সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পর্দাফাঁস

অনেক দিন আগের কথা। ওকে আমি প্রথমবার দেখেছিলাম এক গয়নার দোকানে। কেন সে কথা জিজ্ঞেস করা বোকাবোকা শোনাবে। গয়নার দোকানে মেয়েরা কি করতে যায়! গয়না কিনতে, আর কি! অনেক গয়না দেখে দোকানদারকে রীতিমত বিরক্ত করে সব শেষে নিজের পছন্দ মত একটা গয়না কেনা, আর ভুললে চলবে না যে বাজেটের কথা মাথায় রেখে সব দিক বিবেচনা করে শেষমেশ একটা কিছু খরিদ করে নেওয়া। এই আর কি।

আমিও অনেক বছর হয়ে গেল কোনও গয়না কিনি নি। আর সত্যি কথা বলতে হাতে টাকা জমতে শুরু করেছে অনেক দিন ধরে, কিন্তু আমার কাছে ভাল গয়না একটাও যে নেই। অনেক দিনের পরিকল্পনা, যে এইবার পূজার আগে একটা ভাল দেখে নেকলেস আর না নিলেই নয়। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই এখানে আসা। আজ আমার দুপুরের পর অফ,তাই চলে এলাম।

একাই এসেছি। আমার হবু বর আমার সাথে দোকানে আসতে রাজি না হওয়ার কারণ অবশ্য আমার অযথা সময় লাগানো জিনিস পছন্দ করায়, সে শাড়িই হোক বা গয়নাই হোক বা জিন্স টপই হোক। একটু দেখে শুনে না নিলে কেমন করে হবে। মেয়েদের শাড়ি আর বাজারের ইলিশ মাছ একই রকম মেপে ঝেঁকে না কিনলে শপিঙ্গে আসাটাই তো মাঠে মারা গেল।

দোকানে অবশ্য অনেক মহিলা ছিলেন। অল্প বয়সী মেয়েরাও ছিল। কোনও কোনও মহিলা ওনাদের বরের সাথে এসেছেন, ওনাদের বররা কোনটা পরলে ওনাদের ভাল লাগবে সে সব উপদেশ দিয়ে ওনাদের সাহায্য করে চলেছেন। একজন কে দেখে বুঝলাম ওনার সাথে ওনার বরের একটা ঠাণ্ডা ঝগড়া হয়ে গেল দোকানের ভেতরেই। যদিও দোকানদার বা ওনার কর্মচারীদের সেই ব্যাপারে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। বোধহয় এত বড় দোকানে এত দিন ধরে কাজ করে করে এই সব ছ্যানালি নাটক এর আগে অনেক দেখেছে ওরা। পছন্দ মিল খায় নি, আর কিছুই নয়। দু একটা অল্প বয়সী মেয়েকে দেখলাম তাদের হবু বর বা বয় ফ্রেন্ডকে সাথে করে নিয়ে এসেছে।

মোটামুটি সবাই পূজার আগে কিছু একটা কিনতে চায়। হয়ত বা কারোর নিজের বাড়িতেই পূজা হবে। অনেক আত্মীয় আসবেন সেখানে। ভালো শাড়ি আর নতুন গয়না না পরতে পারলে বোধহয় ফ্যাশন দাঁড়াবে না। অনেক কথা হবে পিছনে। বাঙালিদের মধ্যে গয়না আর শাড়ি যেন একটা স্ট্যাটাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কথা লিখতে বসেছি তার কথায় আসি। ওনাকে আমার চোখে পড়ার কারণ মাত্র দুটো, না প্রধানতও তিনটে, কিন্তু আসলে চারটে।

কারণ একঃ দেখলাম জলের মতন টাকা উড়িয়ে দিলেন মিনিট দশেকের মধ্যে। আমি প্রায় আধ ঘণ্টা ধরেও এটা সেটা দেখে ঠিক পছন্দ করে উঠতে পারছি না। কারণ অবশ্য একটাই। সেই যে বললাম বাজেট সমস্যা। না হলে সব কটাই হয়ত কিনে নিতাম। (মাঝে মাঝে এই সব দোকানে এসে নিজেকে ভীষণ গরীব মনে হয়। কিন্তু, কিছু করার নেই।) উনি গোটা দুই সোনার আংটি(এবং রীতিমত দামী) একটা রীতিমত ভারী সোনার নেকলেস (রীতিমত দামী যে হবে সেটা বলাই বাহুল্য), আর এক জোড়া মোটা সোনার ওপর আধুনিক ডিজাইন করা ভারী হাতে পরার বালা কিনে নিলেন, মানে বুক করে দিলেন। (মনে মনে হিংসাই হল। নিশ্চই কোনও বড়লোক ব্যবসায়ীর গিন্নি। তাই এত উদ্যাম বেপরোয়া ভাব।) জিনিস যা কিনলেন রীতিমত চোখ ধাঁধিয়ে যাবার মতন। পরে খেয়াল করে দেখলাম শুধু আমি কেন, আমার মতন অনেকেই মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ওনাকে দেখছেন।

কারণ দুইঃ ওনার পরিধানের পোশাকআশাক। আর কথা বলার ভঙ্গিমা। সময়ের সাথে সাথে আমরা বাঙালি মেয়েরা অনেক অগ্রসর হয়েছি। শুধু কাজে কর্মেই নয়। পোশাকআশাকেও। আমরা এখন অনেক ক্যাজুয়াল থাকি। কিন্তু ওনাকে দেখলাম উনি যেন সমস্ত মহিলা খরিদ্দারদের মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম। যে শারিটা পরেছেন সেটা ঠিক বেনারসি না হলেও, বেনারসি গোত্রীয় তো বটেই।

এরকম বস্ত্র পরিহিতা আজকের দিনে কলকাতার রাস্তায় খুব একটা দেখা যায় না, আর তাও এই ব্যস্ততার সময়ে, যখন ভারী শাড়ি পরে রাস্তায় প্রতিযোগিতা করতে নামলে শাড়িতে পা আঁটকে পড়ে গিয়ে প্রচণ্ড একটা বিপদ ডেকে আনার সম্ভাবনা। লাল শাড়ির সাথে ম্যাচ করা ছোট হাতা কাঁচুলির মতন লাল রঙের ব্লাউজ যেন ওনার পোশাকি আভিজাত্য অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে।

সঠিক বলতে পারব না, তবে দেখে মনে হল, পরিষ্কার ওয়াক্স করা হাত। শাড়িটা যেন নাভির একটু নিচেই পরা। যদিও নাভি শাড়ির নিচে ঢাকা। গলার স্বর গম্ভীর অথচ মধুর। অনেকের গলায় একটা সুরেলা ভাব থাকে। এনারও তাই। স্বল্পভাষী। কথা বার্তায় একটা ব্যক্তিত্ব আর আভিজাত্য ফুটে ওঠে।

কারণ তিনঃ ওনার চেহারা, স্বাস্থ্য আর গায়ের রঙ। অনেকের কথাবার্তা আর পোশাকে ব্যক্তিত্য প্রকাশ পেলেও, চেহারা অনেক সময় বেমানান লাগে। মনে হয় কোথাও যেন কিছু একটা গণ্ডগোল হয়ে গেছে। কিন্তু ওনার ক্ষেত্রে তেমনটা নয়। আমার আন্দাজ ঠিক হলে উচ্চতায় পাঁচ আটের কম হবেন না। এরকম উচ্চতা সচরাচর বাঙালি মেয়েদের মধ্যে দেখা যায় না।

মেয়ে ছেড়ে দিন, ছেলেদের মধ্যেই বিরল। মুখে একটা অদ্ভুত লাবণ্যর ছটা, সুন্দরী বলে ওনাকে ছোট করব না, সুন্দরীর থেকে একটু নয় অনেকটাই বেশী, মানে আমরা যাদের চলতি কথায় সুন্দরী বলে থাকি। সব থেকে দেখার মতন হল গায়ের রঙ, ফর্সা আর সোনালি রঙের মিশ্রনে যেন কেউ একটা গোলাপি আভা ছড়িয়ে দিয়েছে।

এরকম গায়ের রঙ নিজের চোখে না দেখলে কারোর বিশ্বাস করার কথা নয়। আমাদের মতন মেয়েদের তো রোদে পুড়ে পুড়ে গায়ের রঙের সব লাবণ্য আর ছটা শেষের পথে। মুখে এক ফোঁটাও প্রসাধন নেই, একটু হালকা লিপস্টিক ছাড়া, আর তাও বেশ রুচি সম্মত আর সম্ভ্রান্ত। ফিগার এমন, যেন ওনার সেই বনেদী টাইপের বেশভূষার মধ্যে থেকেও সেটা ফুটে বেরোচ্ছে। ঘাড় থেকে কোমর অব্দি যেখানে ঠিক যতটা মাংস লাগার কথা ঠিক ততটাই দিয়ে পাঠিয়েছেন ওঁকে ভগবান। পিছনে ফিরলে মনে হল শরীরের পেছন ভাগেও ভগবান কোনও কার্পণ্য করেন নি। যেখানে ঠিক যতটুকু দেওয়ার ঠিক ততটাই মেপে মেপে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বয়স বোধ করি ত্রিশের সামান্য উপরে হবে।

কারণ চারঃ আমি ওনার পাশেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নেকলেস পছন্দ করছিলাম। যতক্ষণ ওনার কেনা কাটা সম্পূর্ণ হয় নি ততক্ষণ যেন ওনার চারপাশে কি ঘটে যাচ্ছে সেই দিকে ওনার কোনও খেয়াল নেই। নিজের জিনিস পছন্দ করে হ্যান্ড ব্যাগ থেকে দুটো মোটা টাকার বান্ডিল বিলে পাঠানোর পর প্রথমবার আমার দিকে ওর নজর পড়ল। আমি তখন আমার সাত নম্বর নেকলেসটা গলার সামনে বিছিয়ে দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছি মানানসই হবে কি না, আর মাথায় ঘুরছে একটাই প্রশ্ন যে দামটা দোকানদারের সহকারী আমাকে বলেছে সেটা দেওয়া ঠিক হবে কি না। উনি এক পলক ঘুরে আমাকে দেখে নিয়েই বললেন, “ এটা নিও না। আগেরটাই তো ভালো ছিল।“ তারপর একটু থেমে ইতস্তত করে বললেন “ দাম টা যদিও এটার থেকে একটু বেশী হবে। “ আবার আরেকটু থেমে বললেন “বয়স কম ওইটাই নাও। পয়সা তো পরেও রোজগার করে নিতে পারবে।“

এর পরের ঘটনা। বুঝলাম আমি যেমন আড়চোখে ওনাকে লক্ষ্য করছিলাম, উনিও নিশ্চই আমাকে লক্ষ্য করেছেন। সহকারী ভদ্রলোক যেন ওনার কথারই অপেক্ষা করছিল। সাথে সাথে আমার হাত থেকে এই নেকলেসটা ছিনিয়ে নিয়ে আগেরটা আবার আমার হাতে দিয়ে আয়নার সামনে থেকে সরে দাঁড়াল। জিনিসটা সত্যি ভালো। ওনাকেও একবার সামনা সামনি পরে দেখালাম। উনি হেঁসে বুঝিয়ে দিলেন ভাল দেখাচ্ছে। নেকলেস ঘাঁটা শেষ করে ওটাই নেব মনস্থির করে সহকারী ভদ্রলোককে বলে দিলাম। আমার হাত থেকে নেকলেসটা ছিনিয়ে নিয়ে (মনে হয় যাতে আর মত পরিবর্তন করতে না পারি) বিল করতে চলে গেল। আমি ওনার দিকে এই প্রথম সরাসরি একটু হাসিহাসি মুখ নিয়ে তাকালাম। ওনার মুখেও একটা সাবলীল অকৃত্রিম হাঁসি। বললেন “এসো, ওইখানে গিয়ে একটু বসি। বিল করতে সময় লাগাবে। এখন প্রচুর ভিড়, আর সবাই খুব ব্যস্ত।“ সময় যে লাগবে সেটা আমারও মনে হয়েছিল। আমিও তাই আর কথা না বাড়িয়ে ওনার নির্দেশিত ক্রেতাদের জন্য বরাদ্দ সোফার একাংশে গিয়ে বসে পড়লাম। শরীরটা যেন একটু ছেড়ে দিল। না পরিশ্রম তেমন কিছু হয়নি আজ সারা দিন। কিন্তু পকেট থেকে এতগুলো টাকা এক ঝটকায় বেড়িয়ে যাবে ভেবে মনটা একটু বিষিয়ে উঠেছিল যেন। অবশ্য কয়েক মুহূর্তেই সেটা কেটে গেল, কারণ ওখানে বসেই উনি আমার সাথে সুরেলা কন্ঠে গল্প জুড়ে দিলেন। বেশ মিশুকে কিন্তু ভদ্রমহিলা। অবশ্য ওনার কথা বার্তায় একটা আভিজাত্য আর বনেদী গৃহিণীর ছাপ স্পষ্ট।

