তার উদ্ধত স্তনযুগল নিচে কাউন্টার টেবিলের চাপ খেয়ে আরো উপরে উঠে এলো। তার গেঞ্জির গোল গলা টান খেয়ে ওই স্তনের সাথে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। দোকানী লোকটি দোকানের ভিতরে একটা উঁচু প্লাটফর্মের উপরে দাঁড়িয়ে ছিল। ফলে দেবশ্রীর স্তনের উঁচু হয়ে ওঠা ও তার মাঝখানের বিভাজিকা তার চোখ এড়ালো না। সে সেইদিকে তাকিয়ে আমতা-আমতা করে বললো, 'কী করে কমাবো ম্যাডাম, এইসব ব্র্যান্ডেড ইমিটেশন গয়নায় আমাদের খুব কম লাভ থাকে।' দেবশ্রী বললো, 'একদম কমাবেন না বললে কী করে হয় ?' লোকটি একটু ইতস্ততঃ করলো, 'মুশকিলে ফেললেন ম্যাডাম, সাড়ে চারশো তো আমি কম করেই বলেছি আপনাকে।' দেবশ্রী বুঝতে পারলো, মাছ ছিপের কাছাকাছিই ঘুরছে, আরেকটু চেষ্টা করলেই টোপ গিলবে। সে ভালোই জানে যে ছেলেদের মস্তিস্ক ততক্ষনই কাজ করে যতক্ষণ না তাদের পুরুষাঙ্গ অন্য কোনো সিগন্যাল পাঠায়। নিচের অঙ্গে কাজ শুরু হলেই ছেলেদের মস্তিস্ক কাজ করা পুরো বন্ধ করে দেয়। সে হাত দিয়ে তার গেঞ্জিটা একটু ঠিক করবার অছিলায় সামনে ধরে যতটা পারা যায় গলাটা নামিয়ে দিলো। এতে তার বুকের বিভাজিকা আরো বেশ ভালোমতো উন্মুক্ত হয়ে গেলো। ওই অবস্থায় দেবশ্রী দোকানীর চোখের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বললো, 'তিনশো করুন, প্লীজ।' দোকানী লোকটি যেন খুব চিন্তা করছে, এমনভাবে একবার দেবশ্রীর মুখের দিকে তাকাচ্ছে, একবার তার বুকের খাঁজ দেখছে। দেবশ্রী তখন পাশেই একজোড়া লাল-সবুজ পাথর-বসানো ইমিটেশনের চুড়ি দেখিয়ে বললো, 'ওইটা দেখি - ওটার কত দাম ?' চুড়ি দুটো বাস্তবিকই খুব পছন্দ হচ্ছিলো দেবশ্রীর। এই হারের সাথে একদম একরকম, মানানসই একটা সেট হয়ে যাবে দুটো মিলে।
দেবশ্রীর স্তন থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে লোকটি পাশের শোকেস থেকে ওই চুড়িদুটো বার করে দিলো। সে আর বেশি কথা বলছে না। চুড়ি দুটো হাতে নিয়ে দেবশ্রী আবার জিজ্ঞাসা করলো, 'হারটা তিনশো নেবেন কিন্তু... আর এই দুটো কত ?' লোকটি দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে মিনমিনে গলায় একবার বললো, 'হারটা তো সাড়ে চারশো -'। দেবশ্রী তার বিভাজিকার খুল্লাম-খুল্লা প্রদর্শন করতে করতেই একটু ন্যাকা-ন্যাকা গলায় বললো, 'না, ওটা সাড়ে চারশো বললে আমি শুনছি না। এই দুটো কত বলুন না ?' দোকানী বললো, 'এই দুটো পড়বে আপনার আশি টাকা।' দেবশ্রী তখন তার খোলা ফর্সা বাঁহাতটা লোকটির দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো, 'একটু পরিয়ে দিন না, দেখি কেমন লাগে -'। লোকটি দেবশ্রীর বুকের খাঁজ থেকে চোখ সরিয়ে বললো, 'হ্যাঁ, কী বলছেন ?' দেবশ্রী আবার বললো তার হাতটা দেখিয়ে, 'একটু পরিয়ে দিন না -'। লোকটি নিজের ভাগ্যকে লাখো বাহবা দিতে দিতে সঙ্গে সঙ্গে দেবশ্রীর বাঁহাতটা নিজের দুহাতে তুলে নিলো। তার মাথাতেও এলো না যে ম্যাডাম নিজেই তো পরতে পারতো, তো তাকে কেন বললো পরাতে। সে তখন ওরকম মাখনসম কোমল সুশ্রী হাত পেয়ে চুপচাপ চুড়ি দুটো পরাতে লাগলো। প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশিই হাতটা ডলছিলো সে নিজের হাতের মুঠোয়। দেবশ্রী সেটা অনুভব করতে করতে বললো, 'ওই তিনশোই নেবেন কিন্তু সব মিলিয়ে।' লোকটি দেবশ্রীর হাতের গরম উত্তাপ নিজের হাতে মেখে নিতে নিতে ভাবার চেষ্টা করলো কত লাভ আদৌ তার থাকছে। লাভ আদৌ থাকছে, নাকি লস। সে চুড়ি দুটো পরানো শেষ করে বললো, 'সব মিলিয়ে তাহলে চারশো দেবেন ম্যাডাম, এর চেয়ে কমে হবে না।' দেবশ্রী নিজের হাতে চুড়ি দুটো নাড়িয়ে চারিয়ে দেখতে দেখতে ভীষণ খুশি হয়ে গেলো। কিন্তু দোকানীটিকে বললো, 'না না, ওই তিনশোই ঠিক হবে। আপনি ঠিকই দিতে পারবেন।' অসহায়ভাবে দোকানী লোকটি বললো, 'চুড়ি দুটোর জন্য কিছু তো দিন ম্যাডাম।' দেবশ্রী তার কপালের সামনে থেকে ঝুলে পড়া একগাছি চুল সরিয়ে কানের পাশে গুঁজে দিয়ে আদুরে আদুরে গলায় বললো, 'কেন, চুড়ির জন্য আবার এক্সট্রা কেন ? সব মিলিয়ে তিনশোই হবে, আপনি ঠিক পারবেন। আচ্ছা, চুড়ি দুটো সুন্দর লাগছে, না ? এটা আমার হাতেই থাক, হারটা আপনি প্যাক করে দিন।' বলে সে আরেকটু সামনে ঝুঁকলো কাউন্টারের উপর।
লোকটি হারটা প্যাক করে দিয়ে বললো, 'আর পঞ্চাশটা টাকা অন্তত দেবেন ম্যাডাম, নাহলে আমার ভীষণ লস হয়ে যাবে। বলে সে হারের প্যাকেটটা নিজের হাতেই রাখলো। সে জানে যে প্যাকেটটা দিয়ে দিলে এই ম্যাডাম যদি তিনশো দিয়েই চলে যায়, তাহলে সে আটকাতে পারবে না। তার অলরেডি গায়ের জোর কমে গেছে এরকম হট মালের ফর্সা ফর্সা হাত টিপেটুপে। কিন্তু দেবশ্রীও জানে কী করে কী করতে হয়। সে এবার যা করলো তাতে দোকানীর হাত-পা পুরো অবশ হয়ে গেলো। লোকটির সামনেই দেবশ্রী গেঞ্জির গলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দিলো তার ব্রা-এর ভিতরে রাখা টাকাটা বের করবার জন্য। তার হাতের আঙুলগুলোর চলন পরিষ্কার বোঝা যেতে লাগলো বাইরে থেকে। টাকাটা খুঁজতে খুঁজতে দেবশ্রী লোকটির দিকে তাকিয়ে থেকে অনুযোগের সুরে বললো, 'আমি তিনশোই দেবো, আপনি আর একটা কথাও বলবেন না।' কাউন্টারের ভিতরে শোকেসের নীচে দোকানী লোকটির এক হাত তখন তার শক্ত হয়ে ওঠা পুরুষাঙ্গে চলে গেছে প্যান্টের উপর দিয়ে, কিছু করার নেই। একটু এদিক-ওদিক আঙুল দিয়ে খোঁজার পর দেবশ্রী ৩ টে একশো টাকার নোট বার করে আনলো তার জামার ভিতর বাঁদিক থেকে। দোকানী লোকটি বিস্ফারিত চোখে হাঁ করে গিলছিল পুরো দৃশ্যটা। চরম অশ্লীলভাবে টাকাটা বার করে দেবশ্রী দোকানীটির এক হাতে ধরিয়ে দিয়ে হারের প্যাকেটটা নিয়ে অবলীলাক্রমে চলে গেলো। লোকটি না পারলো কিছু বলতে, আর না পারলো দেবশ্রীকে আটকাতে। একটা শব্দ পর্যন্ত তার মুখ থেকে বের হলো না। আর ওদিকে দেবশ্রী বাইরে বেরিয়ে তার গেঞ্জিটা আবার ঠিক করে নিলো। তারপর মলের সামনে থেকে মহানন্দে একটা অটো ধরলো তাদের আবাসনের উদ্দেশ্যে। এখান থেকে বাসও পাওয়া যায়, কিন্তু আজ একটু বেশি ভাড়া দিয়ে অটোয় গেলেও কিছু ক্ষতি হবে না। প্রায় সাড়ে-পাঁচশো টাকার গয়না, ধরা যাক পাঁচশোই দাম হয়, সেটা সে আরামসে তিনশোতে নিয়ে এলো দরদাম করে। খুব ভালো দরদাম করতে পেরেছে সে। এইটা ভেবেই ভীষণ খুশি ছিলো দেবশ্রী।
সেদিন রাত্রে বাড়ি ফিরে সৈকত নিজেই দরজা খুললো। দেখলো ডিনার এখনই টেবিলে রেডি। আর দেবশ্রী হলরুমের সোফায় বসে টিভি দেখছে। তাকে ঢুকতে দেখেই দেবশ্রী চট করে উঠে এলো, 'বেল বাজালে না যে ?' সৈকত একটা হাত তার পরমপ্রিয় বউ এর কাঁধে রেখে ভর দিয়ে শরীর টা এলিয়ে দিলো। তারপর আস্তে আস্তে সোফার দিকে যেতে যেতে বললো, 'সঙ্গে তো চাবি ছিলো। চেষ্টা করলাম নিজেই একা ঢুকে আসতে। তোমার সাহায্য প্রতিদিন কেন নেবো ?' একটু হাসলো সৈকত।
সৈকতের এই কথায় দেবশ্রীর মনটা যেন একটু মোচড় দিয়ে উঠলো। সৈকত মানুষ হিসাবে খুবই ভালো। কখনো নিজেকে অন্যের উপর বোঝা হয়ে উঠতে দিতে চায় না। কিন্তু স্ত্রী হিসাবে তার কিছু কর্তব্য আছে তার বরের প্রতি। অসুস্থ হোক, কিংবা কখনো কখনো একটু অথর্বই হোক, সৈকত তো তার স্বামীই। সেটা যেন সে কোনোদিন ভুলে না যায়। সৈকতকে পরম যত্নে সোফায় বসতে সাহায্য করলো সে। তারপর বললো, 'এতটা সিঁড়ি রোজ উঠে এসে তুমি ক্লান্ত থাকো। তাই দরকার হলে প্রতিদিনই আমার সাহায্য নেবে। আমি বলছি, নেবে তুমি। তোমার সুখ-দুঃখে তোমার পাশে থাকা, তোমাকে সাহায্য করাই আমার ধর্ম। এভাবে আর কখনো বোলোনা প্লীজ যে রোজ কেন আমার সাহায্য নেবে। আমি তোমার পাশেই থাকবো সারাজীবন। আমি তোমার স্ত্রী।' সৈকত মুখ তুলে তাকিয়ে দেবশ্রীকে একবার দেখে খুব আনন্দ পেলো। সে একটু হাসলো। আজ তার ব্যবহার কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগছিলো দেবশ্রীর। সে সৈকতের দিকে তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞাসা করলো, 'কী হয়েছে আমাকে বলো তো ?' সৈকত হালকা হাসিটা মুখে ধরে রেখেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তারপর বললো, 'আজ ডাক্তারকে ফোন করেছিলাম।' একটু উৎকণ্ঠা নিয়ে দেবশ্রী জিজ্ঞাসা করলো, 'কী বললেন উনি ?' সৈকত বললো, 'ডাক্তারবাবুকে আমি বাঁহাতের কথাটা বলছিলাম, যে - কোনো কিছু ধরতে ঠিক জোর পাই না ওই হাতে... এটা তো কমছেই না। বরং আস্তে আস্তে বাড়ছে যেন। মাঝে মাঝে সাড় পাই না। তো ডাক্তারবাবু বললেন, ওটা হয়তো আস্তে আস্তে কমজোরিই হয়ে যাবে। হয়তো, পুরো বাঁদিকটাই আস্তে আস্তে -'। সৈকতকে কথাটা শেষ করতে না দিয়েই দেবশ্রী তার মুখের উপর নিজের হাত চাপা দিলো, 'না, ওসব কথা বলতে নেই। ও কিছু না, ঠিক হয়ে যাবে। ছাড়ো তো। একটু রেস্ট নিয়ে মুখ হাত ধুয়ে এসো, আমি ডিনার রেডি করে ফেলেছি। তোমার আসার অপেক্ষাই করছিলাম। খাওয়ার আগের ওষুধটা আমি নিয়ে আসছি।' বলে সে ফ্রিজ থেকে ওষুধ বার করে আনতে গেলো। খাওয়ার আগে নিয়ম করে একটা অ্যান্টাসিড খেতে হয় সৈকতকে।
একথা দেবশ্রী অনেকদিন আগেই বুঝে গিয়েছিলো যে সৈকতের বাঁহাতটা আস্তে আস্তে কমজোরি হয়ে যাচ্ছে। বিছানাতেই সে সেটা টের পেয়েছে খুব ভালো করে। সৈকত নিজেও নিশ্চয়ই টের পায় সেটা, কিন্তু নিজের মনকে সে হয়তো প্রবোধ দিয়ে রেখেছে। দেবশ্রীও চায় যে সৈকতের মনের জোরটা বজায় থাকুক। তাই এটা নিয়ে সে বেশি আলোচনা করতে চাইলো না। চুপচাপ ডিনার শেষ করে নিলো তারা। সৈকত গিয়ে বিছানায় শুলো। টুকটাক অন্যান্য কিছু কাজকর্ম মিটিয়ে মিনিট দশেক বাদে দেবশ্রীও চলে এলো বেডরুমে, ওষুধের বাক্স হাতে। সৈকতকে যত্ন করে ওষুধগুলো খাইয়ে দিয়ে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বালিয়ে দিলো। তারপর ঘরের বড়ো লাইটটা নিভিয়ে দিয়ে বাথরুমে গিয়ে ঢুকলো। ভালো করে একবার গা-টা ধুয়ে একটু বডি-স্প্রে ভালো করে সারা গায়ে মেখে সে এসে দাঁড়ালো সৈকতের সামনে।
