সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মে, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

অপহৃতা - ১: বন্দিনী

সবকিছু অত্যন্ত তাড়াতাড়ি, প্রায় নিমেষের মধ্যে ঘটে যায় সেদিন| রাত্রির ঘুরঘুট্টি অন্ধকারে, রশিপুরের নির্জন রাস্তায় প্রায় নিঃশব্দে অন্ধকার চিড়ে চলে যায় মারুতিটি| তারপর যেন কিছুই হয়নি, এমনভাবে পড়ে থাকে থমথমে অন্ধকার রাস্তাটি| যার দুপাশের ঝোপঝাড়ের গাছের পাতাগুলো শুধু একটু আগে চলে যাওয়া যানবাহনটির হাওয়ায়ায় অল্প অল্প দুলছে, … ক্রমশঃ তাও থেমে গিয়ে একেবারেই স্থির আঁধারের পটচিত্র হয়ে দাঁড়ায় নির্জন পথটি| শুধু সকাল হলেই শোরগোল ওঠে রশিপুরের জমিদারের বাড়িতে| জমিদারবাড়ির সর্বকনিষ্ঠা অষ্টাদশী অপরূপ সুন্দরী কন্যা তন্নিষ্ঠা নিখোজ। স্বয়ং জমিদার বিভুকান্ত হন্তদন্ত হয়ে চলে আসেন থানায়| সারা রশিপুর থমথমে, সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ সত্ত্বেও কেউ কিছুই বলতে পারেনা|- ঘুমন্ত রাতের অন্ধকারে কখন যে মেয়েটিকে কে বা করা ইলোপ করে নিয়ে গেছে তার খবর কেউ জানেনা| সমস্ত শহরতলি তোলপাড় করে ফেলেও কোনো ফল না পেয়ে বিভুবাবু শেষপর্যন্ত হতাশ হয়ে গৃহে প্রত্যাগমন করেন| এখন পুলিশের বাহিনীর জোরদার তদন্ত এবং ইলোপকারীদের থেকে কোনো উচ্চমাপের চাহিদার অপেক্ষা ছাড়া তাঁর বিশেষ কিছুই করার নেই| সমস্ত প্রভাব খাটিয়েও তিনি এখন ব্যার্থমনা| ঘুমটা হঠাৎ ভেঙ্

শুভ জন্মদিন

 অরিন সান্যাল আজ সকাল থেকে নানা আয়োজনে যারপরনাই ব্যস্ত নিজের ৪৮তম জন্মদিন উপলক্ষে| আজ দশ বছর বিপত্নীক এই ভদ্রলোকের প্রাসাদোপম বাড়িতে মানুষ বলতে তিনি এবং তাঁর অষ্টাদশী দুহিতা মল্লিকা ওরফে মলি| নিজের দিনে ১২ ঘন্টার ব্যবসা নিয়ে, এবং তল্লাটের সকলের জল্পনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠা তাঁর চোখ ধাঁধানো সুন্দরী কন্যাকে সামলাতে দিনের তাঁর আর বাকি কিছু থাকে না| কিন্তু আজকের দিনটি তিনি সমস্ত কাজ থেকে ছুটি নিয়েছেন| অনেকদিন বাদে হঠাত তাঁর শখ হয়েছে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে কিছু করার| তিনি জানেন জন্মদিন ব্যাপারটি এখানে সামান্য উপলক্ষ ছাড়া কিছুই নয়, আসল ইচ্ছা তাঁর একদিন শ্বাস ছাড়ার| দিনের বেলা আয়োজন, এবং বিকেল থেকে নিমন্ত্রিত পাড়া-পড়শী, মেয়ের বন্ধু-বান্ধবী, অফিসের কলিগ ও নানা আত্মীয়স্বজন এবং শুভানুধ্যায়ীদের এক জমজমাট সমাবেশে কেক কাটা, এবং তারপর রাত্রে সকলকে নিয়ে ভুরিভোজনের পরিকল্পনা তাঁর| সকাল থেকে উঠে আয়োজনমূলক নানা কাজকর্মের ফাঁকে নিজের মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি| কাজ থেকে এবার বিরতি নিয়ে তিনি চলে আসেন মল্লিকার ঘরে| দরজা খুলে ঢুকে তিনি দুহিতাকে আবিষ্কার করেন অগোছালো বিছানার উপর ঘুমন্ত অবস্থায়| শ্বাস ফেলে তি

মহানগরের আলেয়া - ৩: অচীনপুরের রাজকণ্যা

 < আগের অংশ যেদিন রাতে ইন্দ্রাণীর সাথে দেখা হয় না সেরাতে চুপচাপ নিঃসাড় হয়ে মশার কামড় খেতে খেতে ভাঙ্গা তক্তপোষে শুয়ে ওই নাম না জানা রাজকন্যের স্বপ্ন দেখে। ওই রকম সুন্দরী যদি কেউ ওকে ভালবাসত তাহলে ওর স্বপ্ন পূর্ণ হত, কিন্তু ওই নাম না জানা রাজকন্যে ওর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ওর ট্যাক্সিতে যেসব সুন্দরীরা চাপে তারা শুধু মাত্র ধনী পুরুষের সাথী হয়, ওর মতন ট্যাক্সি চালকের সাথী হয় না। বেশ কয়েকদিন ইন্দ্রাণীর সাথে দেখা হয়নি, ছেলে মেয়ের সাথে দেখা করার জন্য দুর পাহাড়ে ওদের হস্টেলে ঘুরতে গেছে। ইন্দ্রাণী পাশে না থাকলে দানার বুকে অপার শূন্যতা দেখা দেয় তবে নিছক আলেয়া ভেবে সেই শূন্যতা বারেবারে দূরে ঠেলে দেয়। সেদিন অন্যদিনের চেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে, সারাদিনে ট্যাক্সি চালিয়ে আর অধির বাবুর টাকা মিটিয়ে তিনশ টাকা আয় হয়েছে। সন্ধ্যের সময়ে বস্তি সোরগোলে ভরে ওঠে, বর্ষায় ধানা জমি যেন জীবনদান পেয়েছে। অনেকে কাজ করে বাড়ি ফিরে এসেছে, ছোট কচি কাঁচারা কেউ কেউ গলা হাঁকিয়ে পড়তে বসেছে অথবা কেউ গলির মধ্যে খেলে বেড়াচ্ছে। পুরুষ গুলো এক না হয় রুমার রুটির দোকানে বসে আড্ডা মারছে না হয় রাস্তার ওপাশে চিনুর চায়ের দোকানে আড্ডা মারছে।