বিল হতে সত্যিই অনেক সময় নিল ওরা, আর সময় যত বাড়ছে দোকানে খরিদ্দারের ভিড়ও যেন ততই বেড়ে চলেছে। ধীরে ধীরে আমরা বন্ধু সুলভ কথাবার্তা শুরু করলাম। মেয়েরা বন্ধু সুলভ কথাবার্তা বলতে কি বোঝায় সেটা কার অজানা এই দুনিয়ায়। অর্থাৎ, এক কথায় আমরা একে ওপরের হাঁড়ির খবর একে ওপরের সামনে পাড়তে শুরু করে দিলাম। আমার বাড়ি, হসপিটাল সব খবর বললাম, এমন কি আমার একজন পাণিপ্রার্থী আছে সেটাও উগড়ে দিলাম। ওনার বিষয়েও অনেক কথা জানলাম। ওনার বাড়ি কলকাতা থেকে প্রায় একশত পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে একটা বনেদী গ্রামে। গ্রাম না বলে মফস্বল বললে ঠিক হবে। কিন্তু বেশ জনবসতি বিরল একটা জায়গায়। আমার আন্দাজ ঠিকই ছিল।

বনেদী জমিদার বংশের বড় ছেলের গৃহবধূ। তবে ওনার শশুর নাকি আর বেঁচে নেই। ওনার স্বামী ওনার সাথে বন্ধুর মতন মেশে, আর পূজার আগে কোলকাতায় ওনাকে প্রায় নাকি জোড় করে শাড়ি গয়না ইত্যাদি কিনতে পাঠান। ওনার স্বামী নাকি ওইখানকার একটা এবং একমাত্র বড় চালের গুদামের মালিক। বেশ কিছুক্ষণ খোশগল্প হওয়ার পর উনি যেন একপেশে ভাবেই আমাকে ওনাদের গ্রামে আর ওনাদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে বসলেন। আমি প্রথমে ব্যাপারটাকে অতটা গুরুত্ব দি নি। কিন্তু, এক সময় মনে হল যে উনি আমাকে বেশ জোড় দিয়েই ওনার বাড়ি যেতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। উনি নাকি খুব একলা থাকেন কারণ ওনার স্বামী সারা দিন বাইরে থাকেন ব্যবসার কাজে। আর ওনার কোনও বাচ্চা হয় নি। তাই ওনার নিঃসঙ্গতা আরও অনেক বেড়ে গেছে। ওনার স্বামী একদম রাতের দিকে বাড়ি ফেরেন। তাই পূজার সময় কটা দিনের জন্য ওনার বাড়িতে আমার পায়ের ধূলা পড়লে উনি যারপরনাই খুশি হবেন। আমাদের বিল চলে এসেছিল, আমি তখনকার মতন এই সংলাপে ইতি টানবার জন্য বললাম “আচ্ছা বেশ আমারও অনেক দিন বাইরে যাওয়া হচ্ছে না। একটু ভেবে দেখি। ওর সাথে একটু কথা বলে নি। তারপর জানাচ্ছি।“

মোবাইল নম্বর আদান প্রদান হয়ে গেল। বুঝলাম গ্রামে মোবাইল টাওয়ার পৌঁছেছে। বাইরে বেরোতেই দেখলাম একটা ভারী বনেদী ধপধপে সাদা অ্যাম্বাস্যাডার গাড়ি এসে থামল। যেন গারির চালক জানত যে উনি ঠিক এই মুহূর্তেই বাইরে বেরবেন। চালক গাড়ি থেকে নেমে পিছনের দরজাটা খুলে দাঁড়িয়ে থাকল। এই জনভর্তি রাস্তায় ফুটপাথের ধারে বেশীক্ষণ ধরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখলে পুলিশ এসে কেস দেবে। তাই ওনার ইচ্ছা থাকলেও উনি দাঁড়াতে পারলেন না। গাড়িতে ওঠার আগে আমার দুটো হাত ওনার কোমল হাতের মধ্যে নিয়ে আমাকে বললেন “তুমি আসলে সত্যিই আমি খুব খুশি হব। আর জেনে রেখ এটা আমার অন্তরের কথা।“ দরজা বন্ধ করতেই চালক লাফিয়ে গিয়ে সামনের সিটে উঠে গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট করে দিল। উনি গাড়ি শুরু হওয়ার এক মুহূর্ত আগে চালককে চাপা গলায় কি একটা বলতে গাড়িটা চলতে গিয়েও যেন দাঁড়িয়ে পড়ল কয়েক মুহূর্তের জন্য। জানলার কাঁচ নামিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন “তুমি ডাক্তার তো?” মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দিলাম হ্যাঁ।

উনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন “তুমি অনেক পড়াশুনা করেছ। আবারও বলছি, তুমি এলে সত্যি ভালো লাগবে। আশা করি তোমারও ভালো লাগবে। এসো কিন্তু, হ্যাঁ? “ গাড়ি ধীরে ধীরে এগোতে শুরু করে দিয়েছে। ওনার শেষ কথাটা কানে এল, অনেকটা যেন দীর্ঘশ্বাস মেশানো আছে সেই স্বরে, “ ষষ্ঠীর দিন সকাল সকাল চলে এসো। ষষ্ঠীর দিনই এসো কিন্তু।(কেন এত জোড় দিলেন জানি না) অমুক নম্বর ট্রেনে উঠলে বেশীক্ষণ লাগবে না…” বাকি কথাটা মিলিয়ে গেল রাস্তার কোলাহলে আর ইঞ্জিনের শব্দে। মনে মনে ভাবলাম সত্যি ভদ্রমহিলা বড়ই একা। বোধহয় কথা বলার লোক নেই। ওনার স্বামী ব্যবসা নিয়ে এতটা মেতে আছে যে উনি নিজের একাকীত্বে হাঁপিয়ে উঠেছেন আর তাই এই একদিনের ক্ষণিকের আলাপেই আমাকে নিজেদের বাড়িতে পূজায় যাবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে গেলেন। বড়লোক বাড়িতে এমনটাই হয়ে থাকে। আমি আমার পথে পা বাড়ালাম।

রাতে খাবার টেবিলে ***কে কথাটা পাড়লাম। যদিও আমি যে যাব বা যেতে চাই তেমন কথা বলিনি। আমার হবু স্বামী আর আমি এক সাথে একই ফ্ল্যাটে ভাড়া করে আছি। এতে নাক কুঁচকানোর মতন কিছু নেই। অনেকেই থাকে আজকের দিনে। ও আমাকে উৎসাহ দিল বেড়িয়ে পড়তে। ও নিজে আসতে পারবে না বলে দুঃখ প্রকাশ করল, কারণ ওঁকে একটু পড়াশুনার কাজে দিল্লি রওয়ানা হতে হবে দিন পাঁচেকের মধ্যে। সেটা অবশ্য আগে থেকেই স্থির ছিল। ফিরবে সেই প্রায় দুই মাস কাটিয়ে। তাই বোধহয় পূজার কটা দিন আমাকে সময় দিতে পারবে না বলে আমাকে ওখানে যাওয়ার জন্য উস্কে দিতে চাইছে। মনে মনে হেঁসে ফেললাম। ছেলেগুলো সেই ছেলেমানুষই রয়ে গেল। আমি যেন ওর কোনও সমস্যা বুঝি না। আর একজন ডাক্তার আরেকজন ডাক্তারের ব্যথা না বুঝলে আর কে বুঝবে। তবে ওর কথায় যে খানিকটা কাজ দিয়েছে সেটা বুঝলাম দুদিন পর। আর তাছাড়া আরেকটা ব্যাপারে একটা ক্ষীণ দুঃখ ছিল, কেন আমাকে পূজায় একা ফেলে রেখে দিয়ে যাচ্ছে, যদিও স্বেচ্ছায় যাচ্ছে না। আমি একমাত্র পূজার এই কটা দিনই ওঁকে নিজের মতন করে সব সময় পাই, সে বাড়িতেই হোক বা বাইরে হোক। বেশ হাত ধরে হাঁটা যায়, ঠাকুর দেখা যায়। আমার জন্ম দিনে আমার সাথে না থাকলেও তেমন দুঃখ হয় না, কারণ ব্যস্ততা আজ কার জীবনে নেই, কিন্তু এই কটা দিন যেন ঠিক হানিমুনের মতন। আগের বার আমরা বাইরে কাছাকাছির মধ্যে বেড়াতেও গেছিলাম। এইবার কিছুই হবে না। তবে সেটা অনেক আগে থেকেই স্থির করা ছিল। আর আমি মত দিয়েছি বলেই না ও বাইরে যাচ্ছে মাস দুয়েকের জন্য।

হাঁসপাতালে যাবার জন্য তখনও তৈরি হয়নি। ও তখনও রেডি হয়নি পুরোপুরি। আমি দুজনের ব্রেকফাস্ট তৈরি করতে ব্যস্ত। এমন সময় বেজে উঠল আমার মোবাইল। সেই মহিলা। প্রথমে দুএকটা সৌজন্যসূচক কথা বলার পরই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে আমি ষষ্ঠীর দিন সকালে যাচ্ছি কিনা। আমি একটু আশ্চর্য হয়েছি বুঝে আমাকে একটু জোড় দিয়েই বললেন “একবার এসেই দেখো। খারাপ লাগবে না। ভোর বেলায় উঠে প্রথম ট্রেনটা নিয়ে নিও। গাড়ি পাঠিয়ে দেব স্টেশনে। স্নান খাওয়া সব কিছু এখানে এসে আমার সাথে করবে। তোমার যত্নের কোনও ত্রুটি রাখব না এই যেন।“ ওনার কথায় যেন একটা অসহায় অথচ দৃঢ় আহ্বানের সুর ছিল যেটা মনের মধ্যে দাগ কেটে গেল। ব্রেকফাস্টের টেবিলে ***কে ওনার ফোনের কথা বলতেই ও আমাকে বলল “বলছি তো, যাও গিয়ে ঘুরে এস। জমিদার বাড়িতে থাকার সুযোগ আর কোনও দিন পাবে কি না বলতে পারি না। “ আমি তখন মুখে স্বীকার না করলেও মনে মনে ওখানে যাওয়ার জন্য রাজি আর তৈরি হয়ে গিয়েছিলাম। ষষ্ঠীর দিন খুব কাক ডাকা ভোরে উঠেই রওয়ানা দিলাম অজানাকে পাড়ি দিতে। বেরোনোর আগে শুধু গলায় এক কাপ গরম কফি ঢালার সুযোগ পেয়েছিলাম। ব্যস। ট্যাক্সি আমার সধর্মীই ঠিক করে গিয়েছিল দিল্লির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবার আগে। পাড়ার ট্যাক্সি, মুখ চেনা, সে ঠিক সময়েই হাজির ছিল সেই কাক ডাকা ভোরে। সমস্ত ট্রেনটা প্রায় ঘুমিয়েই ছিল। আমিও উঠে ঘুমিয়ে পড়লাম বসে বসেই। গন্তব্য স্থলে পৌঁছানোর পর দেখলাম সত্যি সেই দিনকার সেই সাদা রঙের গাড়িটা দাঁড়িয়ে আছে আমাকে অভ্যর্থনা করার জন্য। আর ওই তো সেই দিনের চালকটা গাড়িতে তে হ্যালান দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিড়ি টানছে। সামনে এগিয়ে আসতেই হাতের বিড়ি ফেলে আমার দিকে এগিয়ে এসে পিছনের দরজা খুলে হাঁসি মুখে আমাকে ভেতরে উঠে বসার জন্য আহ্বান জানাল। গাড়ি ছুটে চলল জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে। সত্যি বেশী লোকজন নেই এই তল্লাটে। এখন অনেক বেলা হয়ে গেছে। কিন্তু সমস্ত রাস্তায় খুব কম লোকজনের দেখা পেলাম। কলকাতা এতক্ষনে কল্লোলিনী হয়ে উঠেছেন নিশ্চিত।