এখন একটা হালকা গোলাপী কালারের নাইট-গাউন পড়েছে দেবশ্রী। কাঁধের কাছে দুদিকে দুটো হালকা সুতো দিয়ে বাঁধা। উন্নত স্তনযুগলের উপর দিয়ে ঢেউ খেলে মসৃন কটিদেশ ছুঁয়ে নিচের দিকে নেমে গেছে পাতলা কাপড়ের পোশাকটি। চুলটা দেবশ্রীর পিঠের উপর ছড়ানো। রুমে ঢুকে দরজাটা আলতো করে ভেজিয়ে দিয়ে সে বিছানায় উঠে এলো সৈকতের পাশে। সৈকত চিৎ হয়ে শুয়ে দেবশ্রীকেই দেখছিলো। সৈকতের পাশে শুয়ে তার একটা পা সৈকতের কোমরের উপর দিয়ে জড়িয়ে সৈকতের গায়ে গা লাগিয়ে শুলো দেবশ্রী। বললো, 'ঘুমাওনি এখনো ?' সৈকত বললো, 'না, ঘুমটা ঠিক আসছে না - তুমি ঘুমের ওষুধটা দাওনি মনে হয়, তাই না ?' দেবশ্রী একটু হেসে রহস্যপূর্ণ গলায় বললো, 'না, দিইনি... টেবিলেই আছে, আগে একটু আমাকে করো, তারপর ঘুমাবে।' সৈকত দেবশ্রীর পা-টা তার শরীরের উপর থেকে ডানহাত দিয়ে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করলো। দেবশ্রী একহাত দিয়ে সৈকতের হাতটা আটকিয়ে তাকে আরো বেশি করে জড়িয়ে ধরলো। 'জানো আজ একটা খুব সুন্দর হার আর এই চুড়ি দুটো কিনেছি একটা দোকান থেকে। ভালো হয়েছে না দেখতে ?' সে তার হাতটা সৈকতের বুকের উপর নাড়িয়ে আওয়াজ শোনালো। ভাবলো সৈকত হয়তো হাতটা তুলে নিয়ে দেখতে চাইবে ভালো করে। কিন্তু সৈকতের একদম মুড ছিল না এসবের - সে নিজের একটা হাত উল্টিয়ে চোখের উপর আড়াল করে শুয়ে রইলো। দেবশ্রী সৈকতের থুতনি ধরে হালকা করে নাড়িয়ে আদুরে গলায় বললো, 'একটু করো না আগে... তারপর ঘুমাবে... তোমার ইচ্ছা হয় না ? আমাকে এতো কাছে পেয়েও তোমার কিছু করতে মন চায় না ?' সৈকত কিছুটা বিরক্ত হয়েই বললো, 'কালকেই তো হলো একটু।' দেবশ্রীর মাথা যেন জ্বলে উঠলো। মনে মনে ভাবলো, 'কত যেন হয়েছে! নিজের তো খাড়াই হয় না ঠিক করে, আর হলেও সেটা দুমিনিটের বেশি থাকে না। আমার কি তাতে স্বাদ মেটে ? আমার দিকটা কখনো ভেবেছো গত এক বছরে ?' কিন্তু নিজেকে শান্ত রাখলো সে। সেক্স কোনো রাগারাগির বিষয় নয়। চুপচাপ বাঁদিকের কাঁধের ফিতেটা খুলে নিজের উর্ধাঙ্গ কিছুটা উন্মুক্ত করলো সে। ভিতরে ব্রা পড়েইনি। ভারী ভারী স্তনদুটোর একটা যেন লকগেট খোলা পেয়ে অনেকটা বাইরে বেরিয়ে এলো। সৈকতের বুকের উপর নিজের বাঁহাতের পেলব মোলায়েব আঙুলগুলো ঘোরাতে ঘোরাতে দেবশ্রী বললো, 'কিছুই তো হয়নি কালকে। আজ একটু করো.... কতদিন ভালো করে আমাদের হয় না... দেখি ওটার কী অবস্থা -'। বলেই দেবশ্রী একটা হাত নীচে নিয়ে গিয়ে সৈকতের পাজামার ভিতরে ঢোকালো। 'এটা এখনো শুয়ে আছে, দাঁড়াও এটাকে তুলে দিচ্ছি।' বলে দেবশ্রী বাঁদিক থেকে সৈকতের উপর পুরো ঝুঁকে গিয়ে নিজের ডানদিকের স্তনাগ্র সৈকতের গালের সঙ্গে ঠেকিয়ে দিলো গাউনের ভিতর দিয়ে, আর বাঁদিকের উন্মুক্ত দুধেল ডাব এক হাত দিয়ে ঠেলে তুলে সৈকতের নাক-মুখের উপর চেপে ধরলো। নিজের কামোত্তেজিত মাংসল উরু দিয়ে সৈকতের পাজামার উপর থেকে তার নিস্তেজ পুরুষাঙ্গটি ঘষতে ঘষতে দেবশ্রী ব্যাকুল হয়ে বললো, 'খাও আমার দুধের বোতলটা খাও - খালি করে দাও খেয়ে - মুখে নিয়ে চোষো - উঠবে না তোমার, উঠবে না ? দেখবো আমি কী করে না ওঠে... মুখে নিয়ে একবার তো দ্যাখো এটা, তোমার ওই জিনিষটা উঠতে বাধ্য... সবার ওঠে আমাকে দেখে, তোমার কেন উঠবে না ?' সৈকত দেবশ্রীকে বিরত করার চেষ্টা করতে করতে বললো, 'আমার হবে না আজকে। আমার ক্লান্ত লাগছে। তুমি আমার বাঁহাতের উপর চাপ দিয়ে রয়েছো দেবশ্রী, ওখানে রক্ত চলাচল কমে যাচ্ছে।' দেবশ্রী সেসব শুনছিলো না। সে তখন একটা পা ভাঁজ করে তুলে পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে সৈকতের পাজামা টা টেনে নামিয়ে দিয়েছে। তারপর তার ধর্মমতে বিয়ে করা অক্ষম স্বামীর ন্যাতানো লিঙ্গ নিজের পা দিয়ে দলাই-মলাই করতে শুরু করেছে তীব্র কাম-পিপাসায়। একবার পা দিয়ে ডলেও দিলো ওই জিনিষটা। আর নিজের স্তনাগ্র চেপেচুপে গুঁজে দিতে লাগলো সৈকতের হাঁফ-ধরা মুখে।
প্রায় দশ মিনিটের চেষ্টাতেও সৈকতের পুরুষদণ্ডে পৌরুষত্বের কোনো উত্থান দেখতে না পেয়ে অবশেষে হাল ছেড়ে দিলো দেবশ্রী। চরম ক্ষোভে নিজের পা দিয়েই সৈকতের নির্বীষ পুং-থলিটিতে একটা ছোট্ট ধাক্কা মেরে উঠে পড়লো দেবশ্রী। তাতেই একটু যন্ত্রনায় শিউরে উঠলো সৈকত। খুব জোরে অবশ্য মারেনি দেবশ্রী। হালকা করেই পা দিয়ে লাগিয়েছে। নিশ্চয়ই অসাবধানে লেগে গেছে, ভাবলো সৈকত - দেবশ্রী কি আর ইচ্ছা করে পা দিয়ে মারবে ওখানে ? সে এতক্ষণ ধরে দেবশ্রীকে নিরস্ত করার চেষ্টা করতে করতে পুরো ঘেমে গেছে। বাড়িতে সরবিট্রেট রাখা আছে ডাক্তারের পরামর্শে, কোনো এমার্জেন্সির জন্য। সেটা ভেবেই একটু নিশ্চিন্ত থাকে সৈকত। সে কী করতে পারে যদি তার দেহে কামভাব না জাগে তো ? মাত্র গতকালই তারা একটু শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। আজ আবার দেবশ্রী যদি সেসব করতে চায়, সম্ভব নাকি ? একটা হিসেব আছে তো ? প্রকৃতির একটা নিয়ম আছে তো ? বললেই লেগে পড়া যায় নাকি রোজ রোজ ? ঠিক আছে, বিয়ের পরে সেও একসময় রাতদিন রতি-সঙ্গম করার সুযোগ খুঁজতো। কিন্তু সে নেশা কি বরাবর থাকবে নাকি ? সে যে আজ তার শরীরের একটা দিক প্রায় প্যারালাইসিস হয়ে যাবার ভয়ে আতংকিত, সেটা কি দেবশ্রী ভাবছে ? সৈকতের মাথায় চিন্তা ঘুরছে যে সে হয়তো কিছুদিনের মধ্যে আরও অথর্ব হয়ে পড়বে, চাকরিটাই রাখা যাবে কিনা ঠিক নেই... তার মধ্যে এখন দেবশ্রী কী করে এইসব রোমান্টিক ভাবনা ভাবতে পারছে, সেটাই বুঝে উঠতে পারে না সে। দেবশ্রী তার চেষ্টায় ইতি টানতেই সৈকত যেন মুক্তির স্বাদ পেলো। সে আস্তে আস্তে বললো, 'তুমি অনেকক্ষণ চেপে ছিলে বাঁহাতটা - দ্যাখো ওখানে কোনো সাড়া পাচ্ছি না আমি, কেমন অসাড় অসাড় লাগছে'। বলে নিজের ডানহাত দিয়ে বাঁহাতটা কিছুটা তুলে দেবশ্রীকে দেখালো। দেবশ্রী তখনো হতোদ্যমের মতো তারই পাশে অর্ধ-উলঙ্গ হয়ে বসে রাগে-দুঃখে ফুঁসছিলো। গত এক বছরে কোনোদিন সৈকতকে এতো অপমান সে করেনি। আজ আর মনের কষ্ট চাপতে না পেরে বললো, 'হাত তো তোমার তবু অনেক ঠিক আছে, তোমার আসল জায়গাই অসাড় হয়ে গেছে সৈকত'।
বলে আর একমিনিটও না অপেক্ষা করে দেবশ্রী বিছানা থেকে নেমে নাইট-গাউনটা ভালো করে গায়ের সাথে বেঁধে নিলো। তারপর টেবিল থেকে ঘুমের ওষুধটা আর জলের গ্লাসটা এনে সৈকতকে যথারীতি দিলো। চুপচাপ সেটা খেয়ে নিয়ে সৈকত উল্টোদিকে ফিরে শুয়ে পড়লো। তার মাথায় এখন এতোরকমের টেনশন, শরীর নিয়ে এতোরকমের চিন্তা যে ঘুমের খুব দরকার। এমনিতেই সারা দিনের কাজের পরে তার শরীর খুব ক্লান্ত থাকে। ঘুমের ওষুধটা খাওয়ার দশ মিনিটের মধ্যে সে অতল গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো। তার ঠিক পাশেই একটা বালিশে হেলান দিয়ে আধ-শোয়া হয়ে দেবশ্রী ভাবছিলো তার ভাগ্যের কথা। নিজের হাতটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আজ বিকেলে কেনা নতুন চুড়িদুটো দেখছিলো আর ভাবছিলো, এইসব সাজগোজ কার জন্য ? কার সাথে আনন্দ উপভোগ করার স্বপ্ন দেখে সে ? সব বেকার। সবই মূল্যহীন। ভাবতে ভাবতে আনমনে চুড়িদুটো হাত থেকে খুলে ফেললো সে। কোনো দরকার নেই তার এই অলংকারের। এই অন্ধকার বিছানায় স্বামীর সাথে একসাথে শুয়েও সে নিতান্তই একা। মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়স তার। কী দোষ ছিলো তার যে এরকম অর্থহীন, আনন্দহীন, কষ্টকর একটা জীবন তাকে পেতে হলো, তাও তার যৌবনের শুরুতেই ? এইরকম আকাশ-পাতাল ভাবতে ভাবতে হঠাৎ সৈকতের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকালো দেবশ্রী। এই নাকি তার স্বামী, তার শয্যাসঙ্গী, তার জীবনসঙ্গী ? এই মানুষটা ? ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে সে আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে থাকা সৈকতের হাত দুটো নিজের দিকে টেনে নিলো। কী ভেবে একটা ক্রূর হাসি ফুটে উঠলো তার মুখে। এই মানুষটা তার স্বামী ঠিকই, কিন্তু আজ রাত্রে সে তার যোগ্যতা প্রমান করতে ব্যর্থ হয়েছে। পৌরুষত্বের কোনো পরিচয়ই সে দিতে পারেনি। অতএব -
মুখে বাঁকা হাসি নিয়ে দেবশ্রী নিজের নতুন কেনা চুড়িদুটো এক এক করে ঘুমন্ত সৈকতের দুই হাতে পরিয়ে দিলো।
অস্তিত্বের সংকট অনেক সময় আমাদের জীবনকে খাদের ধারে এনে দাঁড় করায়। তখন দুটোই পরিণতি সম্ভব - হয় সোজা পতন অথবা খাদ অতিক্রম। যদি কেউ সেই খাদ পার করে যেতে পারে, সে অনেক সময় এক নতুন জীবনের সন্ধান পায়। অস্তিত্বের নতুন সংজ্ঞা খুঁজে পায়। দেবশ্রীর নিজের ভুলেই ঠিক দুদিন পর এমনই এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো।
সেদিন সকাল এগারোটা নাগাদ মেহতাজি দেবশ্রীর ডেস্কে ফোন করেছিলেন। আজ মেহতাজি খুব তাড়াতাড়ি অফিসে এসেছেন, বাকিরা আসার আগেই। অডিটের বেশি দেরি নেই। সমস্ত হিসাব-পত্র ফাইনাল করার কাজ চলছে। মেহতাজির উপর অনেক দায়িত্ব। দেবশ্রী সকাল থেকে তাকে রুমেই দেখেছে। কথা হয়নি। এগারোটার সময় তিনি দেবশ্রীকে রুমে ডাকলেন কোনো এক জরুরী দরকারে। দেবশ্রী ভালোই জানে যে দরকারটা আসলে কী প্রকৃতির। তাই সে হালকা করে লিপস্টিকটা ঠোঁটে একবার বুলিয়ে চুলটা ঠিক করে রেডি হয়েই চললো মেহতাজির রুমে। আজও একটা কালো রঙের হাঁটু-ঝুল স্কার্ট আর একটা উজ্জ্বল কমলা রঙের গেঞ্জি-কাপড়ের টি-শার্ট পড়েছে সে। এই কালার-কম্বিনেশনটা ভীষণ সুন্দর মানিয়েছে তাকে। মেহতাজির রুমে ঢুকতে ঢুকতে পাশের কিউবিকল থেকে মেয়েদের কিছু ঠেস দেওয়া কথা তার কানে এলো, কিন্তু কোনোদিনই সে এসবকে পাত্তা দেয় না, আজও দিলো না। ভিতরে ঢুকে দরজাটা বন্ধই করতে যাচ্ছিলো সে, কিন্তু দেখতে পেলো যে মেহতাজি একা নন, রুমে আরো একজন কোনো গেস্ট বসে আছে। মাঝবয়সী লোকটি টেবিলের এদিকে দেবশ্রীর দিকে পিছন ফিরে মেহতাজির মুখোমুখি বসে আছে। দেবশ্রী তার মুখ দেখতে পেলো না, কিন্তু দরজাটা আর বন্ধ করলো না সে। সোজা এগিয়ে গেলো টেবিলের দিকে। তার স্বভাবসিদ্ধ মিষ্টি গলায় বললো, 'হ্যাঁ স্যার - আপনি ডাকছিলেন ?'
মেহতাজি দেবশ্রীর দিকেই দেখছিলেন যখন থেকে সে দরজাটা খুলে ঢুকেছে। কাজের চাপে সকাল থেকে দেবশ্রীর সঙ্গে দেখাই করা হয়নি আজ। ভীষণ ফ্রেশ আর ভীষণ হট লাগছে দেবশ্রীকে। ডবকা শাঁসালো দেহ। বিশেষ করে দেবশ্রীর উঁচিয়ে থাকা বুক, আর তার সামনে গেঞ্জির উপর লেখাটা - ক্যাচ দেম ইয়াং, সাক দেম ওয়েল। মুহূর্তের জন্য নিজের কর্তব্য বিস্মৃত হয়ে গেলেন তিনি। ওই মাথা-ঘোরানো বুক আর তার উপর ওরকম উস্কানি-মার্কা লেখা দেখে চকিতে একটা ঝটকা অনুভব করলেন তার পুরুষাঙ্গে। তবে সেটা কয়েক মুহূর্তের জন্যই। আগে অডিটের ঝামেলাগুলো মিটিয়ে দিতে হবে, তার পর 'সাক দেম ওয়েল' নিয়ে ভাবা যাবে। উফ, মেয়েটা সত্যি একটা মাল - আর পারা যায় না।
এদিকে তার মুখের ভাব লক্ষ্য করে আর দেবশ্রীর গলা শুনে সামনের লোকটিও ঘুরে তাকিয়েছে দেবশ্রীর দিকে। সেও আপাতমস্তক চেক করলো দেবশ্রীকে। এরকম অফিসে এরকম উগ্র-সুন্দর পোশাকে কোনো মেয়ে থাকতে পারে, তাও এতো সুন্দরী, লোকটি বোধহয় কল্পনাও করেনি আগে। দুজনের বিস্মিত ও লালায়িত দৃষ্টির সামনে দাঁড়িয়ে দেবশ্রীর খুব ভালোই লাগছিলো - পুরুষের চোখে তার সৌন্দর্যের স্বীকৃতি বুঝে নিতে এক সেকেন্ডও লাগে না দেবশ্রীর। কিন্তু পরিবেশটা স্বাভাবিক রাখতে সে আবার প্রশ্ন করলো মেহতাজির দিকে তাকিয়ে, 'কিছু দরকার ছিলো বলছিলেন ?' মেহতাজি সম্বিৎ ফিরে পেয়ে বললেন, 'ও হ্যাঁ, তোমাকে একটা ফাইল পাঠাবে অ্যাকাউন্টস থেকে - অডিটের জন্য দরকারি ফাইল। পিডিএফ পাঠাবে ওরা। আমি তোমাকেই পাঠাতে বলেছি কারণ আমাকে একটু বেরোতে হবে এনার সঙ্গে, ট্রাভেল করবো - অফিসের নেটওয়ার্ক পাবো না রাস্তায়। ইনি আমাদের একটা ভেন্ডার কোম্পানির হেড। আগে আমাদের একটা সাবসিডিয়ারি অফিসেও কাজ করেছেন কিছুদিন। তুমি ফাইলটা পেলেই আমাকে আমার পার্সোনাল মেইল আইডিতে পাঠিয়ে দেবে। বুঝতে পেরেছো ? তোমার কাছে আছে তো আমার জিমেল আইডি?' দেবশ্রী বললো, 'হ্যাঁ স্যার আছে মনে হয়।' মেহতাজি তাও একবার বলে দিলেন, 'মেহতা আন্ডারস্কোর এস আর অ্যাট জিমেল। আমাকে পারলে একটা এসএমএস করে দিও ফাইলটা পাঠানোর পরে। লাঞ্চের পরেই আমার একটা মিটিং আছে, আমি ওই সময় বাইরে থাকবো, আমার ওই ফাইলটা লাগবে। আমি তোমার সঙ্গে বিকেলে মিট করছি। ও.কে. ?'
'ঠিক আছে স্যার। আমি তাহলে যাই ?' দেবশ্রী জানতে চাইলো। মেহতাজি নিজের মনের ভাব চেপে রেখে বললেন, 'হ্যাঁ, যাও - অ্যাকাউন্টস থেকে সাড়ে বারোটার মধ্যেও কিছু না পাঠালে ওদেরকে ফোন করে একটু ফলোআপ করে নিও।' দেবশ্রী বললো, 'ঠিক আছে স্যার। আমি করে নেবো।' এই বলে আড়চোখে নতুন লোকটির দিকে একবার দেখে নিয়ে সে রুম ছেড়ে বেরিয়ে এলো।
কিছুক্ষনের মধ্যে মেহতাজিও বেরিয়ে গেলেন অফিস থেকে, সঙ্গে সেই লোকটি। দেবশ্রী টুকটাক নিজের কাজকর্ম করতে থাকলো। যথারীতি অ্যাকাউন্টস থেকে ঘন্টাখানেকের মধ্যে দুটো ফাইল এলো দেবশ্রীর কাছে। দুটোই পিডিএফ। একটাতে লেখা ড্রাফট, আরেকটা ফাইনাল। দেবশ্রী খুলে দেখলো কোম্পানির আয়-ব্যয় সংক্রান্ত কিছু হিসেব আছে দুটোতেই। এগুলোর ডিটেইলস বা দুটো ফাইলের পার্থক্য সে ততো কিছু বুঝলো না। দুটো ফাইলই সে একসাথে মেহতাজির পার্সোনাল ইনবক্সে ফরোয়ার্ড করে দিলো। আর ভুলটা করলো সেইখানেই। মেহতাজিকে ফাইলগুলো পাঠানোর পরে একটা এসএমএস করে দিলো দেবশ্রী। মিনিট পনেরো পরে মেহতাজির ফোন এলো দেবশ্রীর কাছে। 'তুমি পাঠিয়েছ বললে, কিন্তু কোথায় ? আমি পাইনি এখনো। সার্ভারের সাথে সিঙ্ক করেছো ?' দেবশ্রী বললো, 'হ্যাঁ স্যার, এখান থেকে ঠিক-ঠাকই গেছে দেখাচ্ছে।' মেহতাজি যেন তার উপর ভরসা করতে পারছেন না, এমনভাবে বললেন - 'ঠিক আছে ছেড়ে দাও, আমি ফাইল ছাড়াই মিটিংটা করে নিচ্ছি। দরকার নেই।' বলে তিনি ফোনটা কেটে দিলেন। দেবশ্রীর একটু খারাপ লাগলো। মেহতাজি হয়তো ভাবলেন যে সে মেইল পাঠাতেই পারেনি। কিন্তু সে তো পাঠিয়েছে। সেন্ট আইটেমসে দেখাচ্ছে সেন্ট বলে, এমনকি ডেলিভার্ডও বলছে। তাহলে ?
ব্যাপারটা বোঝা গেলো বিকেলের দিকে, যখন মেহতাজি অফিসে ঢুকলেন। তখন চারটে বাজে। সোজা দেবশ্রীর ডেস্কের সামনে এলেন তিনি। আরেকটু পরেই দেবশ্রী অফিস থেকে বেরোবে ভাবছিলো। মেহতাজিকে দেখে একগাল হেসে সে উঠে দাঁড়ালো, 'আসুন স্যার, আপনার বাইরের কাজ শেষ হলো ?' কিন্তু মেহতাজি খুব সিরিয়াস ছিলেন। অন্যান্য দিনের চেয়ে আলাদা, একদম রাফ-অ্যান্ড-টাফ সুরে বললেন, 'অ্যাকাউন্টসের ফাইলটা কোথায় পাঠিয়েছিলে ?' দেবশ্রী মেহতাজির কণ্ঠস্বরে একটু অবাকই হলো। সে জানতো যে মেহতাজি রাগ করতে পারেন, যদিও তার দোষ নেই। রাগ করলেও সে সহজেই সেই রাগ গলিয়ে জল করে দিতে পারবে, সেটাও সে জানতো। কিন্তু মেহতাজিকে একটু বেশিই সিরিয়াস মনে হলো। দেবশ্রী উত্তর দিলো, 'আপনার পার্সোনাল মেইল আইডিতেই পাঠিয়েছি তো স্যার।' মেহতাজি গলার স্বর না পাল্টিয়েই বললেন, 'একবার অ্যাড্রেসটা দ্যাখো তো কোথায় পাঠিয়েছ ?' দেবশ্রী সেন্ট আইটেমস থেকে দেখে বললো, 'এই তো, এস আর আন্ডারস্কোর মেহতা অ্যাট জিমেল ডট কম।' মেহতাজি স্থিরচোখে তার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন, 'ওটা মেহতা আন্ডারস্কোর এস আর ছিল, এস আর আন্ডারস্কোর মেহতা নয়। তুমি ফাইলটা যেখানে পাঠিয়েছ সেটা হলো একটা ব্রোকিং কোম্পানির মেইল অ্যাড্রেস। তোমার পাঠানো ওই ফাইনান্সিয়াল স্টেটমেন্টে আমাদের ফোর্থ কোয়ার্টারের ইনভেন্টরি লস দেখানো ছিল। সেই ডিটেইলস পেয়ে অলরেডি শেয়ার মার্কেটে আমাদের প্যারেন্ট কোম্পানির শেয়ার-প্রাইস টেন পার্সেন্ট নেমে গেছে এক ধাক্কায়। এখন মার্কেট বন্ধ হয়ে গেছে বলে তাও বাঁচোয়া। কিন্তু কাল সকালে মার্কেট যখন আবার খুলবে, কী হবে আমি জানি না। খুব ভুল কাজ করেছো তুমি। বহত বড়া পাঙ্গা হো গ্যায়া।' বলে আর এক মুহূর্তও না দাঁড়িয়ে তিনি সোজা নিজের রুমে ঢুকে গেলেন।
দেবশ্রী তার পিছন পিছন রুমে এসে ঢুকলো। সে বুঝতে পারছিলো না কী করা উচিত। সে যে খুব বড়ো কিছু একটা ভুল করে ফেলেছে, সেটা বুঝতে পারছিলো। বাকিটা কিছু বোঝেনি। শেয়ার মার্কেট ব্যাপারটাই সে বোঝে না। কিন্তু ইচ্ছা করে তো কিছু করেনি সে। তাকে ঢুকতে দেখে মেহতাজি হতাশভাবে বললেন, 'থোড়া দেখনা চাহিয়ে থা। উল্টা কর দিয়া সবকুছ তুমনে দেবশ্রী।' দেবশ্রী করুণ করুণ মুখ করে বললো, 'সরি স্যার।' মেহতাজি বললেন, 'আমাকে সরি বলে কী হবে ? এখন উপর থেকে কী অর্ডার আসে দ্যাখো। আমার নিজেরই অবস্থা খারাপ। আমাকে কোম্পানিকে জবাব দিতে হবে আর তোমার নামও বলতে হবে। তুমি খুব ভুল কাজ করেছো। নিজের পায়ে নিজেই কুড়ালি চালিয়েছো।' দেবশ্রী প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়ে গেলো। বললো, 'আমি এখন কী করবো স্যার ?' মেহতাজি বললেন, 'ঘর যাও এখন। কাল দেখা যাক কী হয়। একে অডিটের টেনশন। তার উপর আবার এই নতুন টেনশন।'
দেবশ্রী চুপচাপ বেরিয়ে এলো রুম ছেড়ে। তার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেছে। এরকম পরিস্থিতিতে সে জীবনেও পড়েনি। সবসময় নিজের রূপ আর সৌন্দর্য ব্যবহার করে সব কাজ হাসিল করতে শিখেছে সে। কিন্তু এরকম বিপদের মুখে কী করা উচিত, তা সে বুঝে উঠতে পারছিলো না। সৈকতকে তো আরোই বলা যাবে না। সে বেচারা অনেক টেনশন নিয়ে আছে অলরেডি। তার উপর আর টেনশন না দেওয়াই ভালো। চুপচাপ ভাবতে ভাবতে সে বাড়ি ফিরে এলো। বাড়িতে এসেও ভাবতে থাকলো তার করণীয় কী। ভুল তো একটা হয়েছে। সেটার জের কতদূর গড়াবে সে জানে না। কিন্তু একটা কথা দেবশ্রী ভালোই জানে, তার যা অর্ডিনারি কোয়ালিফিকেশন, তাতে এরকম মাইনের আরেকটা চাকরি তার পক্ষে জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব।
পরদিন সকালে অফিসে তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেলো দেবশ্রী। সারাটা রাত প্রায় না-ঘুমিয়ে কেটেছে। নিজের সাথে অনেক দ্বন্দ্ব করতে হয়েছে তাকে। নিজেকে বুঝিয়েছে সে যে চাকরিটা যেভাবেই হোক রাখতে হবে। তার জন্য চরম কোনো মূল্য দিতে হলে সে দেবে। তার অন্য কোনো কোয়ালিফিকেশন হয়তো নেই। কিন্তু একটা কোয়ালিফিকেশন তো তার আছে, যা আবার অন্য কারুর নেই।
নিজের ডেস্কে পৌঁছেই প্রথম ধাক্কাটা খেলো দেবশ্রী। লগইন করা যাচ্ছে না। ল্যান আইডি-পাসওয়ার্ড নিচ্ছে না। প্রথমে ভাবলো পাসওয়ার্ডের প্রবলেম। কিন্তু একটু পরেই বুঝতে পারলো, তার অ্যাকসেস রিভোক করা হয়েছে, তার অ্যাকাউন্ট লক করে দেওয়া হয়েছে। পাথরের মতো হয়ে বসে রইলো দেবশ্রী। মেহতাজি ঢোকার সময় একটা শুকনো গুড মর্নিং জানালো সে, মেহতাজি তার জবাবে মাথাটা একটু হেলালেন শুধু। সাড়ে দশটার দিকে মেহতাজি নিজেই ডেকে পাঠালেন দেবশ্রীকে নিজের রুমে। দেবশ্রীকে দেখে বললেন, 'কালকের জের আজকেও চলছে। দুদিনে কোম্পানির শেয়ার-প্রাইস টুয়েন্টি ফাইভ পার্সেন্ট নীচে নেমে গেছে। ম্যানেজমেন্ট রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে, কীভাবে ডেটা লিক হলো - কার হাত দিয়ে ফাইনান্সিয়াল রিপোর্ট বাইরে গেলো।' দেবশ্রী চুপচাপ শুনছিলো। মেহতাজি একটু থামতেই সে মুখ তুলে মেহতাজির দিকে তাকালো। আজ সে পরে এসেছে একটা জিন্স আর স্লিভলেস শার্ট। চুলটা পিছনদিকে খোলা। কিন্তু মুখেচোখে সারারাতের ক্লান্তি স্পষ্ট। মেহতাজি একটু থেমে বললেন, 'আমাকে সবটাই বলতে হয়েছে... তোমার নামও দিতে হয়েছে। তোমার অ্যাকাউন্ট আর ল্যান আইডি লক করা হয়েছে, নিশ্চয়ই দেখেছো। এখন ইন্টারনাল এনকোয়ারি হবে। আর তাতে তোমার জবটা শিওরলি যাবে। আমার কিছু করার নেই। দে গট অল দ্য অ্যাভিডেন্সেস এগেইনস্ট ইউ। এবার কী করবে বলো ?' দেবশ্রী মনস্থির করেই এসেছিলো আজ অফিস আসার সময়।। চুপচাপ মাথা নীচু করে বললো, 'আমি খুব সরি স্যার। আপনি যাআআ করতে বলবেন, আমি করবো।' মেহতাজি ভীষণ অধৈর্যের সাথে বললেন, 'যেটা করেছো সেটা আনডু করতে পারবে ? বাত করতি হ্যায় ! কী করতে পারবে তুমি ? সর্বনাশ তো হয়েই গেছে। তোমার নোকরি তো যাবেই। এখন আমার নোকরিটা থাকলে হয় !' দেবশ্রী চোখ তুলে আবার মেহতাজির দিকে তাকিয়ে বললো, 'আমি জানি আমার ভুল হয়েছে খুব। আমি তার জন্য সবকিছু করতে রাজি আছি। কিছুই কি করা যায় না ? আপনি যা যা বলবেন, আমি তা-ই তা-ই করবো।' মেহতাজি আবার বললেন, 'কী করবে তুমি ?' দেবশ্রী মেহতাজির মুখের দিকে তাকিয়ে থেকেই বললো, 'আমি কম্প্রোমাইজ করার জন্য রেডি স্যার।'
কম্প্রোমাইজ! এরকম একটা কথা শোনার জন্য মেহতাজি কতদিন অপেক্ষা করেছেন, কত স্বপ্ন দেখেছেন। নিজে সরাসরি বলতে পারেননি, কিন্তু কতদিন চেয়েছেন যে এই ডবকা মালটা তার বাগে আসুক। কিন্তু এখন দেবশ্রী যেচে সেই প্রস্তাব দেবার পরেও মেহতাজি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কিছুক্ষন তার চেয়ারে বসে রইলেন। তারপর বললেন, 'দ্যাখো, কম্প্রোমাইজ সে আব কুছ নেহি হো সাকতা। আমার নিজেরই নোকরি খতরে মে হ্যায়। আমার পক্ষে কিচ্ছু করা সম্ভব নয়। কার কার সাথে কম্প্রোমাইজ করবে তুমি ? ম্যানেজমেন্টের লোকজন জেনে গেছে। তোমার নামে এনকোয়ারি বসছে। এতো বড়ো একটা গন্ডগোল হয়ে গেছে - কোনোকিছু লুকানো আর সম্ভব নয়। আমাকে তোমার কথাই বলতে হবে ম্যানেজমেন্টকে, আমার নোকরি বাঁচানোর জন্য। তুমি কী করবে ভেবে নাও।' দেবশ্রী চোখে পুরো অন্ধকার দেখলো। কম্প্রোমাইজ করবার কথাই সে ভেবে এসেছিলো আজ। কিন্তু সেটা যে কাজে লাগবে না, এই ধারণা তার দূরতম কল্পনাতেও ছিলো না। সৈকতের শরীর দিন দিন আরো অবনতির দিকেই যাচ্ছে। দুজনের চাকরি দিয়ে তবু যাহোক করে চলছিল। এখন তার চাকরিটা যদি না থাকে তো সে অকুল পাথারে পড়বে। সে আর ভাবতে পারছিলো না। বাস্তবিকই সে কাঁদতে শুরু করলো। তার চোখে জল দেখে মেহতাজি উঠে এলেন। দেবশ্রীর কাছে গিয়ে তার কাঁধে হাত রাখলেন। ভীষণ হট মেয়েটা, কান্নার মধ্যেও কী সুন্দর লাগছে তাকে। কিছুটা সময় নিজেকে সামলাতে দিয়ে বললেন, 'তোমার চাকরি বাঁচানো সম্ভব নয় আমার পক্ষে। তুমি যেটা বললে, সেটার জন্য আমি কত ওয়েট করেছি তুমিও জানো। কিন্তু এখন আর আমার হাতে নেই কেসটা।' দেবশ্রী কান্নাচোখেই মেহতাজির দিকে তাকালো। যেন সে জানতে চায় কোনো উপায়ই কি নেই ? সে সবকিছু করতে পারে। মেহতাজি একটু যেন ভেবে বললেন, 'তোমার এখানে চাকরিটা অমিতজির সুপারিশে হয়েছিল না ? অমিত ত্রিবেদী। তুমি ওনাকে কীভাবে চেনো ?'