ওনার বাড়ি যখন পৌঁছালাম তখন হাত ঘড়িতে এগারোটা বেজে তেত্রিশ মিনিট হয়ে গেছে। মাথার উপর চড়া রোদ। নাকে যদিও একটা সোঁদা গন্ধ আসছে, বোধ করি গতকাল রাত্রে বা আজ ভোরের দিকে বৃষ্টি হয়ে গেছে। ওনার বাড়িটাকে ঠিক বাড়ি না বলে মহল বললে ঠিক শোনাবে। কি বিশাল জায়গা জুড়ে যে এই প্রাচীন জমিদার বাড়ির ব্যাপ্তি সেটাও নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হবে। গাড়ির শব্দ শুনে এই জনমানবহীন মহল থেকে উনি নিজেই বেড়িয়ে এলেন। একটা সবচ্ছল হাঁসি মুখে আমাকে স্বাগত জানালেন। উনি যে সত্যিই আমাকে দেখে খুশি হয়েছেন সেটা ওনার ব্যস্ততা আর দৌড়াদৌড়ী দেখেই বোঝা যায়। আমাকে কপট রাগ দেখিয়ে বললেন যে আমার আসতে দেরী হয়ে গেছে কারণ উনি অনেকক্ষণ ধরে আমার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

ওনার পরনে একটা ভারী গাড় নীল রঙের তাঁতের শাড়ি আর লাল রঙের হাফহাতা ব্লাউজ। ভীষণ ঘরোয়া পোশাক। কিন্তু বুঝতে পারলাম যে এখনও সাজগোঁজ করে ওঠার সময় পান নি। কখন ঘুম থেকে উঠেছেন বোঝা শক্ত। কারণ মাথার টিপটা নিজের জায়গা চ্যুত হয়েই রয়ে গেছে। বুঝলাম সেটা ঠিক করার সময় পান নি। শাড়িটা আটপৌরে ভাবে পরা হলেও বেশ অবিন্যস্ত। বাম কাঁধের ওপর দিয়ে বিছিয়ে দেওয়া ভারী আঁচলটাও যেন নিজের আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠতে পারে নি। সাপের মতন ওনার সুগভীর স্তন বিভাজিকার মাঝে সরু হয়ে শুয়ে রয়েছে। ডান দিকের ভরাট স্তনটা শাড়ির তলায় ঢাকা থাকলেও বাম দিকের পুরু ব্লাউজে ঢাকা স্তনটা খাড়া হয়ে ওনার অবাধ্য অলস আঁচলের বাইরে মাথা তুলে উপরের দিকে উঁচিয়ে রয়েছে। শাড়ির আঁচলটা পেটের ওপর থেকেও সরে গেছে খানিকটা ডান দিক ঘেঁষে। শাড়িটা যে নাভির অনেক নিচে, সত্যি বলতে তলপেটের অনেক নিচে, মানে একদম যেন শেষ প্রান্তে বাঁধা আছে সেটা দৃষ্টি এড়ানো কঠিন। শাড়িটা যেন ওনার তলপেটের শেষ প্রান্তে ঠিক বাঁধা নয়, ওটা যেন অলস অজগর সাপের মতন ওনার গোপনাঙ্গের শুরুর জায়গাটাকে কোনও মতে আল্গা ভাবে বেষ্টন করে ঘুমিয়ে আছে।

ওনার শাড়ির আঁচলের বাইরে বেড়িয়ে আসা গোল ভীষণ রকমের সুগভীর নাভি যেকোনো ছেলের তো মাথা ঘুরিয়েই দেবে, সত্যি বলতে কি মেয়ে হয়ে বলতে লজ্জা নেই আমারও মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমার নাভিও যদি এমন সুন্দর গভীর হত আর আমার তলপেটও যদি এমন ফর্সা হত তাহলে আমিও নাভির প্রায় আধহাত নিচে শাড়ির বেঁধে গোটা দুনিয়াকে দেখিয়ে বেড়াতাম আমার নগ্ন তলপেটের শোভা। পেটের চামড়ায় এক ফোঁটা কোথাও যেন ভাঁজ পড়েনি। একদম মসৃণ। সামান্য একটু মেদ আছে বোধ হয়, না তাকে ঠিক মেদ বলা যায় না কারণ ফোলা ভাবটা একেবারেই নেই। আছে শুধু উষ্ণতা। আর? আর একটা গোলাপি গরম আভা যেটা ওনার নগ্ন নাভি আর নাভির চারপাশের পেট আর তলপেটের অনাবৃত অংশ থেকে ছড়িয়ে পড়ছে। সত্যিই সুন্দরী, মনে মনে না বলে পারলাম না। উনি ওনার চাকর দের পিছনে দৌড়ে বেড়াচ্ছিলেন, কেন জানি না আমার সময় থমকে গিয়েছিল ওনার স্তন বিভাজিকা আর ওনার তলপেট আর নাভির নগ্নতার উপর।

উনি ইতিমধ্যে আমাকে এসে অনেক কথা বলে গেছেন, কিন্তু আমি ঠিক চোখ ঘোরাতে পারিনি। সম্বিত ফিরল যখন উনি আমাকে ডেকে বললেন যে “এই যে এইভাবে এখানে ঠায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছ কেন? বাড়ি পছন্দ হচ্ছে না মনে হচ্ছে।“ তখনও আমার দৃষ্টি স্থির ওনার তলপেটের ওপর। এত সুন্দর নাভি কোনও মেয়ের হয়। চমকে চোখ তুলে তাকালাম ওনার চোখের দিকে। তাতে যেন এক টুকরো হাঁসি ঝিলিক খেলে গেল। চুরি করতে গিয়ে ধরার পড়ার একটা অসহায় ভাব আমার মনে উঁকি মারলেও ওনার মধ্যে কোনও রকম বিকার বা পরিবর্তন দেখলাম না। উনি তাহলে কিছুই বোঝেননি। বা বাড়িতে উনি এমনই অগোছালো থাকেন। যাক বাঁচা গেল। ওনার মধ্যে ওনার বেশভূষা ঠিক করার কোনও লক্ষণ চোখে পড়ল না। উনি একই রকম রয়ে গেলেন। ওনার সাথে চোখাচুখি হওয়ার পর উনি যেন একটু জোড় গলায় বলে উঠলেন “কি বরের কথা খুব মনে পড়ছে? না কি জায়গা পছন্দ হয় নি?” বলে ফেললাম “ না ঠিক আছে। খুব ই সুন্দর জায়গা।“ তারপর কথা ঘুরানর জন্য বললাম “ এখানে কে কে থাকেন?” “পরে সেসব কথা হবে। আগে হাত মুখ ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে নাও। খেতে বসতে হবে না? একটু হালকা হয়ে বসে পড়। “

এতক্ষন তো আমার নজর ওনার সুগভীর স্তন বিভাজিকা আর অনাবৃত গভীরতম নাভির ওপর আঁটকে ছিল তাই ঠিক বুঝতে পারিনি, এখন বসার পর লক্ষ্য করলাম একটা অদ্ভুত জিনিস। এই সময়েও বাড়ির মধ্যে উনি এক গাদা গয়না পড়ে আছেন। মনে মনে ভাবলাম হয় ওনার গয়নার বাতিক আছে, নইলে বোধহয় এটাই জমিদার বাড়ির নিয়ম। ইচ্ছে থাকুক বা না থাকুক আলমারিতে সাজানো পুতুলের মতন গয়না পরে থাকতে হয় সারা দিন। এখন হয়ত অভ্যাস হয়ে গেছে। আচ্ছা ওনার কি ডাকাতের ভয় নেই। এত গয়না বাড়িতে রেখে দিয়েছেন? একটাও তো দারোয়ান বা ওই জাতীয় কাউকে দেখলাম না। বাড়িতে কোনও পাহাড়া আছে বলে তো মনে হয় না। আর্থিক বাহুল্য থাকলেও জমিদারী যে আর নেই সেটা বেশ চোখে দেখে বোঝা যায়। তবু বাতিক আর অভ্যেস যায় নি। ডাকাত পড়ুক একবার হাড়ে হাড়ে শিক্ষে হবে।

এতক্ষনে বাড়িটার দিকেও নজর গেল। প্রায় পাঁচ তলা উঁচু বাড়ি। তবে পুরনো। জায়গায় জায়গায় ফাটল ধরেছে। ছাদের দিকে বেশ কিছু জায়গায় শ্যাওলাও ধরেছে। একবার চোখ বুলিয়ে বুঝতে পারলাম এক তলায় কম করে দশটা ঘর আছে। আমি যেই ঘরে বসে আছি সেই ঘরে আমার মাথার উপর একটা ভারী ঝামর মতন ঝুলছে। বাপের জন্মে এমন জিনিস চোখে দেখিনি। মাথার উপর ভেঙ্গে পড়লে কি হবে বলা শক্ত। এই ঘরটা বেশ অন্ধকার। যদিও হলদেটে বৈদ্যুতিক আলো জ্বলছে। ফ্যানও ঘুরছে নিঃশব্দে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঘরটা যেন কেমন জানি ভূতুড়ে আর অন্ধকার। আমি একটা পরিষ্কার সেকেলে সোফায় বসে আছি। ঘরের মেঝেতে এক ফোঁটা ধুলো দেখতে পেলাম না। হঠাৎ বুঝতে পারলাম যে আমি অসতর্ক ভাবে চটি না খুলেই ঘরে ঢুকে এসেছি।

গৃহস্থের পরিচ্ছন্নতা নষ্ট হবে মনে করে একটু যেন ভয় পেয়েই সোফা ছেড়ে উঠে বাইরে গেলাম চটি খুলতে। ঘরের বাইরে আসতেই গৃহকত্রির মুখোমুখি। আমি চটি খুলতে এসেছি দেখেই এক গাল হাঁসি নিয়ে বললেন, “উফ ব্যস্ত হতে হবে না। ঘর একটু নোংরা হলে কোনও ক্ষতি নেই। একটু পরেই পরিষ্কার করা হবে।“ তবু আমি চটি বাইরে খুলে রেখে আবার সেই ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলাম। অবশ্য প্রবেশ করার আগে একবার এক তলার বাকি ঘর গুলোর ওপর চোখ বুলিয়ে নিলাম। এত রোদের আলো বাইরে, তবু যেন মনে হল সব কটা ঘর কেমন অন্ধকার, অন্তত এখান থেকে দেখে তাই মনে হচ্ছে। আমি আবার সেই পুরনো সোফাটায় গিয়ে বসলাম আমার হ্যান্ডব্যাগটা পাশে রেখে। উনি এসে বসলেন আমার ঠিক সামনে, এক গা গয়না নিয়ে আর সেই একই রকম অবিন্যস্ত বেশভূষা। এতক্ষনেও শরীরের এক ফোঁটাও অনাবৃত অংশ ঢাকার প্রয়োজন বোধ করেন নি উনি।