দেবশ্রী একটু কান্না থামিয়ে মনে করার চেষ্টা করলো। সৈকতের অফিসের কোনো এক ক্লায়েন্ট, তিনি আবার এই অফিসের মালিক। তার অনেক রকম ব্যবসা, তার মধ্যে
এই অফিসও আছে। এটুকুই সে শুনেছিলো সৈকতের কাছে। তার বেশি সে জানে না, কোনোদিন দেখেওনি অমিত নামের এই মানুষটাকে। সে বললো, 'অমিত ত্রিবেদী
আমার হাজব্যান্ডের পরিচিত... ওদের অফিসের সাথে পরিচিত... সেই সূত্রেই আমার হাজব্যান্ড ওনাকে আমার এই চাকরিটার জন্য রিকোয়েস্ট করেছিলো। আমি ঠিক
ওনাকে চিনি না বা জানি না। আমার হাজব্যান্ড চেনে।' মেহতাজি দেবশ্রীর কথাটা শুনে নিজের চেয়ারে গিয়ে আবার বসলেন। একটু ভেবে নিয়ে বললেন, 'তুমি হয়তো
জানো না, অমিতজির হাজার একটা বিজনেস, তার মধ্যে এই অফিসটাও একটা। আমাদের যে প্যারেন্ট কোম্পানি, সেটাও ওনার কোম্পানি, উনিই সেটার প্রোমোটার।
ওনার বাবার বিজনেস ছিল সব, এখন উনিই মালিক। তোমার চাকরি কোনোভাবেই বাঁচানো সম্ভব নয় আমার পক্ষে। কিন্তু তুমি যদি অমিতজির সোর্সে যেতে পারো,
তাহলে তোমার কাজ হাসিল হতে পারে। ওনার কথাই আমাদের এই অফিসের ল। তো ওটাই একমাত্র তুমি লাস্ট ট্রাই হিসাবে দেখতে পারো।' কিন্তু দেবশ্রী মনে মনে
একটু দ্বিধান্বিত ছিলো। এক তো সে অমিতজিকে চেনেই না। ওনাকে ধরতে গেলে সেই সৈকতের সাহায্যেই করতে হবে, আর সৈকত সব জানতে পারবে। তাছাড়া,
অমিতজি এই চাকরিটার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এখন এরকম একটা ভুল কাজ করে আবার তার কাছে অনুকম্পার জন্য যাওয়াটাও খুব খারাপ দেখায়। সে বললো,
'ওনার কাছে যাওয়াটা কি ঠিক হবে মেহতাজি ?' মেহতাজি অসহায়ভাবে বললেন, 'তাহলে চাকরিটার মায়া ছেড়ে দাও। আমার পক্ষে কিচ্ছু করা সম্ভব নয়। একমাত্র ওই
একটাই রাস্তা আছে, যদি তুমি কিছু করতে চাও তো।'
দেবশ্রী নিজের ডেস্কে ফিরে এসে কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো। অমিতজিকেই ধরতে হবে। আর কোনো উপায় নেই। কিন্তু সৈকতকে সে কী করে
এইসব জানাবে ? এই টেনশনে যদি আবার তার অ্যাটাক আসে ? আবার একবার সৈকতকে হসপিটালে ভর্তি হতে হলে সে টানতে পারবে না। সব শেষ হয়ে যাবে। যা
করার সৈকতকে না জানিয়েই করতে হবে। মনে মনে অনেক কিছু ভাবতে লাগলো দেবশ্রী। দুপুরে লাঞ্চের পর বাড়ি ফিরে এলো সে। বাড়িতে এসে অনেক ভেবে একটা
উপায় ঠিক করলো।
সৈকত অন্যান্য দিনের মতোই সাড়ে আটটা নাগাদ অফিস থেকে ফিরলো। দরজা খুলে তাকে জুতো ছেড়ে ভিতরে ঢুকতে সাহায্য করলো দেবশ্রী। সোফায় বসিয়ে ঠান্ডা
একগ্লাস জল এনে দিলো তাকে। সৈকত দেখলো দেবশ্রী আজ একটু যেন গম্ভীর, চিন্তিত। জলটা খেয়ে দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে সে জিজ্ঞাসা করলো, 'সব ঠিক আছে তো
?' দেবশ্রী তার দিকে তাকিয়ে কষ্ট করে একটু হেসে বললো, 'হ্যাঁ। আমি একটা কথা ভাবছিলাম কাল থেকে।' সৈকত জানতে চাইলো, 'কী কথা ?' দেবশ্রী বললো,
'অমিতজির কথা তোমার মনে আছে ? যার দৌলতে আমার চাকরিটা হলো গো।' সৈকত অবাক হলো দেবশ্রীর কাছে অমিতজির কথা শুনে। 'হ্যাঁ, মনে থাকবে না কেন...
এখনো কথা হয় তো মাঝে মাঝে। কিন্তু কেন ?' দেবশ্রী বললো, 'দ্যাখো, আমি ভাবছিলাম আমরা কিরকম স্বার্থপর। যার জন্য আমার এই চাকরিটা হলো, আমাদের
এতো বড়ো উপকারটা করলেন যিনি, তাকেই আমরা কোনোদিন ডাকলাম না বাড়িতে, একটু কৃতজ্ঞতাও দেখালাম না।' সৈকত চুপচাপ শুনছিলো। দেবশ্রী আরো
বললো, 'আমার চাকরিটা তো এখন কনফার্মডও হয়ে গেছে গত মাসে, স্যালারি বেড়েছে। তো এখন আমরা অমিতজিকে ডেকে একদিন নিমন্ত্রণ খাওয়াতে পারি না কি ?'
সৈকত বললো, 'অমিতজি কি আদৌ মনে রেখেছেন এতো ছোট ঘটনা ? তাছাড়া এতদিন পর হঠাৎ নিমন্ত্রণ করলে ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত লাগবে।' 'কিচ্ছু অদ্ভুত লাগবে
না', দেবশ্রী নিজের কথার উপর জোর দিয়ে বললো, 'এতদিন তো চাকরিটা কনফার্মড ছিল না। এই গতমাসে কনফার্মড হয়েছে। সেইজন্য এখনই ডাকতে পারি আমরা।
আর তাছাড়া ওনার কাছে হয়তো ছোট ঘটনা, কিন্তু আমাদের কাছে তো নয়। উনি ভুলে যেতে পারেন, কিন্তু আমাদের তো একটা কর্তব্য আছে। তাই না ? তোমার কী
মনে হয় ?'
সৈকত একটু ভেবে বললো, 'আচ্ছা পরে ভাবছি। ডিনার করে নেওয়া যাক।' বলে সে উঠে পড়লো হাত-মুখ ধোবার জন্য। ডিনার করতে বসে দেবশ্রী আরো যুক্তি দিতে
থাকলো কেন তাদের অমিতজিকে খুব শীঘ্রই ডাকা উচিত, কেন এরকম মানুষের সাথে সম্পর্ক রাখাটা ভবিষ্যতে কাজে দিতে পারে, ইত্যাদি বলে বলে সে চেষ্টা
করছিলো সৈকতকে রাজী করাতে। নিমন্ত্রণ করতে চাইবার আসল কারণটা যদিও সে ঘুনাক্ষরেও সৈকতকে জানালো না। ডিনার শেষ করে উঠে সৈকত যখন বিছানায়
শুলো, দেবশ্রী আবার তার কাছে এলো। 'কী গো, কী ভাবলে ? নিমন্ত্রণ করলে হয় না একদিন বাড়িতে ?' সৈকত কিছুটা নিমরাজি হয়ে বললো, 'সেরকম দরকার কিছু
ছিল না, কিন্তু ঠিক আছে, তুমি বলছো যখন - হোক। কবে করতে চাও ?' দেবশ্রী তার বুকের উপর আধ-শোয়া হয়ে বললো, 'অবশ্যই দরকার আছে। তুমি বোঝো না
এসব। কাল বাদে পরশু রবিবার, ছুটির দিন আছে, ওইদিনই ডাকা ভালো। সকালে তো ব্যস্ত থাকবেন নিশ্চয়ই, বরং ডিনারেই আসতে বললে হয়। কী বলো ?' সৈকত
দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে একটু ভাবলো। তারপর বললো, 'হ্যাঁ - ঠিক আছে, ডিনারেই বলা ভালো। একটু হার্ড ড্রিঙ্কসেরও ব্যবস্থা করতে হবে।' বলতে বলতে হাত বাড়িয়ে
ফোনটা নিয়ে কন্ট্যাক্টস থেকে খুঁজে বের করলো নামটা - অমিত ত্রিবেদী।
রায়চকের কাছেই একটা চারতারা হোটেলের বিলাসবহুল স্যুইটে বিছানার উপর হেলান দিয়ে বসে ছিলেন অমিত ত্রিবেদী উরফ অমিতজি। সাদা চাদর পাতা বিছানার
উপর দুটো পা ছড়িয়ে দুটো তাকিয়া জড়ো করে তার উপর ঠেস দিয়ে তিনি মাল দর করছিলেন। তাকে মাল এনে দেখাচ্ছিলেন হোটেলেরই এক ম্যানেজার। এই হোটেলে
অমিতজি প্রায়ই আসেন রাত কাটাতে। রইস কাস্টমার তিনি। তার জন্য প্রতিবার ভালো ভালো মাল রেডি করে রাখেন হোটেল ম্যানেজার। অমিতজি শুধুই চেনা কাস্টমার
বা বড়ো বিজনেসম্যান তো নন, ওনার পলিটিকাল হোল্ডও সবার জানা। তাই পুলিশের কোনো ঝামেলাও নেই, নিশ্চিন্ত থাকা যায়। বরং কোনোবার ভালো মাল দিতে না
পারলেই পুলিশ আসতে পারে।
'এগুলোর রেট বলুন, রেট। কত করে পড়বে ?' রুমের উল্টোদিকের দেওয়ালের সামনে টিভির পাশে চারজন মেয়ে পাশাপাশি লাইন করে দাঁড়িয়ে ছিলো, আজ রাতের জন্য
পণ্য হবার আশায়। তাদের দিকে তাকিয়ে চোখ বুলোতে বুলোতে জিজ্ঞাসা করলেন অমিতজি। ম্যানেজার লোকটি একগাল হেসে বললেন, 'স্যার, আপনি চয়েস তো
করুন। আপনার কাছ থেকে বেশি কী আর রেট নেবো... কোন মালটাকে পছন্দ ?'
'কী নাম ?' প্রথম মেয়েটির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন অমিতজি। মেয়েটা একটা হালকা হলুদ রঙের চুড়িদার পরে দাঁড়িয়ে আছে, সামনে ওড়না। তেইশ-চব্বিশ বছর
বয়েস হবে। মুখের চেহারা মোটামুটি ভালোই। ওড়নাটা সম্পূর্ণ গলার কাছে তোলা, চুড়িদারের ভিতরে প্যাডেড ব্রা পরে আছে - যাতে বুকের উপর স্তনদুটো ভালো বোঝা
যায়। হাতদুটো পিছনে করে শরীর বেচবে বলে আশা নিয়ে দাঁড়িয়ে। অমিতজির প্রশ্নে চোখ তুলে একবার অমিতজির দিকে তাকিয়ে নীচু গলায় বললো সে, 'পায়েল'।
নামটা ভালো, কিন্তু বড্ডো যেন লাজুকলতা। অমিতজি পরের মেয়েটার দিকে তাকালেন। এই মেয়েটার বয়স চব্বিশ-পঁচিশ হবে। একটু বেশি নাদুস-নুদুস। তার নধর
খাসির মতো গতরের জন্যই কাস্টমারদের মধ্যে তার বেশ ভালো ডিমান্ড আছে। লাল রঙের একটা ঘাগড়া মতন পরে আছে মেয়েটা, উপরে খুব ছোট্ট একটা ব্লাউজ, ঘিয়ে
রঙের। ফর্সা পেট নাভির নীচে থেকে বুকের মাঝামাঝি অবদি পুরো খালি। মেয়েটার নিঃশ্বাসের সাথে পাতলা পেটটা অল্প উঠছে-নামছে। ঠোঁটে খুব মোটা করে টকটকে
লাল লিপস্টিক লাগিয়েছে। বুকের কাছে হাতদুটো জড়ো করে মেয়েটা এইদিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। ম্যানেজার লোকটি নিজেই বললেন, 'এটা একদম নতুন
এনেছি স্যার - এটার নাম শ্রেয়া। খুব ভালো স্বাস্থ্য - দেখতেই পাচ্ছেন।' অমিতজি ইশারায় মেয়েটাকে কাছে ডাকলেন। সে বিছানার কাছে এসে দুটো হাত নিচে নামিয়ে
দাঁড়ালো। অমিতজি একটা হাত বাড়িয়ে মেয়েটার ডানদিকের স্তন ব্লাউজের উপর দিয়ে নিজের মুঠোয় চিপে ধরলেন। মেয়েটা অস্বস্তি হওয়া সত্ত্বেও চুপ করে দাঁড়িয়ে
রইলো। অমিতজি তার পুরো স্তন টেনে ধরে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে ওজন করার মতো করে ম্যানেজারের উদ্দেশ্যে বললেন, 'একে তো নিতেই হবে। পুরো সলিড মাল।'
ম্যানেজার এক গাল হেসে বললেন, 'হেঁ হেঁ, সব আপনার জন্যই তো স্যার - যেটা খুশি নিন। চটকে চটকে খান ইচ্ছামতো। এটার দামটা কিন্তু একটু বেশি পড়বে, অনেক
রিস্ক নিয়ে আনতে হয় তো স্যার। ওই পঁচিশ দেবেন। কাল সকাল পর্যন্ত পুরো আপনার। আপনি বাঁশ ঢুকিয়ে মেরে ফেললেও কেউ কিছু বলতে আসবে না, আমি নিজে
সারারাত পাহারায় থাকবো স্যার।' তারপর মেয়েটার উদ্দেশ্যে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন তিনি, 'আরে যা না, শেঠজি তোকে চুজ করেছেন, উঠে যা -'। মেয়েটা খালি পায়েই
এসেছিলো রুমে। হাঁটুতে ভর দিয়ে বিছানায় উঠে গিয়ে সে অমিতজির গায়ে লেপ্টে দুহাত দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে বসলো। অমিতজি তখন অবশিষ্ট দুজন মেয়ের দিকে
নজর দিলেন। একজন জিন্স-টি-শার্ট পরে আছে। কেমন কালো মতন মুখ, তার পছন্দ হলো না। শেষের মেয়েটি বেশ অন্যরকম দেখতে। তাকেও কাছে ডাকলেন
অমিতজি। সে বিছানার পাশে এসে দাঁড়ালো। চারজনের মধ্যে কেউই খুব একটা সুন্দরী নয় সেই অর্থে, কিন্তু চটক আছে মুখে। তবু এদের মধ্যে এই চার নম্বর মেয়েটা
একটু বেশি যেন ভালো দেখতে। মেয়েটা একটা স্কার্ট পরে আছে, উপরে একটা জালিদার নেট-নেট-জামা - দুটোই সাদা রঙের। নেট-নেট জামাটা এতোটাই পাতলা যে
ভিতরে কালো রঙের ব্রা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। চুল বিনুনি করে পিছনে ঝোলানো। মুখে খুব সুন্দর করে মেকআপ করেছে, চিকচিক করছে গালের কাছটা, চোখের
পাতাটা। রুজ মেখেছে মনে হয়, কাস্টমারের কাছে নিজেকে সুন্দর দেখাতে। আর মেয়েটার বুকটাও বেশ উঁচু।
বাঁহাতে শ্রেয়া বলে মেয়েটার বুক আর পেট হাতাতে হাতাতে অমিতজি তার আরেকটা হাত এই নতুন মেয়েটার পেটের উপর বোলালেন। তারপর হাতটা পিছন দিকে নিয়ে
গিয়ে মেয়েটার পাছা ধরে একটু খাবলালেন। ম্যানেজার লোকটি এইসব হ্যান্ডেল করে করে যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তিনি তৎক্ষণাৎ নির্দেশ দিলেন, 'রুবি, পিছে ঘুম জারা -'।
মেয়েটা পিছনে ঘুরে দাঁড়ালো। অমিতজি তার স্কার্টের উপর দিয়ে পিছনের দুটো গোল গোল নরম মাংসের তাল আঙুল দিয়ে জড়ো করে টিপে টিপে দেখলেন। মেয়েটা বেশ
চালাক। একটু নিচু হয়ে হাত দিয়ে তার স্কার্টটা তুলে ধরলো পিছনটা নগ্ন করে। বেশ ফর্সা চামড়া। তার প্যান্টি কিছুটা গুটিয়ে একদিকের মোলায়েম তালের মতো পাছা
অর্ধেকটা বেরিয়ে আছে। ম্যানেজার ভদ্রলোক এবার একদম গরম লোহার উপর হাতুড়ির ঘা-টা মারলেন, 'মাল দেখে নিন স্যার, একদম টাটকা আছে, সবে দার্জিলিং
থেকে এসেছে। রুবি, সামনে সে ভি দিখা না শেঠকো।' মেয়েটা স্কার্টটা তুলে ধরে রাখা অবস্থাতেই সামনের দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। এই সময় অমিতজির ফোনটা বেজে
উঠলো। হাত বাড়িয়ে ফোনটা নিয়ে নাম্বারটা দেখলেন অমিতজি। এটা কলটা এসেছে তার অফিসের নাম্বারে। এখন অফিসের কোনো ব্যাপারে তার মাথা ঘামার মুড নেই।
তিনি কলটা সাইলেন্ট করে দিয়ে আবার মেয়েটার দিকে তাকালেন। রুবি তখনো তার স্কার্টটা বুক অবদি উঁচু করে তুলে সামনের দিকে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে অমিতজির
ঠিক সামনে। সাদার উপর কালো ডোরাকাটা প্যান্টিতে ঢাকা উত্তল যৌনাঙ্গ। ম্যানেজার লোকটি এবার রুবির প্যান্টিটা ধরে একটু নামিয়ে দিয়ে তার চেরাটা দেখালেন
অমিতজিকে। বললেন, 'দেখুন, ঢোকাবেন ওখানে ? পঁচিশ হাজার লাগবে এটাও - শাঁস আছে।' ইতিমধ্যে প্রথম মেয়েটিকে কোনো চোখের ইশারা করে দিয়েছিলেন
ম্যানেজার। ওই মেয়েটি অমিতজিকে দুইহাতে জড়িয়ে ধরে বসে ছিলো, এখন ওই অবস্থাতেই অমিতজির ঘাড়ে-গলায় ক্রমাগত চুমু দিতে লাগলো টপাটপ। অমিতজি
একহাতে তাকে জড়িয়ে ধরে রুবি নামের মেয়েটার খোলা উরুতে হাত বোলাতে লাগলেন। তার দৃষ্টি রুবির উন্মুক্ত যোনিপ্রদেশে। ম্যানেজার ভদ্রলোক হালকা করে রেটটা
ফাইনাল করলেন, 'দুটোই আপনার পছন্দ, বুঝতে পারছি স্যার - দুটোই নিলে নিন, আপনার জন্য টোটাল পয়ঁতাল্লিশে করে দিচ্ছি আজকে রাতের জন্য। যতবার খুশি
করুন, না করতে চাইলে মেরে রক্ত বার করে দেবেন। ছাড়বেন না।' অমিতজি কিছু বলার আগেই ফোনটা আবার বেজে উঠলো। ফোনটা ধরে পুরো স্যুইচ অফ করে
বিছানার একপাশে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন তিনি। তারপর রুবি নামের মেয়েটাকেও টেনে বিছানার উপর তুলে নিলেন একপাশে। সে বিছানায় উঠে গিয়ে প্রায় অমিতজির
গায়ের উপর শুয়ে পড়লো মারের ভয়ে।
এদিকে দুবার ফোন করেও অমিতজিকে না পেয়ে সৈকত অসহায়ভাবে তাকালো দেবশ্রীর দিকে, 'ফোন ধরছে না। কেটে দিলো।'
পরদিন সকালে চা নিয়ে টেবিলে এসে দেবশ্রী আরেকবার তাড়া দিলো সৈকতকে, 'এখন একবার দ্যাখো না, পাও কিনা ফোনে - অমিতজিকে।' সৈকত খবরের কাগজে
ডুবে ছিলো। মুখ তুলে দেবশ্রীকে দেখে নিয়ে চায়ে একটা চুমুক দিলো। দেবশ্রীর উদগ্রীব ভাবটা সৈকতের দৃষ্টি এড়ালো না। কিন্তু কিছু না বলে সে ফোনটা তুললো হাতে।
অমিতজির নাম্বারে কল লাগালো। অপর প্রান্তে ৭-৮ বার রিং হবার পর কলটা কেউ ধরলো। 'হ্যালো -'। 'হ্যালো, অমিতজি...' সৈকত চোখের ইশারায় দেবশ্রীকে বোঝালো
যে অমিতজিকে পেয়েছে কলে। তারপর কথা চালাতে লাগলো, 'গুড মর্নিং - সৈকত বলছি... কেমন আছেন ?... হ্যাঁ, হ্যাঁ, আর. এম. লিমিটেড থেকে... আপনি মনে
রেখেছেন ঠিক... কেমন আছেন ?... আচ্ছা... হ্যাঁ, হ্যাঁ... চলছে... ভালো সব... হ্যাঁ ওই মোটামুটি আছে এখন... না, না, কোনো ট্রাবল হয়নি... আচ্ছা, শুনুন না...
আমার ওয়াইফের জবটা কনফার্মড হয়েছে লাস্ট মান্থ... হ্যাঁ, হ্যাঁ, আপনি খুব হেল্প করেছিলেন... রিয়েলি, উই আর ভেরি গ্রেটফুল টু ইউ... না না, সিরিয়াসলি... ওই
ব্যাপারেই আপনাকে একটা রিকোয়েস্ট ছিল, একটা ছোট্ট ইনভিটেশান - আমার মিসেস চাইছেন আপনি একটু কষ্ট করে যদি একদিন আমাদের ফ্ল্যাটে আসতে
পারতেন... এই জবটা কনফার্মড হবার খুশিতে আর কী... হ্যাঁ, হ্যাঁ... এই তো সিদ্ধা আবাসন... না, না, প্লীজ... ওরকম বলবেন না, আমরা খুবই কৃতজ্ঞ আপনার উপর...
আপনি এলে খুব খুশি হবো আমরা... প্লীজ... একটু দেখুন না... এই সপ্তাহেই... কেন ? একটু দেখুন না, রবিবার যদি হয়... রবিবার রাত্রে... হ্যাঁ একটু দেখে জানান
প্লীজ... যদি পারেন তো খুব ভালো হয়...'।
দেবশ্রী ফোনটা চাইলো। এভাবে বললে নাও আসতে পারেন অমিতজি। অতো বড়ো একজন মানুষ, তাদের নিমন্ত্রণ রাখতে বইয়েই গেছে। সে উঠে গিয়ে ফোনটা নিলো
সৈকতের হাত থেকে। সৈকত একটু অবাক হয়ে দিয়ে দিলো ফোনটা। দেবশ্রী ফোনটা কানে চেপে হালকা স্বরে বললো, 'অমিতজি ? ... আমি দেবশ্রী বলছি.... হ্যাঁ,
আমারই জবটা আপনি করে দিয়েছিলেন.... ভালো আছেন তো ? .... হ্যাঁ, আমি আছি, ভালোই আছি বলতে পারেন.... না, তা না, সত্যি ভালো আছি - এতো ভালো
চাকরি করিয়ে দিলেন আপনি, ভালো থাকবো না ? .... তা যার জন্য এতো ভালো একটা চাকরি আমি পেলাম তাকে কি কোনোদিন দেখতে পাবো না ? .... সে আমি
বুঝবো, আপনি আসুন তো একবার .... প্লীজ অমিতজি .... আরে রবিবার আবার কিসের কাজ ? .... না না আপনাকে আসতেই হবে, আমি কোনো অজুহাত শুনবো না
.... হ্যাঁ ডিনারের জন্যই বলছি .... আপনি জানান, আমি কিন্তু না শুনবো না .... কিছুই না, ছোট্ট একটু ব্যবস্থা হবে, জাস্ট আমাদের মধ্যেই .... আপনি আসছেন কিন্তু,
আমি জানি না, আপনাকে আসতেই হবে, ব্যাস.... হ্যাঁ.... হ্যাঁ আমি জোর করছি, আপনাকে আসতেই হবে .... থ্যাংক ইউ অমিতজি.... আমি কিন্তু অপেক্ষা করবো
আপনার জন্য.... হ্যাঁ দিচ্ছি।' বলে ফোনটা আবার সে সৈকতকে ফেরত দিলো। সৈকত আরো একবার অমিতজিকে আসতে অনুরোধ করে ফোনটা রাখলো। তারপর
দেবশ্রীর দিকে তাকালো। দেবশ্রী জিজ্ঞাসা করলো, 'কী মনে হয় - আসবেন উনি ?' সৈকত যেন একটু উষ্মা প্রকাশ করে বললো, 'তুমি যেভাবে গলে গিয়ে বললে, তাতে
পা-ভাঙা থাকলেও চলে আসবে মানুষ। তুমি সত্যি!' দেবশ্রী পাল্টা ঝাঁঝ দেখিয়ে বললো, 'তা নয়তো কী, কত বড়ো মানুষ বলো তো - তুমি যেরকম কাঠখোট্টাভাবে
বলছিলে, শিওর পরে না করে দিতেন উনি।' সৈকত কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো , 'তা দিলে দিতো।' দেবশ্রী বললো, 'দিলে দিতো ? আজকের দিনে এক কথায় একটা চাকরি
দিয়ে দিতে পারে এরকম কটা মানুষ আছে ? তোমার কৃতজ্ঞতাবোধ না থাকতে পারে, আমার আছে।' সৈকত আর কোনো কথা বলা সমীচীন হবে না বুঝে স্নান করে
অফিসের জন্য তৈরী হতে গেলো।
আজ শনিবার, দুজনেরই অফিস আছে। কিন্তু দেবশ্রীর তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে যায় শনিবার। আজ অবশ্য দেবশ্রীর কোনো কাজই নেই। তার আইডি লক হয়ে আছে। কাজ
করবেই বা কীভাবে। অফিসে এসে সে মেহতাজির কাছ থেকে জানতে পারলো যে এনকোয়ারি বোর্ড তৈরী হয়েছে। মেহতাজি তাকে রুমে ডেকে বললেন, 'এনকোয়ারি
বোর্ড তোমার সাথে সোমবার কথা বলবে। মিটিং ডেকেছে ওরা, আমাকেও থাকতে হবে সেখানে। আমার উপর দায়িত্ব দিয়েছে তোমাকে জানানোর।' তারপর একটু থেমে
দেবশ্রীকে কিছুটা হুকুমের সুরে বললেন, 'তুমি কিন্তু সব খুলেই বলবে, যে তুমি ভুল করে আমাকে পাঠাতে গিয়ে অন্য অ্যাড্রেসে মেইল পাঠিয়ে দিয়েছিলে। তুমি কিন্তু
বলবে না যে আমি তোমাকে কোনো মেইল পাঠাতে বলেছিলাম, ঠিক আছে ? তুমি বলবে যে অ্যাকাউন্টসের কাছ থেকে ওই ফাইলগুলো পেয়ে তুমি বুঝতে পারোনি কী
করতে হবে, তাই আমাকে পাঠাতে চেয়েছিলে। আমি যে তোমাকে কিছু পাঠাতে বলেছিলাম, এটা যেন খবরদার বোলো না।' দেবশ্রী চুপচাপ দেখতে লাগলো
মেহতাজিকে। তিনি একটু ইতস্তত করে আবার বললেন, 'দ্যাখো, তুমি আমার নাম নিয়ো না কোনোভাবে। এনকোয়ারিটা মিটে যাক। তারপর ওরা তোমার অ্যাগেইন্সটে