কিছুক্ষণ আমরা দুজনেই দুজনের দিকে হাঁসি হাঁসি মুখ করে বসে রইলাম এই অস্বস্তিকর অন্ধকার পরিবেশে। অন্ধকার না হলেও একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থা। এখেত্রেও বলতে হয় যে চোখে না দেখলে বা আগে কোনও দিন এরকম পরিবেশে না এলে বোঝানো শক্ত। গোটা ঘরময় একটা আলো আঁধার মাখা আমেজ খেলে বেড়াচ্ছে চারপাশে। আমার মধ্যে অস্বস্তিতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে বুঝতে পেরে অবশেষে উনি নিজেই মুখ খুললেন। অবশ্য এতক্ষন ধরে উনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে যে কি দেখছিলেন সেটা ওনার মুখ দেখে বোঝার ক্ষমতা ভগবান আমাকে দেন নি। “কটা পিলার আছে বলতে পারবে এই বাড়িতে?” আমি বাধ্য হয়ে আবার দরজা দিয়ে বাইরের দিকে তাকালাম। সত্যি তো, কতগুলো পিলার আছে। এতক্ষন নজরেই পড়েনি। বললাম “কতগুলো হবে?” উনি হেঁসে বললেন “আটানব্বই”।

আমি চমকে উঠলাম যেন। অবশ্য আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কারণ এইরকম বড় বাড়িতে পিলারের সেঞ্চুরি করলেও আমি খুব একটা আশ্চর্য হতাম না। আমি খোলা দরজা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে জরিপ করার চেষ্টা করছি বুঝেই উনি বলে উঠলেন “ উফফ এখানে থেকে ঘাড় বেঁকিয়ে দেখার দরকার নেই। আমি পুরো বাড়িটা তোমাকে ঘুরিয়ে দেখাব। খুব ভালো লাগবে তোমার। অনেক রহস্য আছে এখানে।“ একটু যেন হেঁসে উঠলেন। ওনার হাঁসিটা খুব সাবলীল হলেও কেমন জানি ওনার হাঁসিতেও একটা রহস্যের গন্ধ ছিল। আমি একটা কথা ফস করে না বলে পারলাম না, “বেশ ভূতুড়ে বাড়ি কিন্তু এটা। এরকম বাড়ির কথা ছোটবেলায় গল্পের বইয়ে পড়েছিলাম। এখনও এরকম বাড়ি আছে দেখে বেশ আশ্চর্য লাগলো। “ পরের কথাটা না বলে থাকতে পারলাম না। “আচ্ছা একটা কথা বলুন, আপনার সত্যি এই পরিবেশে একা থাকতে ভালো লাগে? মানে, কেমন একটা অদ্ভুত নয়?”

উনি আমার কথা মাঝপথেই থামিয়ে দিয়ে বললেন ,” তোমার জন্য অদ্ভুত না লাগার কোনও কারণ নেই। তবে এই বাড়িতে বিয়ে করে এসেছিলাম আমি। সে অবশ্য অনেক দিন আগের কথা। কিন্তু এখন খারাপ লাগে না। আর তাছাড়া আমি তো একা নই মোটেই। আমার বরকে বলে দিয়েছি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসতে, বাড়িতে অতিথি এসেছে আর তাও সুন্দরী। “ ওনার সাথে আমিও হাসিতে যোগ না দিয়ে পারলাম না। উনি বলে চললেন “আর তাছাড়া অনেকগুলো চাকরও তো আছে। “ আমি একটু আশ্চর্য হয়েই চারপাশটা একবার দেখে নিলাম। এখানে আসা অব্দি একটা ড্রাইভার, গৃহের মালকিন আর একটা বেয়ারা চাকর ছাড়া আর কাউকে সবচক্ষে দেখতে পাইনি। অবশ্য মালকিন অনেক হাঁক ডাক করছিলেন এতক্ষন তাতে সন্দেহ নেই। সেতো নিজের কানেই শুনেছি। তবে আর যাই হোক না কেন নিজেকে মনে হচ্ছিল যেন উনবিংশ শতাব্দীতে ফিরে গিয়ে কোনও এক জমিদার বাড়িতে গিয়ে বসে আছি।

আবার সেই অস্বস্তি। চুপচাপ দুজন দুজনের মুখের দিকে তাইয়ে বসে আসছি। নো টক। এতক্ষন ওনার মুখের দিকে সম্মোহিতের মতন তাকিয়ে ছিলাম বলেই বোধহয় চার পাশে কি হচ্ছে খেয়াল করিনি। আবারও সম্বিত ফিরল ওনার কথায়। না বলা ভালো ওনার কথা কানের পর্দা স্পর্শ করার আগেই একটা কালো মতন কি জিনিস আমার আর ওনার চোখাচুখির পথে বাঁধা সৃষ্টি করল। বুঝতে পারলাম একটা চুল ভর্তি মেয়ের মাথা। আমার সামনে রাখা কাঁচের টেবিলের ওপর দুই থালা ভর্তি কিসব যেন সাজিয়ে রেখে দিয়ে চলে গেল। ওঁকে শুধু এই আলো আধারিতে দরজা দিয়ে বেড়িয়ে যেতে দেখলাম। পর মুহূর্তেই সামনের কাঁচের টেবিলের দিকে নজর নামিয়ে দেখলাম, হ্যাঁ দেখলাম , আর দেখে চমকে গেলাম। বাব্বা এতসব কি? কম করে দশটা লুচি। আর রাজভোগ। আমি মিষ্টি খেয়ে ভালো না বাসলেও, দেখে মনে হল অমৃত। পাশের প্লেটের ওপর ফুটন্ত আলুরদম। হঠাৎ যেন মনে পড়ে গেল। সকাল থেকে কিছু মুখে দেওয়া হয় নি। ওনাকে কিছু না বলেই একটা লুচি দিয়ে গোটা একটা ছোট আলু মুখে পুড়ে দিলাম। সত্যি অমৃত। প্রথম লুচির আমেজটা উপভোগ করে দ্বিতীয় লুচিটাতে হাত দিতে যাবে, কিন্তু স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াতেই ওনার চোখের দিকে চোখ গেল। উনি মিচকি মিচকি হাসছেন। “ভালো লেগেছে?” নরম গলায় প্রশ্ন টা এলো। আমি তখনও ঢোক গিলে উঠতে পারিনি। মাথা নাড়িয়ে জবাব দিলাম হ্যাঁ। “তুমি খাও। আমি আসছি।“ উনি উঠে পড়লেন।

চক্ষের নিমেষে ছটা লুচি যখন সাবাড় করে ফেলেছি তখন উনি আবার ফিরে এলেন। এসেই আবার ওনার নিজের জায়গায় বসে পড়লেন। খাবার মুহূর্তে কেউ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলে খুবই আশ্চর্য লাগে। এখনও লাগছিল। কিন্তু কি করা যাবে। বিড়ালের মতন মনে করে নিলাম আমি না তাকালেই হল। আমি না দেখতে পেলে গোটা দুনিয়া আমাকে দেখতে পাচ্ছে না। বাকি চারটা লুচির শেষটা যখন মুখে নিয়ে নিয়েছি তখন আবার শুনলাম ওনার গলা, আর তাই বাধ্য হয়ে গিলতে গিলতে ওনার দিকে তাকাতে বাধ্য হলাম। “আর লাগবে?” আবার সেই নরম মোলায়েম সুর। আবারও কথা বলতে পারলাম না। মাথা দুদিকে নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম না। মনে মনে ভাবছিলাম এত ভালো লুচি অনেক দিন খাইনি। আর সব থেকে বড় কথা লুচি যে এমন ফুলতে পারে আর এত নরম অথচ ফুরফুরে হয় সেটা আমার অজানা ছিল। আমি তো কোন ছাড়, আমার মা ও এরকম লুচি কোনও দিন বানাতে পারবে কিনা সন্দেহ। সত্যি এই জমিদার বাড়ির খাওয়া দাওয়ার জবাব নেই। কাঁচের গ্লাসে জল রাখা ছিল। সেটা গলায় ঢালতে না ঢালতে আবার ওনার সেই মোলায়েম স্বর।

“কত দিন হল কোলকাতায় আছে?” ঢোক গিলে বললাম “ অনেক দিন। মাঝে বাইরে গিয়েছিলাম পড়তে, আর তারপর…” বাকি কথা শেষ হল না। উনি একটু চটুল হাসির সাথে বলে উঠলেন “মদ চলে?” আমি যেন একটু হকচকিয়ে গেলাম। বাইরে ফাটা রোদ। এরকম বনেদী বাড়ি। আর উনি কিনা! উনি বললেন “এ বাড়িতে মেয়েদের মদ খাওয়াটা খুব খারাপ চোখে দেখা হয়, কিন্তু আমি খাই। (একটু খড়খড়ে গলায় হেঁসে বললেন) লুকিয়ে খেতে হয় না, বড় কর্তার বউ কিনা। তবে মদ খেতে পছন্দ করি এমন ভাববার কারণ নেই। তবে কি ভালো সঙ্গী বা সঙ্গিনী পেলে খেতে ভালোই লাগে।“ সঙ্গিনী কথাটা যেন একটু জোড়ের সাথেই বললেন। কেমন যেন শোনালো একটা কানে। মুখে জল নেই তবু ঢোক গিলতে বাধ্য হলাম। আমি হয়ত বলতে যাচ্ছিলাম যে এখন এই সময় কি খাওয়াটা, উনি উঠে পড়লেন “ মুখ দেখে বুঝতে পারছি খাওয়ার অভ্যেস আছে। আসছি। নিজেদের মধ্যে ছুটির দিনে একটু ফুর্তি করার জন্য খাব, তাতে আবার সময় অসময়ের কি আছে! “

আমি কিছু বলার আগেই উনি যেন রুদ্ধশ্বাসে বেড়িয়ে গেলেন ঘর থেকে। পেটে খাবার পড়ায় মাথাও যেন একটু চনমনে হয়েছে। ওনাকে পিছন থেকে দেখছিলাম। উনি ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলেন। দরজার ঠিক মুখে ওনার শরীরের সামনের ভাগে উজ্জ্বল সূর্যকিরণ এসে পড়েছে। ঠিক বুঝলাম না কি যেন একটা বেমানান লাগলো ওনাকে পিছন থেকে দেখে। পিঠের ওপর ব্লাউজের পিছনের অংশটা বেশ সংক্ষিপ্ত, তবে সেটা আমার চোখে লাগে নি। কোথায় যেন একটা খটকা লাগলো। এটাকে খটকা বললে ভুল হবে। কিন্তু সত্যি বলতে কি কিছু একটা আমার চোখ দেখেছে, অদ্ভুত কিছু নয় নিশ্চই, কিন্তু কিছু একটা বেমানান, বা হয়ত চোখ যেটা দেখতে আশা করেনি তেমন কিছু একটা, অন্তত এই পরিবেশে ওনার মধ্যে তো নয়ই, কিন্তু সেটা যে কি সেটা আমার মস্তিষ্ক ধরতে পারেনি। হ্যাঁ একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম ওনার থরথর করে আন্দোলিত হতে থাকা গোল মাঝারি আকারের ভারী নিতম্বের কম্পন, আর সেটা এই ভারী শাড়ির বাইরে থেকেও স্পষ্ট চোখে পড়ার মতন। উনি যেন কেমন একটা শরীর আর কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে হাঁটেন। আগের দিন ঠিক চোখে না পড়লেও আজ চোখে না পরে গেল না। নইলে এত ভারী শাড়ির নিচে হওয়া নিতম্বের কম্পন আর স্পন্দন চোখে পড়তে পারে না। কোমর দুলিয়ে , আমাদের ভাষায় পাছা দুলিয়ে দুলিয়ে হাঁটেন মহিলা, এমন অবিন্যস্ত বেশভূষা, আর সব থেকে বড় কথা নিজের অগোছালো অবস্থার প্রতি কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই, আর তার অপর এই বাড়বেলায় বসে মদ খান নিজের বাড়ির বৈঠকখানায়, বেশ রসিক আর আমুদে মহিলা তাতে কোনও সন্দেহ নেই, বেশ সাহসী তো বটেই।