কিছু ডিসিপ্লিনারি স্টেপ নিলে আমি কথা বলে দেখবো কী করা যায়। ঠিক আছে ? আমি দেখবো। তুমি এই মিটিং-এ আমার কথা কিচ্ছু কিন্তু বলবে না।'
এই লোকটা তার শরীর ছুঁতে চায়, কিন্তু সে বেশি সুযোগ দেয় না। এইজন্য নিজের মনেই লোকটার প্রতি একটা অনুকম্পার ভাব ছিল। কিন্তু আজ দেবশ্রীর মনে এই
লোকটার প্রতি ঘৃণা এলো। নিজের চাকরি বাঁচাবার জন্য এভাবে তাকে ব্যবহার করতে পারে সে ? কাপুরুষ ছোটোলোক একটা। মেহতাজিকে যাহোক একটা
হ্যাঁ-ঠিক-আছে গোছের উত্তর দিয়ে সে বেরিয়ে এলো। অফিস থেকে বেরিয়ে একটা সুপারমার্কেটে ঢুকলো - কালকের জন্য কিছু কেনাকাটা করতে। রান্না করতে খুব
ভালোবাসে দেবশ্রী। আগে যখন সৈকত ভালো ছিলো, এইরকম রবিবার করে সে ভালো ভালো ডিশ বানাতো। রোজকার রুটিন রান্না করতে তার ভালো লাগে না এখন,
কারুরই ভালো লাগে না। কিন্তু মাঝে মাঝে বেশ একটা উৎসব উৎসব আবহাওয়ার মধ্যে লোকজনের জন্য স্পেশাল রান্না করতে বেশ লাগে। নিজের রান্নার তারিফ শুনতে
তার ভালো লাগে। কালকের জন্য তার প্ল্যান হলো চিকেন আর মাটনের দুটো আইটেম করবে... একটা চিকেন কাবাব, শুকনো খাবার জন্য... মদের সাথে বা খাবার
আগে... আর মাটনটা মেইন কোর্সে। কিছু পনিরও নিতে হবে। ভালো বাসমতি রাইস। স্যালাডের জন্য তিন-চার রকম সবজি। কিছু স্ন্যাক্স। সঙ্গে একটা নতুন টেবিলক্লথ
আর বোন-চায়নার খুব সুন্দর কিছু প্লেট, সারভিং বাওয়েল ইত্যাদিও কিনলো দেবশ্রী। ড্রিঙ্কসের ব্যাপারটা সৈকতই দেখে নেবে বলেছে। শুধু কালকের রান্নার মেনুর
উপকরণ আর অন্যান্য জিনিসপত্র কিনে ২ টোর মধ্যে আবাসনে ফিরে এলো সে। সেইদিনটা দেবশ্রী প্ল্যান-পরিকল্পনা করেই কাটালো কালকে কিভাবে নিজেকে
উপস্থাপন করা যায় এতো বড়ো মাপের ক্ষমতাবান একজন মানুষের সামনে।
পরদিনই রবিবার। এই একটা দিন ছুটির দিন। রবিবার সৈকত বিছানা থেকে নড়তে চায় না, সারাদিন ঘুমায় অথবা গল্পের বই পড়ে। অমিতজিরও আসার দিন আজ।
দেবশ্রী সকাল সকাল উঠে চা খেয়েই রান্নাঘরে ঢুকে গেলো। দুপুরের মধ্যে রান্নার ব্যাপারগুলো মোটামুটি সবটাই রেডি করে ফেললো সে। স্নান-খাওয়া সেরে তিনটের সময়
আবাসনের সামনেই একটা পার্লারে গেলো দেবশ্রী। মাসে অন্তত একবার এখানে তার আসা চাই-ই চাই। দু-সপ্তাহ আগেই একবার এসেছিলো। আজ আবার এলো,
আজকের রাতের অতিথির জন্য নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে। পুরুষ মানুষকে সবকিছুই গরম গরম পরিবেশন করা উচিত - সে মুরগি হোক বা মেয়ে। তাই চেষ্টার কোনো
ত্রুটি না রেখে সে ফুল বডি স্পা করালো, ব্লিচ করালো। এমনিতেই সে বেশ ফর্সা আর রূপসী, তার উপর সারা সপ্তাহের ক্লান্তি আর টেনশন চোখমুখ থেকে দূর করে
ঘন্টাদুয়েক পরে সে যখন বেরোলো পার্লার থেকে, তাকে দেখে আর ছাব্বিশ বছরের গৃহবধূ লাগছে না, মনে হচ্ছে বাইশ বছরের কোনো সুন্দরী লাস্যময়ী যুবতী। শুধু তার
শরীরের উথলে ওঠা মাপ দেখে মনে হয় যেন এই বয়সেই প্রচুর পুরুষের তলায় শুয়েছে। খুব সুন্দর করে চুলটাও বাঁধিয়ে নিয়েছে সে, বাড়িতে একা একা এতো সুন্দর
খোঁপা বাঁধা যায় না। অর্ধেক চুল সুন্দর করে বিনুনি করে বাকি অর্ধেক দিয়ে গোল খোঁপা তৈরী করে বিনুনি দিয়ে চারদিক সাজিয়ে দিয়েছে খোঁপার। দারুন দেখতে
লাগছে তাকে। দেবশ্রী জানে, আজ যেভাবেই হোক অমিতজিকে জালে ফেলতেই হবে। ঢলঢলে যৌবন তার শরীরে এমনিতেই সর্বদা খেলা করে, তার উপর আবার সুন্দর
করে সাজলে তো যেকোনো পুরুষ ফাঁদে পড়তে বাধ্য। অফিসের মেহতাজিকে নয়, এমনকি তার বসকেও নয়, তারও উপরে একেবারে খোদ জায়গায় বশ করবে সে।
শরীরের খেলা দেবশ্রী কম জানে না।
বাড়ি ফিরে সাড়ে সাতটার মধ্যে ডিনার রেডি করে কিচেনে সাজিয়ে ফেললো সে। টেবিলে নতুন কেনা টেবিলক্লথটাও পেতেছে। সোফাটা পরিষ্কার করে সাজিয়ে রেখেছে।
সৈকত পাজামা ছেড়ে প্যান্ট-শার্ট পরে নিয়েছে একটা। বেশ দামি হুইস্কি কিনে এনে রেখেছে সে অমিতজির জন্য। তার অবশ্য ওসব এখন খাওয়া বারণ। সব রেডি করে
একবার গা ধুতে ঢুকলো দেবশ্রী। ভালো করে গা-ধুয়ে সারা গায়ে সুগন্ধি বডি-স্প্রে লাগিয়ে একটা শাড়ি পড়লো সে। শাড়িতেই তাকে সবচেয়ে সুন্দর মানায়। এরকম
একজন স্পেশাল অতিথির জন্য নিজেকে অনেক যত্ন নিয়ে স্পেশালভাবে তৈরী করলো দেবশ্রী। এমনকি সৈকতও মুগ্ধ চোখে দেখতে লাগলো তাকে। সোনালী কাজ করা
কালো শাড়ি, সাথে ম্যাচিং কালো ব্লাউজ। তার ফর্সা গায়ের সাথে খুব সুন্দর মানিয়েছে। দেবশ্রীর ব্লাউজের পিঠটা অনেকটা গভীর করে কাটা, পিছনে অর্ধেক পিঠ পুরো
উন্মুক্ত। ফর্সা পিঠটা ভীষণ সেক্সী লাগছে। ব্লাউজটা দেবশ্রীর গায়ের সাথে একদম আঁটোসাঁটো করে চেপে রয়েছে। ব্লাউজের হাত দুটো কাঁধ থেকে মাত্র ৩ ইঞ্চি এসেই
শেষ। আর সামনের দিকটাও অনেকটা গোল করে কাটা, যদিও আচঁল দিয়ে ঢাকা দেওয়া আছে। দেবশ্রীর পেটের দিকে তাকিয়ে সৈকতের জিভ শুকিয়ে গেলো। শাড়িটা
নাভি থেকে প্রায় তিন ইঞ্চি নীচে পড়েছে। এতটা নীচে শাড়ি পড়তে দেবশ্রীকে কখনো দেখেনি সে। সৈকতের বাবা-মা এখানে এলে তো দেবশ্রী নাভির উপরে শাড়ি পরে।
অন্য সময় নাভির একটু নীচে। কিন্তু আজকে এতো নীচে পড়েছে যে খোলা তলপেট মাছের আঁশের মতো চকচক করছে। ভাগ্যিস আচঁলটা পেটের উপর দিয়ে ঢাকা
দেওয়া আছে, নাহলে অমিতজি কী মনে করবেন ? সে তবু একবার দেবশ্রীকে বললো, 'শাড়িটা বড্ডো নীচে পড়েছো মনে হচ্ছে না ? অমিতজি আসবেন, একটু সামলে
রেখো।' দেবশ্রী বাঁকা সুরে তার দিকে তাকিয়ে বললো, 'কেন, সামলে রাখার কী আছে ? অমিতজি কি বাঘ না ভাল্লুক যে আমাকে খেয়ে নেবেন ?' সৈকত আমতা-আমতা
করে বললো, 'না মানে তোমাকে খুব ইয়ে লাগছে। অমিতজি কী ভাববেন ?' দেবশ্রী সৈকতের সামনে এসে তার গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে বললো, 'কী লাগছে ?'
সৈকত খুব অনিচ্ছাসত্ত্বেও বললো, 'সেক্সী লাগছে খুব।' দেবশ্রী তৎক্ষণাৎ সৈকতের প্যান্টের সামনেটায় নিজের হাতটা ঘষতে ঘষতে বললো, 'তাও তো তোমার ওঠে না।'
বলেই সৈকতের ওইখানে একটা ধাক্কা দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো কিছু গয়নাগাঁটি নিয়ে। সৈকত হাত দিয়ে তার পুরুষাঙ্গের জায়গাটা সামলে
দেবশ্রীকে পিছন থেকে দেখলো একবার। তারপর আর কোনো কথা খুঁজে না পেয়ে হলরুমের সোফায় গিয়ে বসলো। ড্রেসিং টেবিলে বসে কানে গলায় কিছু হালকা গয়না
পরলো দেবশ্রী। ঠোঁটে খুব সুন্দর করে উজ্জ্বল মেরুন লিপস্টিক আর লিপ-লস লাগিয়ে নিলো। চুলটা আরেকবার একটু ঠিক করে নিলো। ঠিক সাড়ে আটটার সময় কলিং
বেলের আওয়াজ শোনা গেলো। সৈকত উঠে গিয়ে দরজা খুলে অমিতজিকে ভিতরে নিয়ে এলো। আর ঠিক সেই সময় দেবশ্রীও তার প্রসাধন শেষ করে তাদের বেডরুম
থেকে বেরিয়ে এসে হলরুমে প্রবেশ করলো।
অমিতজি ভিতরে ঢুকে হালকা একটা নমস্কার করে সোফায় বসলেন। দেবশ্রীকে দেখে বললেন, 'এই তো, দেখা করতে চাইছিলেন - দেখা হয়ে গেলো। সৈকতকে তো
আগেও দেখেছি - আপনার সঙ্গে পরিচয় ছিল না... আপনারই নাম দেবশ্রী, তাই তো ? দেবশ্রী বলতে পারি তো, নাকি - '। দেবশ্রী ভীষণ অবাক হলো তাকে দেখে। তার
ধারণা ছিল অমিতজি কোনো বয়স্ক লোক হবেন হয়তো, রাশভারী, গম্ভীর প্রকৃতির। কিন্তু যিনি এলেন, তার বয়স ৩৩-৩৪ হবে খুব বেশি হলে। ভীষণই হ্যান্ডসাম, লম্বা,
দারুন চেহারা। গলার স্বরের মধ্যে কী সুন্দর একটা গাম্ভীর্য আছে, একটা কর্তৃত্ব আছে। সেও পাল্টা একটা নমস্কার করে জবাব দিলো, 'হ্যাঁ, আমাকে দেবশ্রীই বলবেন।
আপনি যে কষ্ট করে এলেন, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ।' স্মিত হেসে অমিতজি বললেন, 'আসতেই হতো, আপনার অনুরোধ ফেলতে তো পারি না। কী বলো সৈকত ?'
সৈকত হালকা করে হেসে অফিসের ব্যাপারে টুকটাক কথা শুরু করলো। দেবশ্রী ইতিমধ্যে দু-গ্লাস শরবত করে এনে টেবিলে রাখলো। তারপর একটা গ্লাস তুলে অমিতজির
দিকে বাড়িয়ে দিলো নীচু হয়ে। অমিতজি সেটা হাত বাড়িয়ে নেবার সময় ভালো করে দেবশ্রীর দিকে দেখে নিলেন একবার। শাড়ির ভিতর দিয়ে দেবশ্রীর উঁচু হয়ে থাকা
বুকের সাইজে তার চোখ আটকে গেলো। বললেন, 'অফিসের কাজ কেমন চলছে ? ভালো লাগছে তো অফিস ?' দেবশ্রী অন্য গ্লাসটা সৈকতের সামনে বসিয়ে রেখে
হালকা হেসে অমিতজিকে বললো, 'অফিস ভালোই চলছে। তা আপনি আপনার মিসেসকে নিয়ে এলেন না কেন ? আরো ভালো হতো।' শরবতে চুমুক দিয়ে দেবশ্রীর
বুক আর পেটের দিকে একবার তাকিয়ে নিলেন অমিতজি। বার বার যেন মাপছেন। বললেন, 'কার মিসেসকে আনবো ? অন্যের মিসেস আমার সঙ্গে আসতে রাজি হবে
কেন ?' এরকম অদ্ভুত উত্তর শুনে অবাক হয়ে দেবশ্রী বললো, 'আহা, অন্যের মিসেসকে আনতে আমি আপনাকে বলেছি নাকি ? নিজেরটিকেই নিয়ে আসতে পারতেন
তো।' দুই চুমুকে বাকি শরবত প্রায় খালি করে দিয়ে অমিতজি উত্তর দিলেন, 'নিজের তো নেই - থাকলে রবিবার ছুটির দিন এখানে কি আর আসতাম ? তাকেই ধরে এখন
আচ্ছাসে -'। কথাটায় অশ্লীল একটা ইঙ্গিত দিয়ে শেষ করলেন অমিতজি, যেটা সৈকতের একদম ভালো লাগলো না। সে নিজের গ্লাসটা তুলে নিয়ে শরবতে হালকা চুমুক
দিলো। কিন্তু দেবশ্রী খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো অমিতজির কথায়। বললো, 'আচ্ছা - তাহলে তো ভালোই হলো, উপোস করেই আছেন। অবশ্য আমার এখানে শুধু পেট
ভরাবার জিনিসই আছে, অন্য খাবার জিনিস পাবেন না।' বলে সেও হাসতে লাগলো আর অমিতজিও হা-হা করে হেসে উঠলেন। শরবতের গ্লাসটা নাড়িয়ে তলানিটুকু
গলায় ঢেলে দিলেন অমিতজি। তারপর দেবশ্রীর শরীরের উপর থেকে নীচ অবদি আবারও চোখ বুলিয়ে নিলেন। দেবশ্রী ওদের সামনেই শাড়ির আঁচলটা পিঠ থেকে ঘুরিয়ে
সামনে এনে কোমরে গুঁজে নিলো একটু। এতে তার বাঁদিকের পেটের সাইডটা কিছুটা উন্মুক্ত হয়ে পড়লো। সামান্যই। শিকারীর মতো সেইদিকে একবার দেখলেন
অমিতজি। তারপর একবার সৈকতের দিকে তাকিয়ে নিয়ে একটা চোখ মেরে দেবশ্রীকে বললেন, 'আমি তো দেখতে পাচ্ছি সবরকম খাবার জিনিসই মজুত আছে।' দেবশ্রী
পাল্টা উত্তর করলো, 'কিন্তু পাহারাদারও তো বসে আছে।' বলে যেন খুব একটা মজার কথা বলেছে সে এমনভাবে সৈকতের দিকে তাকিয়ে অর্থপূর্ণভাবে হাসলো। সৈকত
ঠিক বুঝতে পারছিলো না কিরকম প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত। তাই সেও একটু মিটিমিটি হাসলো। কথাটা অবশ্য ভুল বলেনি দেবশ্রী। পাহারাদারই বটে। শরীর একটু
দুর্বল হোক আর যাই হোক, সে দেবশ্রীর স্বামী, দেবশ্রীর উপর তার পূর্ণ অধিকার। দেবশ্রীকে রক্ষা করা তারই তো কর্তব্য।
একটু পরে সৈকত কথাটা ঘোরাবার জন্য বললো, 'একটু হুইস্কি হয়ে যাক অমিতজি ?' বলে সে বোতল আর গ্লাস নিয়ে এলো। তারপর একটা ছোট্ট পেগ বানিয়ে
অমিতজিকে অফার করলো। অমিতজি বললেন, 'তুমি নেবে না ?' এর উত্তরে সৈকত বোঝালো যে শরীরের কারণে তার কোনোরকম মদ্যসেবন এখন বন্ধ। কিন্তু অমিতজি
কিছুতেই শুনলেন না। তিনি একা মদ্যপান করবেন না, ওরকম নাকি করতে নেই। সৈকতকে ডাক্তার বারণ করেছে তো ঠিক আছে, দেবশ্রী খেতেই পারে। সৈকত আঁতকে
উঠলো এরকম একটা প্রস্তাবে। না, দেবশ্রী একসময় খেত টুকটাক - তারা দুজনেই তখন উইকেন্ডে বাড়িতে মদ খেত, সে বেশি আর দেবশ্রী অল্প-স্বল্প। তাই দেবশ্রীর অভ্যেস
আছে। সেটা সমস্যা নয়। কিন্তু সে নিজে মদ খাচ্ছে না, আর তার সামনে বসে তারই স্ত্রী মদ খাবে আরেকজন লোকের সাথে ? ব্যাপারটা তার ঠিক লাগলো না। কিন্তু
কিছু বলাও যায় না। সে দেবশ্রীকেই জিজ্ঞাসা করলো, 'তুমি কি খাবে ? খেলে খেতে পারো -'। সৈকত আশা করেছিল যে দেবশ্রী নিজেই না বলবে। কিন্তু তাকে অবাক
করে দিয়ে দেবশ্রী অমিতজির দিকে তাকিয়ে বললো, 'অমিতজি আমাদের গেস্ট। উনি বললে খেতে তো হবেই। আমি কিন্তু অল্পই খাবো - শুধুই আপনাকে সঙ্গ দেবার
জন্য। আপনি মন খুলে খান।' এই বলে একটা ছোট্ট গ্লাসে সে নিজের জন্য একটা হাফ-পেগ বানিয়ে অমিতজির উদ্দেশ্যে গ্লাসটা তুলে বললো, 'চিয়ার্স' ! তার মনটা
কোনো এক অজানা কারণে সত্যি উৎফুল্ল ছিলো আজ। সবচেয়ে অবাক হয়েছিল সে এই ভেবে যে অমিতজির এখনো বিয়ে হয়নি। এরকম হ্যান্ডসাম ক্ষমতাবান একজন
পুরুষ কিনা এখনো অবিবাহিত ? এরকম পুরুষকে তো মেয়েরা স্বপ্নে দেখে। বয়স কত হবে - মেরেকেটে চৌতিরিশ। কি দারুন চেহারা। বলিষ্ঠ, শক্তপোক্ত গড়ন। আচ্ছা
অমিতজির যদি চৌতিরিশ হয়, তার ছাব্বিশ - আট বছরের ব্যবধান। হঠাৎ এটা মনে হতেই একটু লজ্জা পেলো দেবশ্রী, এসব কী ভাবছে সে। সে তো বিবাহিতা,
একজনের স্ত্রী। হয়তো কিছুটা হতভাগ্যও বটে। না, এসব ভেবে লাভ নেই। নিজের মাথা থেকে চিন্তাটা ঝেড়ে ফেলতে চাইলো সে, কিন্তু বার বার অন্য একদিকে চলে
যাচ্ছিলো তার মনটা।
ড্রয়িংরুমের সোফায় বসেই কথা হচ্ছিলো। L প্যাটার্নের সোফার ছোট সাইডটিতে সৈকত বসেছে, অমিতজি বসেছেন চওড়া দিকটায়, হাত-পা ছড়িয়ে। সৈকতের
সামনেটায় ছোট সেন্টার টেবিলটা। দেবশ্রী একটু দূরে একটা চেয়ারে বসে ছিলো। অমিতজি সৈকতের অফিসের কাজকর্ম নিয়ে খোঁজ নিচ্ছিলেন। আর মাঝে মাঝে দেবশ্রীর
দিকে তাকাচ্ছিলেন। তার তাকানোর মধ্যে যে একটা লোলুপ দৃষ্টি আছে, সেটা দেবশ্রীর গভীর চোখ ঠিকই পড়ে নিতে পারলো। হঠাৎ সে নিজের গ্লাসটা টেবিলে রেখে
বললো, 'দাঁড়ান, কাবাব করে রাখা আছে - নিয়ে আসছি।' বলে উঠে গিয়ে কিচেন থেকে কাবাবের প্লেটটা নিয়ে এলো সে। 'আপনি কাবাব ভালোবাসেন ?' অমিতজিকে
প্রশ্ন করলো দেবশ্রী। তারপর কাবাবের প্লেটটা সেন্টার টেবিলে রেখে একটা বড়ো লেগপিস নিয়ে অমিতজির কাছে গিয়ে তাকে অফার করলো, 'আমি নিজে বানিয়েছি -
একটু দেখুন না টেস্ট করে, ড্রিঙ্কসের সঙ্গে মনে হয় ভালোই লাগবে।' অমিতজির খুব কাছেই দাঁড়িয়েছিল দেবশ্রী। যখন সে একটু ঝুঁকে পড়ে অমিতজির মুখের কাছে
লেগপিসটা নিয়ে গিয়ে অফার করছিলো, তার ভারী বুকদুটো শাড়ির আঁচলে এমনভাবে ঝুলে রইলো যেন পুকুর থেকে বড়ো রুইমাছ উঠেছে জালে। সৈকত বুঝে উঠতে
পারলো না যে তার বউ কি অমিতজিকে খাইয়েও দেবে নাকি ? এইটা ভেবেই তার বুকটা ধক করে উঠলো। কিন্তু সেন্টার টেবিলের আড়ালে সে দেখতেও পেলো না যে
দেবশ্রী শুধু কাবাব অফার করলো তাই নয়, তার একটা পায়ের পাতা হালকা করে ঠেকিয়ে দিলো অমিতজির একটা পায়ের সাথে। অমিতজি তাকিয়ে দেখলেন
দেবশ্রীকে। তার মুখের খুব কাছে চিকেন পিসটা ধরে রেখে আয়ত চোখে তার দিকে তাকিয়ে দেবশ্রী আবার বললো, 'কী হলো, খান -। হাঁ করুন, হাঁ করুন।' তার সাথে
পায়ের পাতা দিয়ে অমিতজির পায়ের পাতায় ঘষা দিলো একটা। তার পায়ে পা ঠেকে যাওয়াটা যে নেহাতই কাকতালীয় নয়, ইচ্ছাবশতঃ - দেবশ্রী সেটা বুঝিয়ে দিলো
পায়ের পাতা দিয়ে দুবার ঘষা দিয়ে। কিন্তু মুখে তার মিষ্টি একটা সরল হাসি। অমিতজি কিছুটা যেন আবিষ্ট হয়ে দেখতে থাকলেন দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে। অনেক মেয়ে
দেখেছেন, এমনি চেখেও ফেলেছেন তিনি। কিন্তু এরকম অপরূপ সুন্দরী যুবতী কোনোদিন তার হাতে আসেনি। দেবশ্রীকে দারুন সুন্দর লাগছিলো তার। কাজল দেওয়া
দুটো চোখ খুব সুন্দর করে আঁকা। চোখের মণি দুটো দিয়ে দেবশ্রী অমিতজির চোখের দিকে দেখছে, একবার তার এই চোখের দিকে, একবার তার ওই চোখের দিকে।
দুটো টোপা টোপা ফর্সা গাল দেবশ্রীর, দু-এক বিন্দু ঘাম জমেছে। ঠোঁটের ঠিক উপরে বাঁদিকে একটা ছোট্ট কালো তিল যেন মুখটাকে ভীষণ সেক্সি করে তুলেছে।
কমলালেবুর কোয়া কেটে বানানো দুটো ঠোঁট - মেরুন রঙের লিপস্টিক মাখানো, ঠোঁটদুটো ভেজা ভেজা টুপটুপ করছে এমন যেন ধরে চুষলেই কমলালেবুর রস বের হয়ে
আসবে। সেইদিকে তাকিয়ে অমিতজি মুখটা হাঁ করলেন। দেবশ্রী লেগপিসের একটা অংশ আস্তে করে অমিতজির মুখের ভিতর ঢুকিয়ে দিলো। অমিতজি একটা কামড়
মেরে কিছুটা মাংস ছিঁড়ে নিয়ে দেবশ্রীর দিকে তাকিয়েই চিবোতে লাগলেন। সৈকত একটু গলা খাঁকারি দিয়ে ব্যাপারটা ইগনোর করার ভঙ্গিতে বললো, 'অমিতজি,
আপনার বিজনেসের কী খবর, সব ঠিকঠাক চলছে তো ?'
এর উত্তরে অমিতজি যেটা করলেন, দেখেই সৈকতের চোখ বিস্ফারিত হয়ে গেলো। অমিতজির খুব কাছেই দেবশ্রী আধ-খাওয়া চিকেন-পিসটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।
একটু সাইড থেকেও তার খোলা পিঠের কিছুটা দেখতে পাচ্ছিলো সৈকত। দেবশ্রী অমিতজির দিকেই তাকিয়ে ছিল, বোধহয় তার চিবিয়ে নেবার অপেক্ষায় ছিলো। তার
অস্বস্তি হচ্ছিলো দেবশ্রীর এরকম খোলামেলা পোশাক নিয়ে। কী দরকার ছিল অতটা পিঠখোলা ব্লাউজ পরার, অমিতজির সামনে ? তাও তো সামনে আঁচলটা আছে তাই
রক্ষে। সামনে ভীষণ নীচু করে শাড়িটা পড়েছে দেবশ্রী, এখন দেখা না গেলেও সৈকত জানে সেটা। দেবশ্রীর আঁটোসাঁটো শাড়ি নিয়েই চিন্তিত ছিল সৈকত। কিন্তু সে জানে
না যে নীচে সেন্টার টেবিলের আড়ালে কি চলছে - দেবশ্রী আরো একবার তার পায়ের পাতা অমিতজির পায়ের পাতার উপর কিছুটা উঠিয়ে দিয়ে কামুকভাবে ঘষছিলো
সেটা। সৈকত দেখলো যে অমিতজি হঠাৎই হাত বাড়িয়ে দেবশ্রীর কোমরটা জড়িয়ে ধরে তাকে সোফার উপর টেনে নিলেন। বললেন, 'আপনি বসুন না, কষ্ট করে দাঁড়িয়ে
আছেন কেন -'। আচমকা এই টানে দেবশ্রী প্রায় অমিতজির গায়ের উপর পড়তে পড়তেও সামলে নিয়ে তার ঠিক পাশেই ধপ করে পড়লো। পড়লোই বলা উচিত, কেননা
ওটাকে বসা বলে না। অমিতজি চালের বস্তার মতো টেনে নিলেন দেবশ্রীকে তার বাঁ-পাশে। আর সোফায় তাকে ফেলার পরেও তার কোমর থেকে হাতটা সরালেন না। এই
ঘটনায় দেবশ্রী নিজেও একটু হকচকিয়ে গেলো, কারণ অমিতজি যে এতটা আগ্রাসীভাবে তাকে টেনে নেবেন, সে ভাবতে পারেনি। অমিতজি কিন্তু পরক্ষণেই খুব
স্বাভাবিক গলাতে সৈকতের কথার উত্তর দিলেন, 'হ্যাঁ, বিজনেস সব ঠিকই চলছে, যদ্দুর আমি জানি। তোমাকে বলতে হবে কোন বিজনেসের কথা তুমি জিজ্ঞাসা করছো
- কারণ আমার এতো জায়গায় এতো কারোবার চলছে যে আমি নিজেই সব জানি না।' তারপর দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে একটু হাসলেন। দেবশ্রী আধ-খাওয়া চিকেন
পিসের বাকিটা অমিতজির মুখের কাছে এগিয়ে নিয়ে ধরলো। তাকে দেখে মনে হলো যেন অমিতজির গায়ের এতো কাছে বসে থাকতে তার একটুও আপত্তি নেই।
বললো, 'আপনি সত্যি ভীষণ সাহসী। এতো বিজনেস চালান একসাথে এতোদিকে, কত সাহস লাগে - তাই না সৈকত ?' শেষের কথাটা সৈকতের উদ্দেশ্যে - যে কিনা
তখন ভাবার চেষ্টা করছিলো ঠিক কী ঘটছে। সোফার ওই সাইডে অমিতজির গায়ের সাথে প্রায় লেগে বসে আছে তারই স্ত্রী - দেবশ্রী, আর বসে বসে সে নিজের হাতে
অমিতজিকে চিকেন কাবাব খাওয়াচ্ছে। দেবশ্রীর প্রশ্নের উত্তরে সে একটু কাষ্ঠহাসি হেসে বললো, 'হ্যাঁ, সাহসের বহর তো বুঝতেই পারছি।' দেবশ্রীর বাড়ানো হাত থেকে
আরেকটু চিকেন দাঁত দিয়ে কামড়ে ছিঁড়ে নিয়ে মুখে ফেলে চিবোতে চিবোতে অমিতজি সৈকতের দিকে তাকিয়ে বললেন, 'সাহসের এখনই কী দেখেছো - তোমাদের
ওই অফিস, কী যেন নাম - হ্যাঁ, আর. এম. ফাইনান্সিয়াল লিমিটেড তো - একটা ফোন করবো ওখানে, তোমার প্রমোশন হয়ে যাবে। আবার একটা ফোন করবো, কাল
থেকে তুমি বরাবরের জন্য বাড়িতে, বেকার। বুঝলে ?'
কথা বলতে বলতে অমিতজি দেবশ্রীর কোমরে নিজের বাঁহাতটা দিয়ে যে জড়িয়ে ছিলেন, সেটা একটু একটু করে টিপতে লাগলেন - দেবশ্রীর কোমরের তুলতুলে মাংস
আর তাতে শাঁখের মতো হালকা ভাঁজ, নিজের হাতে অনুভব করতে লাগলেন। সৈকত সেটা দেখতে পাচ্ছিলো না কারণ অমিতজির হাতটা ছিল দেবশ্রীর পিছনে। কিন্তু
অমিতজির হাতটা যে ঘের দিয়ে দেবশ্রীকে ধরে রেখেছে, সেটা সে দেখতে পাচ্ছিলো। এখন এভাবে অতিথির সামনে কিছু বলাও তো যায় না, ভীষণ অভদ্রতা হবে
ব্যাপারটা। তাই সে একটু সহ্যই করে নিলো। দেবশ্রী নির্লজ্জের মতো অমিতজির স্পর্শ খেতে খেতে তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, 'কাবাবটা কেমন হয়েছে বললেন
না ?' দেবশ্রীর কোমর আর পিঠের খোলা জায়গায় হাত দিয়ে বুলোতে বুলোতে অমিতজি বললেন, 'ভীষণ স্মুথ, মাখনের মতো একদম।' দেবশ্রী হেসে উঠে বললো, 'আমি
কিন্তু কাবাবের কথা জিজ্ঞাসা করেছি।' অমিতজি বললেন, 'আমিও তো কাবাবের কথাই বলছি, আপনার কথা থোড়াই বলেছি।' দেবশ্রী মিষ্টি হেসে বললো, 'আচ্ছা,
তাহলে আরও খান না -' বলে লেগপিসের বাকি অংশটুকু অমিতজির মুখে ঢুকিয়ে দিলো। তারপর হঠাৎ সৈকতের দিকে তাকিয়ে বললো, 'তুমিও একটা চিকেন পিস
নিয়ে নিতে পারো তো।' বলে সে সেন্টার টেবিলের উপরে রাখা চিকেনের প্লেটের দিকে চোখটা দিয়ে ইশারায় দেখালো। দেবশ্রীর হাতে ধরা লেগপিসের অবশিষ্ট অংশ
তখনো অমিতজির মুখে, আর তিনি দাঁত দিয়ে সেটা ছিঁড়ে নিচ্ছেন যেন কোনো জন্তু তার শিকার ছিঁড়ে খাচ্ছে। সৈকত কী বলবে বুঝতে পারছিলো না। অমিতজি গেস্ট
বলে দেবশ্রী নিজের হাতে তাকে খাওয়াবে, আর সৈকতকে নিজেকে নিয়ে খেতে হবে। কিন্তু এই অবস্থায় না বললেও খারাপ দেখতে লাগে, যেন সে খুব হিংসা করছে।
তাই অনিচ্ছাসত্ত্বেও সৈকত প্লেট থেকে একটা চিকেনের পিস তুলে নিয়ে খেতে থাকলো। এই তেল-মশলা তার বেশি খাওয়াও ঠিক নয়, একটাই ঠিক আছে। দেবশ্রীও হাত
বাড়িয়ে ছাল-ছাড়ানো মাংসের হাড়টা টেবিলে নামিয়ে রেখে প্লেট থেকে আরেকটা চিকেন পিস তুলে নিয়ে অমিতজির মুখের সামনে ধরলো। 'এই নিন, আরও খান -
আপনার জন্যই তো বানানো। আপনার ভালো লাগছে শুনে আমি খুব খুশি।' অমিতজি তার হাত থেকে আরেকটু চিকেন কামড়ে নিয়ে বললেন, 'ভালো না লাগবে কী
করে, আপনার হাতের কাবাব আপনার মতোই নরম আর ভীষণ সুস্বাদু।' বলেই তিনি যে হাত দিয়ে দেবশ্রীর কোমরটা জড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন, সেই হাত দিয়ে দেবশ্রীকে
নিজের দিকে একটু টেনে নিলেন। এর ফলে তার গায়ের সাথে প্রায় মিশে গেলো দেবশ্রী। কিন্তু সে কোনো আপত্তি দেখালো না। বরং একবার চোখ তুলে সৈকতের দিকে
তাকিয়ে নিয়ে হাসি হাসি মুখে আবার অমিতজিকে চিকেন খাওয়াতে লাগলো। আর বললো, 'আপনি আমাকে সুস্বাদু বললেন ?' অমিতজি বললেন, 'না আমি তো
কাবাবের কথা বলেছি, তাই না সৈকত ?' বলে একহাতে দেবশ্রীকে জড়িয়ে ধরে রেখে অন্যহাতে মদের গ্লাসটা তুলে চুমুক দিলেন। সৈকতের চোখে ব্যাপারটা বেশ দৃষ্টিকটু
লাগছিলো। সে ঠিক করলো অমিতজি চলে গেলে দেবশ্রীকে সে বলবে যে তার আচরণ আজ বেশ অশালীন দেখতে লাগছিলো। কিন্তু অমিতজির সামনে সে কিছু বলতে
সাহস পেলো না। একটু কৃত্রিম হাসি দিয়ে বললো, 'হ্যাঁ, কাবাবটা সুস্বাদুই হয়েছে।' সে জানে যে অমিতজিই এখানে গেস্ট। তাছাড়া একথা সত্য যে অমিতজির যা হাত
আছে তাদের অফিসে, সৈকতের চাকরি উনি যেকোনো সময় নট করে দিতে পারেন। বরং অমিতজির সাহায্য পেলে তার উপকারই হবে। নিজের চিকেন পিসটা
মনোযোগ সহকারে খেতে খেতে সে দেখতে পেলো যে দেবশ্রী তার শাড়িতে ঢাকা ডান-পাটা বাঁ-পায়ের উপর দিয়ে অমিতজির দিকে ঝুলিয়ে রেখেছে, আর সেই পা-টা
একটু একটু উঠছে নামছে। সেন্টার টেবিলের উপর দিয়ে সামান্য এটুকুই দেখতে পেলো সে। হয়তো দেবশ্রী নিজের পা দিয়ে আরেকটা পা চুলকাচ্ছে একটু, সৈকত
ভাবলো। অমিতজি দেবশ্রীর হাত থেকে আবার একটা টুকরো চিকেন দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে নিয়ে গ্লাস থেকে একটু হুইস্কি চুমুক মেরে নিলেন। দেবশ্রী সেন্টার টেবিলের
আড়ালের সুযোগ নিয়ে তার বাঁ-পায়ের বুড়ো আঙুলটা দিয়ে অমিতজির পায়ের গোড়ালি থেকে একটু উপর পর্যন্ত সৈকতকে না-দেখিয়ে আস্তে আস্তে ঘষতে লাগলো। আর
মিষ্টি করে জিজ্ঞাসা করলো, 'কাবাব খেতে আপনার ভালো লাগে, তাই না ?' অমিতজি ইঙ্গিতপূর্ণভাবে সৈকতের দিকে তাকিয়ে জবাব দিলেন, 'কাবাব - আর শবাব...