উনি ফিরে এলেন ঠিক মিনিট দুয়েকের মধ্যেই। আবার কেমন যেন একটা কিছু অস্বস্তিকর জিনিস মনে হল ঠিক দরজা দিয়ে ঢোকার মুহূর্তে, ঠিক যখন ওনার পিছনে এসে পড়েছে দুপুরের উজ্জ্বল সূর্যের কিরণ। একটু ভাবার চেষ্টা করলাম, কিন্তু ভাবনায় ছেদ পড়ল পরবর্তী ঘটনায়। আমি এই সময় মদ খাব কি খাব না সেটা নিজের মুখে একবার ও স্বীকার করি নি। কিন্তু ওনার ঠিক পিছন পিছন একটা মাঝ বয়সী মেয়ে এসে ঘরে প্রবেশ করল। হয়ত এই আগের বাড় এসে খাবার বেড়ে গিয়েছিল, তখন অন্যমনস্কতায় ঠিক বুঝতে পারিনি। দুহাতে একটা বড় ট্রে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করেছে পরিচারিকা। এইবার মেয়েটাকে ভালো করে দেখার সুযোগ হল। ট্রে টা যখন আমাদের দুজনের মাঝখানে রাখা কাঁচের টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখছিল তখন এক ঝলকে দেখে নিলাম কি নিয়ে এসেছে মেয়েটা। একটা দামী ভদকার বোতল, সেটা পুরো ভর্তি, আর তার দুই পাশে দুটো গ্লাস, খুব সম্ভবত ইটালিয়ান কাঁচের, আর একটা বড় সোডার বোতল, এটাও ভর্তি, আর একটা ঠাণ্ডা জলের বোতল, ঠাণ্ডা কেন না তার গা দিয়ে জমাটে জলের ধারা গড়িয়ে পড়ছে ট্রের ওপর। সত্যি অদ্ভুত লাগলো এমন একজন গৃহবধূ এমন অসময়ে নিজের বাড়ির বৈঠকখানায় বসে মদ খাবার তোড়জোড় শুরু করেছেন। কলকাতার ব্যাপার আলাদা।

কিন্তু এখানে এই রকম অজপাড়াগাঁয়ে এমন জিনিস দেখতে হবে সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি। একটু আগে আমার মন বলছিল যে উনি রসিকতা করেছেন। কিন্তু এখন বুঝতে পারলাম উনি সত্যি রসিক আর আমুদে। এইবার আসি সেই মেয়েটার কথায় যে এইসব দিতে এসেছিল। সে আমার এঁটো প্লেটগুলো উঠিয়ে নিয়ে নিঃশব্দে চলে গেল। কিন্তু তারই মধ্যে কয়েকটা জিনিস আমি দেখে নিলাম। মেয়েটা লাল রঙের পাতলা শাড়ি পরে আছে। বাম দিকের স্তনের ওপর থেকে ওপরে পুরোটাই নগ্ন, মানে এক কথায় বাম ঘাড়ের ওপর কোনও বস্ত্রের আবরণ নেই। মানে এক কথায় ব্লাউজ পরে নি। হতে পারে। এই সব বাড়িতে এখনও এইসব কাজের মেয়েরা বাড়িতে তে এরকম এক কাপড়ে ঘোরাফেরা করে। কথাটা মাথায় আসতেই আমার চোখটা ক্ষণিকের জন্য হলেও ওর কোমরের নিচে নেমে গেল। হ্যাঁ আমার অনুমান নির্ভুল। মেয়েটার পাতলা শাড়িটা হাঁটুর ঠিক নিচে এসে শেষ হয়ে গেছে। শাড়ির নিচে হাঁটু থেকে গোড়ালি অব্দি ওর নির্লোম কালচে পা পুরো নগ্ন। হাঁটুর ওপর চোখ উঠতেই আমার চোখ আর মস্তিষ্ক এইবার এক সাথে বলে উঠল, শুধু ব্লাউজ নয়, মেয়েটা শাড়ির নিচে আর কিছুই পরে নি। মানে শায়া নেই ওর বস্ত্রের নিচে। কারণ পাতলা শাড়ির নিচে ওর জাং এর অর্ধেক অব্দি জায়গা যেন শাড়ির আবরণ থাকা সত্ত্বেও পুরো নগ্ন। বেশ বোঝা যাচ্ছে ওর নগ্ন উরু আর জাঙের অবয়ব। যদিও একটা পাতলা শাড়ির আস্তরণ থাকার জন্য আবছা। তবে তার ওপর কি আছে সেটা বুঝতে পারি নি, কারণ শাড়ির বেড় কোমরের যত কাছে উঠেছে ততই যেন মোড়কে মোড়কে আরও ঘন হয়ে উঠেছে। অনেক বেশী কাপড়ের আস্তরণ ওর উরু সন্ধিতে। বুঝলাম না শাড়ির নিচে কোনও অন্তর্বাস পরেছে কিনা। তবে মন বলল এই সমাজে এই রকম মেয়েদের ব্লাউজ, ব্রা, শায়া, প্যান্টি এইসব ছাড়াই এক কাপড়ে থাকতে হয়। তবে একটা কথা মানতে হয়, ব্রা পরে না, কিন্তু পাতলা কাপড়ের ওপর থেকে যতটা বুঝতে পারছি যে স্তনের অবয়ব এখনও অক্ষুণ্ণ আছে। এরকম অন্তর্বাস ছাড়া সারা দিন লাফালাফি , সারা ঘরের কাজ করা সত্ত্বেও শরীরের কোথাও কোনও রকম ঝোলা বা ঢিলে ঢালা ভাব আসেনি। একটা দীর্ঘশ্বাস আপনা থেকেই বেড়িয়ে গেল। আমরা এত ফিগার সচেতন, খাই মেপে মেপে, যত রকম ভাবে পারি নিজেদের ভারী অংশগুলোকে বিভিন্ন বন্ধনী দিয়ে বেঁধে রাখতে চাই যাতে ঝুলে না যায়, কিন্তু এত টাইট, এত মসৃণ, এত নরম আর দৃঢ় তো আমাদের স্তন বা শরীরের অন্য জায়গাগুলো নয়। মনে মনে মেনে নিলাম এই মেয়েটাও গড গিফটেড। মেয়েটা দরজা ভিজিয়ে দিয়ে চলে গেল।

“রুমি তুমি বড্ড ঘামাচ্ছ। একটু কি চেঞ্জ করে নেবে? অনেকটা পথ তো, “ তারপরেই হেঁসে বললেন “এই দেখো। আমিও কি পুরো পাগল হয়ে গেছি! আমার তো অনেক আগে বলার কথা ছিল। আসলে তোমাকে খাওয়ানোর চক্কোরে ভুলে গেছি যে তুমি কতদূর থেকে সেই ভোরবেলায় বেড়িয়েছ। এখন ভীষণ খারাপ লাগছে। দাঁড়াও।“ আমি যে ওনাকে কিছু বলব বা ওনাকে বাঁধা দেব তার সুযোগটা পর্যন্ত আমি পেলাম না। ওনার নামটা যেন কি বলেছিলেন। উফ মাথাটা আমার ও গেছে। “দি” বলে ডাকব ভাবছিলাম কিন্তু নাম না জানা থাকলে কোন নামের পাশে “দি” লাগাব? মানে যেমন আমরা বলি রুমিদি। উনি ততক্ষণে হাঁক পেড়েছেন “এই কে আছিস?” আমি সাথে সাথে বলে বসলাম “সরি, আপনার নামটা ভুলে গেছি। মোবাইলে শুধু “র” দিয়ে সেভ করে রেখেছি। আসলে এখানে আসব তো ঠিক ছিল না। আসলে ভেবেছিলাম যে্‌… ও হ্যাঁ মনে পড়েছে। রত্নাদি। “ এক মুখ হাঁসি যেন আপনা হতেই ফিরে এল। অপ্রস্তুত ভাবটাও যেন অনেকটা এক নিমেষে কেটে গেল। উনি কিছু বললেন না শুধু অল্প হেঁসে মাথা নাড়লেন আর ভদকার বোতলটার মুখ খোলার চেষ্টায় লেগে পড়লেন। একদম আনকোরা নতুন বোতলে যেমন হয় আর কি, একটা পাতলা স্টিকার লাগানো ছিল মুখের ঠিক সামনে, সেই জন্য হবে কি না জানি না, কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও খুলতে পারলেন না। ইতিমধ্যে দরজা খুলে সেই আগের মেয়েটিই এসে হাজির হয়েছে ওনার ডাক শুনে।

আরও কিছুক্ষণ এরকম নিরবে কেটে গেল। ওনার যেন হঠাৎ কি মনে পড়াতে লাফিয়ে সোজা হয়ে বসলেন। “হুক্কা খেয়েছ কখনও? “ আমাকে জিজ্ঞেস করলেন বেশ উত্তেজিত ভাবে। বললাম “ খেয়েছি বাইরে থাকতে দু একবার।“ উনি যেন প্রায় দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে গেলেন। দরজা খুলে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় শুনলাম আমাকে বলছেন “ ভালো হুক্কা আছে আমাদের কাছে। একবার চেখে দেখ। “ বাকি কথাটা শুনতে পেলাম না। বুঝলাম ওনার স্বামী নিশ্চই হুক্কা সেবন করেন। এই রকম বাড়িতে হুক্কার চল থাকাটা খুব একটা অদ্ভুত ব্যাপার নয়। কিন্তু উনি হুক্কাও টানেন। নিশ্চই ওনার বরকে লুকিয়ে লুকিয়ে। তবে বর বাড়ির ফিরে বুঝতে পারবে না যে বউ মদ খেয়েছে সেটা মেনে নেওয়া সত্যি কঠিন। ওনার পা নাই বা টলল, নাই বা ওনার কথা বার্তার কোনও হের ফের হল, কিন্তু স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কিছু ব্যক্তিগত ব্যাপার থাকে যেখানে এই ব্যাপারটা ধামা চাপা দেওয়া অসম্ভব। একটু পরে উনি ফিরে এলেন সেই মেয়েটাকে সঙ্গে করে। আমার গ্লাস খালি হয়ে গেছে দেখে যেন নিজেকে একটা ধিক্কার দিয়ে আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গি করে বললেন “এই দেখ, তুমি খালি হাতে বসে আছ?” একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম ওনার শাড়ির আঁচলটা ওনার ঘর্মাক্ত ঊর্ধ্বাঙ্গকে অর্ধ নগ্ন অবস্থায় রেখে মাটিতে লুটিয়ে চলেছে আর উনি এই ভাবে ঘরের মধ্যে অশালীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওনার বাঁদিদের সামনে। একটু অদ্ভুত যদিও। অবশ্য উনি যখন আগের বার এই মেয়েটিকে ধমকাচ্ছিলেন তখন ওনার কথা শুনে বুঝতে পেরেছি উনি আগেও এই মেয়েটিকে বলেছেন যে ওনার মদ্যপ অতিথিদের সামনে কিভাবে আচরণ করতে হবে। তার মানে আমিই প্রথম নই, এর আগেও উনি ওনার একাকীত্বের কারণে অন্যান্য মেয়েদের (বা ছেলেদের, এই চিন্তাটাও ঠিক এই মুহূর্তে উড়িয়ে দিতে পারলাম না) এই বাড়িতে নিয়ে এসে এইসব করেছেন। ওনার ব্যাপার স্যাপার খুব যে সুবিধার নয় সেটা বুঝতে পারছিলাম। উনি আমার জন্য পানীয় প্রস্তুত করছিলেন, নিজেকে একদিনের জন্য বেগম মনে হচ্ছিল। মেয়েটা টেবিলের উপর একটা বনেদী হুক্কা রেখে তামাক প্রস্তুত করছিল নিপুণ হাতে। মিনিট খানেক পর অগ্নি সংযোগ করে বোধহয় চলে গেল। কখন যে অগ্নি সংযোগ করল সেটা নেশার ঘোরে ঠিক বুঝতে পারলাম না, আর হুক্কার থিয়োরি আমি ঠিক জানি না। দেখলাম পাইপ থেকে একটা আবছা ধোঁয়াটে ভাব আর একটা অদ্ভুত গন্ধে ঘরটা ভরে যাচ্ছে, কিন্তু ভীষণ ধীরে ধীরে। আমার হাতে গ্লাস্টা ধরিয়ে দিয়ে উনি সেই আলুথালু অবস্থাতেই নিজের জায়গায় বসে পাইপের মুখটা নিজের মুখে পুড়ে দিয়ে ফুরফুর শব্দ করে কয়েকটা টান নিয়ে এক মুখ ধোয়া ছেড়ে দিলেন। আমি ঠিক সেই সময় গ্লাসে এক চুমুক মেরেছি। কেরকম যেন করে উঠল ভেতরটা। এ কি বিশ্রী গন্ধ। আগেও তো পাবে হুক্কা খেয়েছি কয়েকবার, কিন্তু এরকম বাজে গন্ধ তো কোনও দিনও পাই নই। এটা কি? অবশ্য পরের মুহূর্তে মনে হল বারে যেগুলো চলে সেগুলো হল ফ্লেভারড। ফ্লেভার ছাড়া হুক্কার মশলার গন্ধ বোধ করি এমনটাই হয়ে থাকে। আমার অভ্যেস নাই বলেই এমন অদ্ভুত গা গুলিয়ে উঠেছে।

গন্ধটা সত্যি বিশ্রী। মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। চোখের সামনেটা কেমন যেন আবছা হয়ে এসেছে।

হঠাৎ লক্ষ্য সাদা মতন কি একটা লম্বা জিনিস আমার দিকে এগিয়ে এসেছে। মাথাটা পরিষ্কার করে একটু ভালো করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলাম উনি পাইপটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়েছেন। হয়ত আমার বলা উচিৎ ছিল যে আমি এখন আর হুক্কা টানব না, কিন্তু কেন জানি না মুখ থেকে বের হল না। উল্টে ওনার হাত থেকে নিয়ে মারলাম একটা মোক্ষম টান। উফফ কি ঝাঁঝালো গন্ধ। কিছুটা ধোঁয়া বোধহয় অসাবধানতা বশত ভেতরে নিয়ে নিয়েছিলাম। ভয়ানক ভাবে বিষম খেলাম। যাক কয়েকবার জোড়ে জোড়ে কেশে নিজেকে সামলে নিলাম। কিন্তু সত্যি এত বাজে গন্ধ ওয়ালা জিনিস খেয়ে কারোর নেশা হয়? আবার আমার মাতাল মন পরক্ষণেই আমাকে বোঝাল যে ধুম্রপানের গন্ধও তো আমার ভালো লাগে না কিন্তু কত কোটি কোটি লোক আর আজকাল মেয়েরাও সেটা বেশ ভালো ভাবে উপভোগ করে। হতে পারে আমার অনভ্যাস। আরও বার কয়েক মারলাম টান। চোখের সামনেটা কেমন যেন আরও ঝাপসা হয়ে গেল। ঠিক কোনও কিছুই ঠিক ঠাক দেখতে পাচ্ছি না। বা হাতে ধরা গ্লাসের উপর থেকে আমার নিয়ন্ত্রণ কেমন যেন নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছি। ছিঃ, এখন কি গ্লাস ভাঙ্গব হাত থেকে ফেলে আর তাও আবার পরের বাড়িতে নিমন্ত্রিত হয়ে এসে। একটু নড়ে চড়ে বসলাম। ঠিক করলাম খুব স্বাভাবিক স্বরে বলতে হবে যে আমার একটু ঘুম ঘুম পাচ্ছে কারণ আমার ঘুম ঠিক ভাবে পোরেনি, তাই এখন, এইবার একটু ঘুমাতে যাব। কিন্তু ভেতর থেকে কোনও শব্দ বের হল না। ডান হাতের পেছন দিয়ে কয়েকবার বেশ ভালো ভাবে চোখ ডলে নিলাম। খুব আবছা দেখতে পেলাম উনি একটা স্বচ্ছ তরল ভর্তি গ্লাস হাতে নিয়ে বসে আছেন, সোফার উপর নিজের অর্ধনগ্ন শরীরটার ভার ছেড়ে দিয়েই বসে আছেন, আর মনে হল যেন ঠিক আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন। স্পষ্ট না হলেও মনে হল যেন উনার ঠোঁটের কোণে কেমন যেন একটা ক্ষীণ হাঁসি। ভেতর থেকে যেন সব শক্তি শেষ হয়ে গেছে। আমার হাঁটুর থেকে দু ইঞ্চি দূরে রাখা টেবিলটাও যেন কত দূরে মনে হচ্ছে। মানসিক স্থিরতা হারিয়ে যাচ্ছে। মন বলল গ্লাসটা এইবার রেখে দে মা, কিন্তু করলাম ঠিক তার উল্টোটা। ডান হাতে ধরে থাকা পাইপের ধূম ছাড়া মুখে আবার ঠোঁট ছোঁয়ালাম। আরে এ তো গাঁজা। এই গন্ধ আমার চেনা। অনেক আগের চেনা। অনেক বছর এই গন্ধের সাথে কোনও সম্পর্ক না থাকায় প্রথমে ঠিক চিনতে পারিনি, আর তাই এত নোংরা আর বিশ্রী লাগছিল গন্ধটা। মহিলা গাঁজা খান। আরে নিকুচি করেছে মহিলা, উনি আমাকে গাঁজা খাওয়াচ্ছেন। উফফ কি যে করব এখন। সমস্ত মনের জোড় এক করে কাঁচের গ্লাসটা টেবিলে নামিয়ে রাখতে গেলাম। কিন্তু গলাটা একদম শুঁকিয়ে গেছে। ডান হাত থেকে কখন যে হুক্কার নলটা মেঝেতে পড়ে গেছে সেটা টের পাইনি। দু হাত দিয়ে গ্লাস্টা মুখের উপর চেপে ধরে ওই বিষাক্ত পানীয় গলায় ঢেলে নিজের গলা ভেজানোর চেষ্টা করলাম। অন্য কেউ হলে নিশ্চিত বুঝতে পারত যে আমার শরীর খারাপ লাগছে, আর সাথে সাথে সাহায্য করতে ছুটে আসত, কিন্তু এই মহিলার মধ্যে কোনও হেল দোল লক্ষ্য করলাম না। একই ভাবে ঠাই বসে আছেন। অবশ্য ওনার অবয়বটাও কেমন যেন ধীরে ধীরে চোখের সামনে থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। খালি গ্লাসটা টেবিলে রাখার চেষ্টা করলাম, কিন্তু পারলাম না, চেতনা প্রায় শেষ, বুঝলাম টেবিলের শেষ প্রান্তে পৌঁছানোর আগেই হাত থেকে গ্লাসটা ছেড়ে দিয়েছি, একটা খুব ক্ষীণ শব্দ পেলাম, মাথার পেছন থেকে কেউ একটা বলে উঠল গ্লাসটা ভেঙ্গে ফেলেছি মাটিতে ফেলে। শরীরটাকে আলগা ভাবে সোফার ওপর এলিয়ে দিলাম। এখন আর স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই। নেশা যে ভালোই চড়েছে সেটা সবাই বুঝতে পারবে। কিন্তু আধ খোলা চোখে আবছা দেখলাম এখনও মহিলার মধ্যে কোনও হেল দোল নেই। যেই কে সেই। আমার গলা দিয়ে শব্দ বেরনো দূরে থাক, আমার সারা শরীর অদ্ভুত ভাবে অবশ হয়ে গেছে। অদ্ভুত একটা অবস্থা, আবছা আলোয় চারপাশের সব কিছু দেখতে পাচ্ছি, যদিও আবছা, সব কিছু আবছা শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু কিছু করার বা বলার বা নড়ার ক্ষমতা অবশিষ্ট নেই একটুও।

নেশার মধ্যে দেখলাম এইবার মহিলা উঠে দাঁড়িয়েছেন। হাতের গ্লাসটা টেবিলে সশব্দে নামিয়ে রেখেছেন। “মায়া, আয়। ওর হয়ে গেছে।“ গলায় একটা যেন কৌতুকের ছোঁয়া। আমার শরীরে কোনও জোড় অবশিষ্ট না থাকলেও মাথা যেন ঘোলাটে অবস্থাতেও কাজ করে চলেছে। আবছা বুঝতে পারলাম সেই মেয়েটা আমার চোখের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। “দিদি দাঁড়াতে পারবে?” এখন আর আপনি করে কথা বলছে না মেয়েটা। আর ওর নাম মায়া সেটার সংকেত আমার মস্তিষ্কের কোষগুলো পেয়েছে।

আমি বা হাতটা ওর দিকে বাড়ানোর একটা ব্যর্থ চেষ্টা করলাম, কিন্তু হাতটা যেন উঠলই না। নেতিয়ে পড়ে রইলাম। মেয়েটা আমার আধবোজা চোখের সামনে ঝুঁকে আমার সামনে ওর মুখটা নিয়ে এল। আমার ঘাড় ধরে একটু নাড়াল আমাকে। আমি নড়লাম না, না নড়তে পারলাম কই আর। বুঝতে পারলাম আমার হ্যান্ড ব্যাগটা আমার পাশ থেকে তুলে নিয়ে ওর মালকিনের দিকে এগিয়ে দিল। আবছা দেখতে পেলাম ওর মালকিন ব্যাগটা হাতে নিয়েই ব্যাগের চেনটা খুলে ভেতরটা হাতড়ে দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। উনি সোফায় বসে পড়লেন আবার। সব টাকা পয়সা ইত্যাদি বের করে টেবিলে রাখলেন পর পর। কিন্তু না টাকা মারার বোধহয় কোনও মতলব ওনার নেই। আবার সব ঠিক মতন ব্যাগের ভেতরে ভরে রেখে মায়ার হাতে ধরিয়ে দিলেন।

মায়া ব্যাগটা হাতে নিয়ে আমার কোলে রেখে দিল। আমি ধরতে পারলাম না। কোল থেকে ব্যাগটা পড়েই যাচ্ছিল, কিন্তু বুঝলাম মায়া শেষ মুহূর্তে ধরে নিল ব্যাগটাকে। আমার গালে দুটো আলতো টোকা মেরে বলল “দিদি, ও দিদি উঠতে পারবে?” আমি নড়তে পারলাম না। আমার গালের ওপর পরের বারের টোকাটা বেশ জোড়েই এল। এটাকে ঠিক ঘুম ভাঙানোর টোকা বলা যায় না, বরং বলা যায় যে সপাটে একটা চড় মারল এই কাজের মেয়েটা। সাথে সাথে আমার মাথাটা অন্য দিকে এলিয়ে পড়ল। চোখের কোনায় কি কয়েক ফোঁটা জল এসে জড় হয়েছে? সেটা ঠিক বলতে পারব না। আরেকটা থাপ্পড় পড়ল সজোরে গালের উপর।

“ এ তো পুরো আউট।“ পেছনে ফিরে ওর মালকিনের দিকে তাকিয়ে বলল। আমার মস্তিষ্ক আমাকে বলল এ মেয়েটা ঠিক চাকরানির মতন কথা বলছে না, বা ওর গলায় সেই ভয়ের স্বরটাও আর নেই। আবছা শব্দ পেলাম রত্নাদির গলার “মাগিটাকে তুলে নিয়ে যা। আমার কথা আমি রেখেছি। তোমরা কিন্তু…” বাকি কথা গুলো কেমন যেন হারিয়ে যাচ্ছে, কানে পৌঁছালেও, মাথায় পৌঁছাল না। আরেকটা সজোরে থাপ্পড় পড়ল গালের উপর। “গলা শুঁকিয়েছে?” আরেকটা ঠাপ্পড়, “কিরে মাগি, কথা কানে ঢোকে না?” আমার ব্যাগটা দেখলাম মেঝেতে নামিয়ে রেখে উঠে দাঁড়াল। একটা কেমন জানি ভীষণ অট্টহাসি দিয়ে বলল, “গলা শুঁকিয়েছে, চোখের ইশারায় বোঝাচ্ছে। “ দেখলাম ভদকার বোতলটা হাতে তুলে নিল।

মুটকিটা খুলে সামনে ছুঁড়ে ফেলে দিল। রত্নাদির সামনেই গলায় ঢক ঢক করে এক গুচ্ছ মদ ঢেলে দিল। বোধহয় একটু বেশীই ঢেলেছে। খক খক করে কয়েকটা কাশি দিল। ডান হাতের পেছনটা দিয়ে নিজের ঠোঁটটা মুছে নিল। পরক্ষণেই আমার বা পাশে সোফার খালি অংশে অনাবৃত ডান হাঁটুটা রেখে আমার মুখের ওপর ঝুঁকে পড়ল। ওর কাজল কালো চোখ গুলো আমার আধবোজা চোখের ওপর স্থির। সে চোখে যেন একটা আগুন জ্বলছে। মনে মনে একটা ভয় ধরে গেল। আমার একাধিক পুরুষ আর নারীর সাথে শয্যা ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে, কোনও দিন এমন ভয়ের আর অজানা শিরশিরানি ধমনীতে অনুভব করিনি। সে সব খেলার ছলে হয়েছে, কিন্তু বুঝতে পারছি না যে এখন কি হবে। নিজের ঠোঁটটাকে আমার কানের একদম কাছে নিয়ে এসে ফিসফিস করে কোমল গলায় বলল “ পিপাসা পেয়েছে?”