দোনো। কী বলো ?'
সৈকত একটু হেসে বললো, 'হ্যাঁ - তা তো লাগে।' দেবশ্রী তার দিকে তাকিয়ে একটু অনুযোগের সুরে বললো, 'ওর কথা ছাড়ুন তো, ওর কাবাব বেশি খাওয়া এখন বারণ।'
তারপর আবার অমিতজির দিকে তাকিয়ে বললো, 'আপনি খান বরং, ভালো করে খান, চেটে পুটে খেয়ে যাবেন আজ, কেমন ?' অমিতজির হাতের উপর তার পিঠ।
পিঠের উপর ব্রা-এর হুকটা ব্লাউজের ভিতর দিয়েই অমিতজির হাতের সঙ্গে ঘষা লাগছে। অমিতজি নিজের হাতের কনুইয়ের উল্টোদিকে দেবশ্রীর ব্রা-এর হুকটা অনুভব
করতে পারলেন। তার ভীষণ কামোত্তেজনা জাগছিল এরকম শাঁসালো একটা যুবতী শরীর হাতের কাছে পেয়ে। তিনি বুঝতে পারছিলেন যে দেবশ্রীর মধ্যে অন্য একটা
ব্যাপার আছে। টাকা দিয়ে যে মেয়েদের কিনেছেন এতোদিন, তাদের মধ্যে এই সরস ভাবটা নেই, এই কামুক ধরণটা থাকে না। দেবশ্রীর শরীরের উপর তার হাতের চাপ
ক্রমশ বাড়ছিল। দেবশ্রীর নিজের শরীরেও একটা শিরশিরানি আসছিলো। সে অমিতজির সাথে প্রায় লেপ্টে থাকা অবস্থায় সৈকতের দিকে একবার তাকালো। সৈকতও তার
দিকেই তাকিয়ে দেখছিলো। সৈকতের চোখে কেমন যেন একটা রাগ-রাগ ভাব। দেবশ্রী খুনসুটির ভঙ্গিতে একহাত দিয়ে অমিতজির হাতটা নিজের পিঠ থেকে সরিয়ে
দিলো। বললো, 'আপনি শুধু সাহসীই নন, ভীষণ দুস্টুও'। কিন্তু সে সরে বসলো না, অমিতজির গায়ের সঙ্গে লেগেই বসে রইলো মুখে মিষ্টি একটা হাসি নিয়ে। সৈকতকে
চোখের ইশারায় দেবশ্রী একবার হুইস্কির বোতলটার দিকে দেখালো, বোঝালো যে অমিতজির গ্লাস খালি হয়ে এসেছে। দেবশ্রীর খোলামেলা ব্যাপারটা সৈকতের ঠিক
পছন্দ হচ্ছিলো না, কিন্তু এটা তো ঠিক বলে বোঝানোর ব্যাপার নয়, তাই সে সবটাই অতি কষ্টে হজম করে নিচ্ছিলো। দেবশ্রীর ইশারায় সৈকত একটু উঠে অমিতজির
গ্লাসে আরো একটা পেগ ঢেলে দুটো বরফের টুকরো দিয়ে দিলো। তারপর আবার নিজের জায়গায় হেলান দিয়ে বসলো। এদিকে অমিতজির লম্পট হাতের স্পর্শ সরিয়ে
দিয়ে দেবশ্রী সামনে ঝুঁকে টেবিল থেকে আরেকটা চিকেন পিস তুলছিলো। তখন অমিতজি অবলীলাক্রমে তার হাতটা আবার দেবশ্রীর পিছনে সোফায় ওপর পেতে
দিলেন। দেবশ্রী চিকেন পিসটা নিয়ে সোফায় হেলান দিতেই অমিতজির পুরুষ্ট বাহুর আলিঙ্গনে ধরা পড়লো - এবার আরেকটু বলিষ্ঠভাবেই তাকে যেন জড়িয়ে নিলেন
অমিতজি। কিন্তু সেই ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ভ্রূক্ষেপ না করে দেবশ্রী একবার শুধু সৈকতের সাথে চোখাচোখি করে নিলো। সৈকত বোধহয় একদমই পছন্দ করছে না এগুলো,
সেটা বুঝেও দেবশ্রী অমিতজির দিকে একটু ফিরে চিকেনের পিসটা তুলে অমিতজির মুখের কাছে নিয়ে গিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললো, 'কাবাব ভালো লাগে আপনার
তো আরো নিন না।' অমিতজি দেবশ্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে মুখটা অল্প হাঁ করলেন, তার পাষণ্ড দাঁতগুলো দেখা গেলো। দেবশ্রী অমিতজির চোখের দিকে তাকিয়ে থেকেই
মোহময়ীভাবে বললো, 'খান, আরো খান - আমি দিচ্ছি তো - এই নিন, কামড়ে কামড়ে খান।' বলে অমিতজির রক্তচাপ আরো বাড়িয়ে তুলতে তার দিকে তাকিয়ে থাকা
অবস্থাতেই দেবশ্রী হালকা করে দাঁত দিয়ে তার নীচের ঠোঁটটা বাঁ-দিক থেকে কামড়েই ছেড়ে দিলো। সৈকত ডানদিকে বসে থাকায় দেবশ্রীর এই কাজটা ঠিক দেখতে
পেলো না। কিন্তু অমিতজি দেখলেন, আর সেইসঙ্গে তার পায়ে দেবশ্রীর ক্রমাগত ঘষে যাওয়া বুড়ো আঙুলের স্পর্শও অনুভব করলেন। টেস্টোস্টেরোনের স্রোত বয়ে গেলো
তার কোষে কোষে। দেবশ্রীর পিছনে নিজের ডানহাতটা একটু উপরে উঠিয়ে দেবশ্রীর খোলা পিঠের উপর বোলাতে লাগলেন, আর মাঝে মাঝে পাঁচটা আঙ্গুল জড়ো করে
দেবশ্রীর পিঠের মাংস নরম পনিরের মতো চিপতে লাগলেন। আর মুখে কচকচ করে কাবাব চিবোতে লাগলেন। তার হাতটা পিছনে থাকায় হাতের কীর্তি পরিষ্কার দেখতে
পাচ্ছিলো না সৈকত। কিন্তু কিছু অনুমান করছিলো সে। তাই একটু তাড়া দেওয়ার ভঙ্গিতে বললো, 'ডিনারের দিকে গেলে হতো না ? আমার শরীরটা আবার -'। তার
কথাটা পুরো শেষ করতে না দিয়ে অমিতজি সৈকতের দিকে গ্লাস-ধরা হাতটা একটু বাড়িয়ে বললেন, 'তুমিও সত্যি, কী শরীর করে রেখেছো মাইরি - মাল খেতে পারো
না, কাবাব খাওয়া বারণ, জোশ পাবে কীকরে ? মেয়েমানুষ -' বলেই দেবশ্রীর দিকে ফিরে নরম গলায় বললেন, 'মাফ করবেন, আমি হয়তো ভুলভাল শব্দ বলছি, কিন্তু
আমি ঠিক কথাই বলছি'। তারপর আবার সৈকতের দিকে ফিরে বললেন, 'মেয়েমানুষ তো এই জোশই দেখতে চায় আমাদের মধ্যে, জোশ আনো জোশ, ভালো করে
খাও-দাও। কি, ঠিক বলছি তো ?' শেষের কথাটা আবার দেবশ্রীর উদ্দেশ্যে। দেবশ্রী অমিতজির মুখে চিকেনের বাকি টুকরোটা ঢুকিয়ে দিয়ে বললো, 'একদম ঠিক
বলেছেন আপনি, অমিতজি। মেয়েমানুষ কী চায়, আপনি ভালো জানেন।' অমিতজি চিকেনের টুকরোটা চিবোতে চিবোতে গ্লাস থেকে বেশ কিছুটা পানীয় গলায় ঢেলে
নিলেন। সৈকত ওই জোশের কথায় একটু মুষড়ে পড়েছিল। কী বলবে সে, তার শরীরের কষ্ট এরা কি বুঝবে ? যার হয়, সে বোঝে। সে একটু গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,
'মেইন কোর্সটা তাহলে শুরু করা যাক, অমিতজি। আমি একটু টয়লেট থেকে আসছি। দেবশ্রী তুমি টেবিল রেডি করো।' বলে সৈকত উঠে গিয়ে বাথরুমে ঢুকলো। দেবশ্রী
উঠবে কি, অমিতজির শক্ত হাতের বেষ্টনে আটকে পড়ে আছে। তার বুকটা একটা অদ্ভুত আনন্দে আজ ধড়াস ধড়াস করছিলো।
নিজের স্বামীর সামনে কেউ তাকে এভাবে স্পর্শ করেনি কোনোদিন, এইভাবে চটকায়নি।
সৈকতকে ডাইনিং থেকে চলে যেতে দেখে অমিতজি দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, 'আপনাকে কিন্তু খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।' দেবশ্রী মুচকি হেসে নিজেকে অমিতজির
আরো একটু কাছে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললো, 'সত্যি ?' অমিতজি আনমনে তার দুপাটি দাঁত একটু হাঁ করলেন, যেন শ্বদন্ত দেখাচ্ছেন। আসলে দাঁতের
পাটিদুটো ওই ভঙ্গিমায় রেখে সামনের দাঁতে আটকে থাকা একটা চিকেনের টুকরোকে জিভ দিয়ে বাগে আনার চেষ্টা করছিলেন। তার মধ্যেই বললেন, 'হ্যাঁ, সুন্দর-ই
দেখাচ্ছে বলবো, কারণ সেক্সি দেখাচ্ছে বললে আপনি যদি মাইন্ড করেন।' দেবশ্রী অমিতজির দিকেই তাকিয়ে থেকে বললো, 'যাঃ... এসব আপনার বানানো কথা। আমি
আবার সেক্সি কীসের ?' অমিতজি দাঁতের ফাঁকে আটকানো চিকেনের টুকরোটাকে ক্রমাগত বার করবার চেষ্টা করতে করতে বললেন, 'ভীষণ সেক্সি আপনি, যেমন টাইট
তেমনি সেক্সি।' বলে ডানহাতে দেবশ্রীর বগলের কাছে চেপে ধরে তাকে আরো কাছে টেনে আনলেন। টেনে এনে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে দিলেন। অমিতবাবুর
হাতের কঠিন চেটো দেবশ্রীর ডানদিকের স্তনকে কাপড়ের উপর দিয়েই প্রায় চেপে ধরলো। তার বাঁদিকের হাত আর ৩৬ সাইজের বাতাবিলেবু ব্লাউজের তলায় চেপ্টে
গেলো অমিতজির দেহের চাপে। বাধ্য হয়ে দেবশ্রী তার বাঁহাতটা উঁচু করে সোফার পিছন দিকে ছড়িয়ে দিলো। এতে তার বাঁদিকের স্তন আর অমিতজির বুকের মধ্যে এক
ইঞ্চির তফাৎ রইলো মাত্র। অমিতজির মুখের কাছে তার ডানহাতের পেলব মোলায়েম আঙুলগুলো নিয়ে গিয়ে দেবশ্রী বললো, 'দাঁড়ান আমি বার করে দিচ্ছি।' বলে
অমিতজির দাঁতের ফাঁক থেকে ছোট্ট চিকেনের টুকরোটা বার করে দিলো। কিন্তু হাতটা বেশি দূরে সরালো না। অমিতজির দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসতে লাগলো।
অমিতজি মুখটা একটু এগিয়ে এনে দেবশ্রীর ওই হাতের তর্জনী আর মধ্যমা কুকুরের মতো কামড়ে ধরলেন তার দাঁত দিয়ে। তারপর মুখে নিয়ে চুষতে লাগলেন দুটো
আঙুল। চিকেন খাওয়াতে গিয়ে কাবাবের কিছু মশলা দেবশ্রীর হাতে আর আঙুলে লেগে গিয়েছিলো। সেগুলোই চুষে চুষে খেতে লাগলেন অমিতজি। দেবশ্রী তাকে দিয়ে
আঙুল খাওয়াতে খাওয়াতে হাতের অনামিকা আঙুলটাও অমিতজির মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো। তার শরীরের সাথে অমিতজির এরকম পুরুষালি ব্যবহারে দেবশ্রীর দু
পায়ের মাঝখানে ভীষণ কুড়কুড়ি লাগছিলো, যেন ওখানেও কেউ চুষে দিলে ভালো হয়। কিন্তু সে মুখে বললো, 'এটা কী করছেন - শুধু চিকেন পিস খেয়ে মন ভরেনি
বুঝি ?' অমিতজি দেবশ্রীর আঙুলগুলো ভালো করে চুষে খেতে খেতে বললেন, 'কী করে মন ভরবে, আপনিই তো বললেন চেটে পুটে খেতে।' বলে দেবশ্রীর ডানহাতটা
নিজের বাঁহাত দিয়ে খপ করে ধরে পুরো হাতটা, হাতের কব্জি থেকে আঙুল অবদি জিভ দিয়ে চাটতে লাগলেন। দু-একবার দেবশ্রীর আঙুলে কামড়েও দিলেন হালকা
করে। একটু আগেই কাবাব খাচ্ছিলেন অমিতজি, আর এখন তার হাত, তার নোনতা নোনতা মশলা লাগা আঙুলগুলো জন্তুর মতো ওই ধারালো দাঁত দিয়ে কামড়াচ্ছেন
তিনি - এটা ভাবতেই দেবশ্রীর শরীর যেন অবশ হয়ে এলো, একটা মেয়েলি ভালোলাগার জাদুকাঠি যেন কেউ ছুঁয়ে দিয়েছে তার শরীরে। সে আরো ঢলে পড়লো
অমিতজির দিকে। এক ইঞ্চির দূরত্বটাও মুছে দিয়ে তার বাঁদিকের স্তন পুরো ছুইঁয়ে দিলো অমিতজির বুকের সাইডে। তার মন বলছে, খেয়ে নিক, আরো খেয়ে নিক তাকে
এই পুরুষটা।
মন্তব্যসমূহ