একটু থেমে আবার জিজ্ঞেস করল “ কি রে, পিপাসা পেয়েছে?” আমি চোখের ইশারায় কোনও মতে বোঝালাম সত্যি পিপাসায় মরে যাচ্ছি। “পেয়েছে!” হাঁসতে হাঁসতে পেছনে ফিরে বলল। আমার অসহায় চোখের ইশারা ও ধরতে পেরেছে। ডান হাতে আমার মাথার চুলের মুঠি নিজের শক্ত হাতে চেপে ধরল, অসম্ভব জোড় মনে হল ওর ওই হাতে। মাথাটাকে নিজের হাতের জোড়ে সোফার পিছন দিকে হেলিয়ে দিয়ে শক্ত করে ধরে রইল। দম বন্ধ হয়ে যাবার জোগাড়। খাবি খাচ্ছি যেন। মুখটা জলের আশায় হাঁ হয়ে গেল আপনা থেকেই। খোলা আধ খাওয়া মদের বোতলটা চেপে ধরল আমার খোলার মুখের ওপর। গন্ধ নয়, কিন্তু ঝাঁজটা নিতে পারছি না আর।

কিন্তু আমার শরীর আমার সাথে বিদ্রোহ করল। আমি চাইছিলাম না আর এই বিষটা নিতে। কিন্তু গলা এত শুঁকিয়ে গেছে যে তরল ব্যাপারটাকে আঁটকে রাখতে পারলাম না। প্রায় বোতল শেষ করে দিল আমার পেটের ভেতর। শেষের কয়েক ফোঁটা নিজের গলার ভেতরে ঢেলে দিয়ে আমার চুলের মুঠিটা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। “এখনও মাগি বমি করছে না। স্ট্যামিনা আছে। এরকমই চাই। নিয়ে চল।“ আধ বোজা চোখে দেখলাম রত্না দি এখনও সোফায় জড় ভরতের মতন বসে আছেন। “কি রে কথা কানে ঢোকেনি? চল নিয়ে চল। ওদের আসতে এখনও সময় লাগবে। তার আগে ডাক্তার আসবে। চল, বসে বসে গাঁজা টানিস না আর। “ মনে হল রত্নাদিরও যেন নেশা হয়ে এসেছে। তাই শুরুতেই ঠিক নড়তে পারল না।

মায়া নামক মেয়েটি ওর দিকে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়ে একটা চড় বসিয়ে দিল সজোরে আর সশব্দে। কে কার মালকিন বুঝতে পারছি না। আবার একটা ধ্যাতানি দিল রত্নাদিকে “চল ওঠ। তুই একটা সমাজের বোঝা।“ আমার চেতনা হারিয়ে গিয়েও হারিয়ে যাচ্ছে না কেন বুঝতে পারছি না। বার বার মন কে বোঝাতে চাইছি এ কিছুই নই, এ এক দুঃস্বপ্ন। একটু পরেই ঘুম ভেঙ্গে উঠে পড়ব, ব্যস সব আগের মত হয়ে যাবে। উঠেই নিশ্চই ঢাকের শব্দ শুনতে পাব। এখন তো সেই পূজা। কিন্তু কোথায় কি। নেতিয়ে পড়ে পড়ে দেখলাম রত্না দি উঠে দাঁড়ালেন টলমল পায়ে। কি যে হচ্ছে সত্যি বুঝতে পারছি না।

রত্না দি যে মায়ার মালকিন নন সেটা বুঝতে পারছি স্পষ্ট। মায়ার একটু আগে দেখা আচরণ ছিল একটা নাটক। এখন তো উল্টো মনে হচ্ছে। নায়িকারা শুরুতে অনেক সময় আসেন না। এখন সময় বুঝে ঠিক সময়ে ক্লাইম্যাক্সে এসে হাজির হয়েছেন তদারকি করতে। রত্না দি যেন সোফা থেকে উঠতে গিয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন। তবু নিজেকে সামলে নিলেন। মায়া ওনার দিকে তাকিয়ে বলল “তোকে আমরা ঠকাইনি। তুই আমাদের ঠকিয়েছিস। বেইমান কোথাকার। তোর যা প্রাপ্য সব পাবি। নে এখন কাজ কর। “ একটু আগে যাকে দেখে মনে হচ্ছিল যে ভয়ে কাঁপছে সে এখন তার মালকিনের উপর তুই তুকারি করে চিৎকার করছে।

দুজনে আমাকে এসে দুহাতে ধরে বগলদাবা করে সোফা থেকে উঠিয়ে নিল। আমার নিজের শরীরে যে কোনও জোড় অবশিষ্ট নেই সেটা আর কতবার লিখব। তবে হ্যাঁ যেটুকু বাঁচা কুচা ছিল সব মায়ার এই অদ্ভুত পরিবর্তনের পরে কোথায় যেন তলিয়ে গেছে। ওরা দুজন মিলে আমাকে নিয়ে প্রায় টানতে টানতে দরজা অব্দি নিয়ে এল। দূর থেকে একটা যেন বুট জুতোর শব্দ পেলাম। আবার কে আসছে। মনটা ভয়ে সিঁথিয়ে গেল। আর বেশ দৌড়ে দৌড়ে আসছে। কি মুশকিল আরেকটা মেয়ে। বয়স আমার মতন বা আমার থেকে হয়ত সামান্য একটু কম, বেশী কোনও মতেই নয়। এই মেয়েটা দেখলাম শার্ট প্যান্ট পরে এসেছে, পায়ে বুট জুতো। রত্নাদি আর মায়া কে সাহায্য করতে এগিয়ে এলো। চাপা গলায় মায়া কেই উদ্দেশ্য করে বলল “তাড়াতাড়ি ফ্রেশ করিয়ে একে কনে সাজিয়ে নিয়ে বেরোতে হবে গাড়ি করে। ডাক্তারবাবু এই এলেন বলে।“ ওরা আমার অসাড় শরীরটাকে প্রায় হ্যাচরাতে হ্যাচরাতে দোতলায় নিয়ে গেল। হাঁটুতে একবার পড়ে গিয়ে ব্যথাও পেলাম যেন। কিন্তু মনের ভয় আর ব্যথা এত বেশী যে হাঁটুর ব্যথা ঠিক অনুভব ই করলাম না। একটা অন্ধকার মতন ঘরে ঢুকিয়ে একটা বড় বিছানার ওপর ধাক্কা মেরে ফেলে দিল ওরা। “তেমন কিন্তু ভারী নয়। “ বোধহয় মায়াই বলল। সঠিক বলতে পারব না কারণ আমি এখন উপুড় হয়ে শুয়ে আছি। হয়ত দশ কি পনের মিনিট আমাকে এইভাবেই আমাকে শোয়া অবস্থায় একলা ফেলে ওরা ঘর থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিল।

যখন ফিরে এলো তখন ওদের গলা ছাড়াও আরেকজন পুরুষের গলা শুনলাম। এই কি ডাক্তার বাবু। আমার পিছনে দাঁড়িয়ে ওরা ফিস ফিস করে কি পরামর্শ করল সে কথাগুলো আমার ঠিক কানে ঢুকছিল না। একসময় অনুভব করলাম আমার কটন লেগিন্সের কোমরের কাছে এক জোড়া হাত নেমে এল। আমার কুর্তিটা কোমর থেকে তুলে দিয়েছে নিশ্চই। কারণ লেগিন্সের ওপরে পিঠের ওপর একটা গরম ভ্যাঁপসা হাওয়া অনুভব করলাম। ওই হাত জোড়া এইবার সরাসরি লেনিন্সের কোমরের ইলাস্টিক ব্যান্ডটা ধরে এক ঝটকায় নিচে নামানোর চেষ্টা করল। আমার শরীরের ভারের জন্য অবশ্য এত সহজে নামাতে পারল না।

একটা সজোরে ক্যাঁচ মতন শব্দ হল, আর তার পরের মুহূর্তেই অনুভব করলাম প্যানটি থেকে বেড়িয়ে থাকা পাছারা মাংসল অংশে সেই ভ্যাঁপসা গরম হাওয়ার ছোঁয়া। সব শক্তি দিয়ে একবার শেষ চেষ্টা করে ঘোরবার চেষ্টা করলাম। ওরাও বোধহয় আমার নড়াচড়াটা লক্ষ্য করেছে। কে একজন বিছানার ধারে এসে আমার দুটো হাত বিছানার সাথে চেপে ধরল। বুঝলাম কোনও এক হাতের (ডান হাতই হবে) কনুই দিয়ে আমার পিঠের ঠিক মধ্যভাগটাকে বিছানার সাথে চেপে রাখল। উফ কি গায়ের জোড় রে বাবা। হয় ব্যায়াম করে অথবা গায়ে গতরে খেটে খায়। আর অবশ্য আরেকটা ব্যাপার হতে পারে, সেটা হল এই যে আমার শরীরের হাল এই মুহূর্তে এতই বেহাল যে একটা বাচ্চা মেয়েও আমাকে এইভাগে চেপে ধরে রাখতে পারবে। এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে কোমরের কাছের হাত জোড়া প্যানটির ইলাস্টিক ব্যান্ডে হাত দিল। লেগিন্সটাকে অন্তত একবার হলেও নামানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু প্যানটির ক্ষেত্রে তেমনটা করল না। প্রথমেই কোমরের একটু নিচে ব্যান্ডটাতে হাত দিয়ে জোড়ে একটা হ্যাঁচকা টান মারল।

আমার কোমর আর পাছাটা যেন বিছানার ওপর একটু কেঁপে কেঁপে উঠল। আরেকটা সজোরে ক্যাঁচ মতন শব্দ হল আর তার পরের মুহূর্তেই পাছার নগ্ন চামড়ায় অনুভব করলাম সেই ভ্যাঁপসা গরম হাওয়ার পরশ। আমার পাছা আর পেছন দিকে প্রায় হাঁটু অব্দি পুরোটা থাই নগ্ন করে দিয়েছে। আরেক জোড়া হাত কিন্তু এখনও আমাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে রেখেছে। কয়েক মুহূর্তর জন্য ওই হাত জোড়া আমার পায়ের পাশ থেকে সরে কোথায় যেন চলে গেল। এই অচেনা মেয়েগুলো আর এই ছেলেটার সামনে এই ভাবে কোমরের নিচে নগ্ন হয়ে শুয়ে থাকতে যারপরনাই লজ্জা পাবার কথা, কিন্তু আমার মানসিক ভয় এখন লজ্জাভাবটাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। পাছার বাদিকের মাংসল বলয়ের উপরের দিকে ঠিক কোমরের নিচে একটা ঠাণ্ডা ভেজা স্পর্শ অনুভব করলাম। ভেজা নরম জিনিসটা দিয়ে আমার নগ্ন ত্বকের ওপর খানিকক্ষণ ঘষে জায়গাটাকে যেন আরও নরম করে ভিজিয়ে দিল। তার ঠিক কয়েক সেকন্ড পরেই একটা তীক্ষ্ণ সুচালো জিনিস সজোরে ঢুকে গেল আমার ভেজা চামড়া ভেদ করে। ওহহ, ইনজেকশন দিচ্ছে লোকটা আমাকে। কয়েক সেকন্ড ব্যস হাত জোড়া সরে গেল পেছন থেকে। ডাক্তারের কাজ শেষ।

একটা মেয়েলি গলা পেলাম “কতক্ষণ থাকবে?” এইবার স্পষ্ট শুনলাম লোকটার গলা “পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা তো থাকবেই। তবে পুরো বেহুঁশ হবে না। এখন যেমন আছে ঠিক তেমনই থাকবে। নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকবে। পুরো বেহুঁশ করে দিলে সমস্যা হবে। কারণ পথে চেকিং হলে একজন অজ্ঞান মহিলাকে নিয়ে কোথায় যাওয়া হচ্ছে সে প্রশ্ন বোঝানো শক্ত। “

মেয়েটা যেন কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। ডাক্তার তাকে একটু গলা চড়িয়ে থামিয়ে দিল। “আহ, বোকার মতন তর্ক করো না এখন। এক কাজ কর। তুমি খবর নাও যে গাড়ি রেডি কিনা। আর সাথে এটাও জেনে নিও যে থানার মধ্যে কোনও খবর গেছে কিনা। “ একটা মেয়ে বলল “সেটা আর এমন কি। থানার বাইরেই তো একজন কে বসিয়ে রেখে এসেছি। তবে একটা জিনিসে ভয় পাচ্ছি, পুরো বেহুঁশ না করে নিয়ে গেলে কেউ ধরলে যদি চিৎকার করে বসে বা কিছু বলে বসে তখন তো পুরো ব্যাপারটা ঘেঁটে যাবে।“

ডাক্তার বললেন “ সে চিন্তা তোমাকে করতে হবে না। চোখ তুলে শুধু চেয়ে থাকবে। কিন্তু কিছু বলতে পারবে না, নড়া চড়া করার কথা ভুলে যাও। ওই মদের নেশা আর গাঁজা আর ইয়ের (ইয়েটা যে কি সেটা আমারও জানার প্রবল আগ্রহ, কারণ আমার দৃঢ় বিশ্বাস ওই ইয়েটা গাজার সাথে মিশিয়ে দিয়েছিল বলেই আমার এখন এই হাল।) নেশাটা ধীরে ধীরে নেমে গেলেও ওষুধের নেশা পাক্কা পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা থাকবে। তার পরেও ঘণ্টা দুই তিনেক ঘুম ঘুম ভাব থাকবে। অবশ্য সব ঠিক ঠাক থাকলে ততক্ষণে আমরা ডেরায় পৌঁছে যাব। “

খেয়াল করলাম যে মেয়েটি আমাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে রেখেছিল সে আমার শরীরের ওপর থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিয়েছে। ডাক্তার বোধহয় ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। কারণ অনেকটা দূর থেকে ওর গলার আওয়াজ পেলাম “তোমরাও রেডি হয়ে নাও। আমি আসছি আধা ঘণ্টার মতন পরে। তারপর তোমরা তিন জন বেড়িয়ে যেও। একজন কিছু জিনিস পত্র কিনে নেবে, মেয়েলি জিনিস পত্র আর কি। আরেকজন বাড়িটার থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে খেয়াল রেখ কোথাও কোনও চড়া চড়া হচ্ছে কিনা। হ্যাঁ ওই তুমি (বুঝলাম এটা রত্না দিকে উদ্দেশ্য করে বলেছে) ছাড়া দুজনের কাছে পিস্তল আছে নিশ্চই। চরের তো আর অভাব নেই। সাবধান থাকা ভালো। তুমি যাবে মেয়েলি জিনিসগুলো কিনতে। আর তুমি যাবে গাড়িটার কাছে। থানার সামনেই আছে। গিয়ে এমন ভাব দেখাবে যেন তোমার দাদার বউ হঠাত করে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, এখানে ডাক্তার পাচ্ছে না। তাই একটু দূরে নিয়ে যেতে হবে। ও হ্যাঁ ব্যাগটা এখানেই রেখে যাচ্ছি। খেয়াল রেখ।“ ডাক্তার বেড়িয়ে গেল।

ডাক্তার বেড়িয়ে যেতেই ঘরের মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতা শুরু হল। আমার কিছু করার নেই এখন। আর সময়ের জ্ঞানও আমি হারিয়ে ফেলেছি অনেকক্ষণ মদের আর ওষুধের নেশায়। তিনজনে মিলে আমার অসাড় শরীরটাকে ধরাধরি করে বিছানা থেকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়ে দিল। মায়া ছাড়া (পরে জেনেছিলাম ওর নাম রমা) অন্য মেয়েটা আমার সামনে ঝুঁকে বসে নিপুণ হাতে আমার ছেঁড়া লেগিন্স আর প্যান্টিটাকে আমার শরীরের থেকে ছিঁড়ে শরীরের থেকে আলগা করে বিছানার ওপর ছুঁড়ে ফেলে দিল।

কোমরের নিচে আমি পুরোটা নগ্ন হলাম এই অপরিচিত তিনজন মেয়ের সামনে। নিচ থেকে রমার গলার আওয়াজ পেলাম “ ওয়াও লুক হোয়াট ওয়ে হ্যাভ গট হিয়ার! আওয়ার নিউ কমরেড শেভস হার ভ্যাজিনা।“

মেয়েটির ইংলিশ উচ্চারণ নিতান্ত খাঁসা। মনে হয় পড়াশুনা জানা মেয়ে। কিন্তু কমরেড কেন? চিন্তায় ব্যাঘাত্ ঘটল, মায়া আমার সামনে বসে আমার কামানো যোনীর বেদীতে হাত দিয়ে ঘষে একবার দেখে নিল।

“গুড অয়ান ডাউন দেয়ার ফর সিওর, কিন্তু শারীরিক ধকল কত নিতে পারে সেটাই দেখার। “

তিনজনেই আমাকে ঘিরে ধরে আমার কুর্তিটা আমার মাথার ওপর থেকে গলিয়ে খুলে নিল। আমি অসাড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকায় ওদের একটু বেগ পেতে হচ্ছিল তাতে সন্দেহ নেই, কিন্তু তাও বেশীক্ষণ লাগল না। আমার ব্রা খোলার ধারে কাছ দিয়ে গেল না ওরা। কাঁধের কাছে একটা হালকা টান দিয়ে আমার শেষ অন্তর্বাসটাকে আমার শরীরের থেকে ছিঁড়ে নিয়ে কোথাও একটা ছুঁড়ে ফেলে দিল।

আমাকে ধরাধরি করে ঘরের সংলগ্ন বাথরুমে নিয়ে গিয়ে আমাকে বাথরুমের দেওয়াল হেলান দিয়ে ভেজা মাটিতে বসিয়ে দিয়ে তিনজনেই বেড়িয়ে গেল বাথরুম থেকে। বেশ উচ্চস্বরে কথা বলছে ওর ঘরের ভেতর। “গা থেকে গয়নাগুলো খুলে ফেল মাগি। ডাক্তারের ব্যাগে ভরে রাখ ওই প্যাকেটে ভরে। আর জমিদার গিন্নির অভিন্য় এখন করতে হবে না।“ এটা মায়ার গলা।

রমার গলা এল সাথে সাথে “উই হ্যাঁভ তো সেল দেম অ্যাট দা আরলিয়েস্ট। এখন টাকার খুব টানাটানি চলছে। নতুন মাল আর খাওয়া দাওয়া খরিদ করতে হবে। আর মেয়েদের সংখ্যা বাড়ছে সেই খবর রাখ কিছু?“ এরা কারা? ডাকাত নাকি? তাহলে বলতে হবে পড়াশুনা জানা রাখাল। রত্নাদির সাথে কথা বলার সময় যদিও খুব রাগী রাগী স্বরে কথা বলছে, কিন্তু তাছাড়া কথাবার্তা বেশ পলিশড।

মিনিট পাঁচ সাতেক পর ওরা তিন জনেই আবার ফিরে এল বাথরুমে যেখানে আমার অসাড় নগ্ন শরীরটাকে ওরা এতক্ষন ফেলে রেখে গিয়েছিল। আধ বোজা চোখে দেখলাম তিন জনেই নগ্ন হয়ে এসেছে বাইরের ঘর থেকে। হয় আমাকে স্নান করানোর সময় নিজেদের পোশাকআশাক ভেজাতে চায় না , আর না হয় আমার সাথে ওরাও স্নান করে নেবে।

দ্বিতীয়টাই যে ঠিক অনুমান সেটা একটু পরে বুঝতে পারলাম। বাথরুমের একটা কোনায় একটা ছোট বসবার জায়গা ছিল। আমাকে নিয়ে গিয়ে সেখানে বসিয়ে দিল ওরা ধরাধরি করে। একজন আমাকে শক্ত করে ধরে বসিয়ে রখাল যাতে আমি পড়ে না যাই আরে বাকি দুজন শুরু করল আমাকে স্নান করাতে। রত্নাদি আর মায়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমাকে স্নান করাচ্ছিল। একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম রত্নাদির পায়ে, কুঁচকিতে ঘন লোম আর চুলের জঙ্গল, হাত টা যদিও ভালো ভাবে অয়াক্স করা।

মেয়েরা স্নানের সময় সব সময় মাথা ভেজায় না। সেই জন্যই বোধহয় স্নান শুরু করানোর আগে হাত তুলে নিজেদের মাথার চুল খোপার আকারে পেছনে বেঁধে রাখল দুজনেই। নেশাগ্রস্ত চোখে লক্ষ্য করলাম মায়ার বগল একদম নির্লোম, ঠিক আমার মতন। কিন্তু রত্নাদির বগল ভর্তি চুল, দেখে মনে হল না শেষ এক বছরের মধ্যে কোনও দিন শেভ করেছেন বলে।

মায়ার হাত পা আবছা দেখে মনে হল সম্পূর্ণ নির্লোম আর রত্নাদির থেকে অনেক পরিষ্কার, যদিও মায়ার উরু সন্ধিতে কালো ঘন জঙ্গলের সমাবেশ। রত্নাদির স্তনের আকার মনে হল ছত্রিশ-সি হবে, বয়স বা ওজনের ভারে সামান্য নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে। তবে তলপেটে মেদ একদম কম। ভালো মেন্টেন করেছেন সেটা মানতেই হবে। পড়ে শুনেছিলাম যে রত্নাদির বয়স সাইত্রিশের কিছু বেশী।

মায়ার টা আমার থেকে সামান্য একটু বড়। কিন্তু বেশ গোল আর বেগুনের মতন ছুঁচলো, কেমন একটু সামনের দিকে উঁচিয়ে আছে। একটা অদ্ভুত জিনিস লক্ষ্য করলাম মায়ার পেটের নিচের দিকে একটা বেশ কিছুটা জায়গায় চামড়া কোঁচকানোর দাগ যেটা সচরাচর বাচ্চা হওয়ার সময় ঠিক মতন খেয়াল না রাখলে মেয়েদের পেটের চামড়ায় পড়ে যায়। মায়ার কি বাচ্চা আছে নাকি? একটু আশ্চর্যই হলাম মনে মনে। গায়ে ঠাণ্ডা জলের ছোঁয়া পেয়ে সম্বিত ফিরে পেলাম।

মায়া অবশ্য স্নান শুরু করানোর আগে আমার একদম সামনে এগিয়ে এসে হাত দিয়ে আমার মাথার চুলগুলো মাথার পেছনে খোপার আকারে বেঁধে দিল। ওর উচ্চতা খুব বেশী নয়। যখন আমার মাথায় খোঁপা বেঁধে দিচ্ছিল তখন বেগুনের মতন নরম স্তনের বোঁটাগুলো ছিল আমার চোখের থেকে কয়েক সেন্টিমিটার দূরত্বে। বাদামি রঙের শক্ত বোঁটাটা বার দুয়েক যেন আমার কপাল আর চোখ ছুয়ে গেল। ওর স্তন আর বগলের কাছ থেকে ভীষণ একটা ঝাঁঝালো নোংরা ঘামের গন্ধ এসে আমার নাকে ধাক্কা মারল।

বোধহয় অনেক দিন স্নান করে নি। আর বোধহয় ডিও মাখার চল নেই ওর। যোনীদ্বার থেকে যে গন্ধটা পেলাম সেটাও খুব নোংরা, কেমন জানি একটা যোনীরস, ঘাম আর তিব্রা পেচ্ছাপের গন্ধের মিশ্রণ। বোধহয় শেষ কয়েকবার পেচ্ছাপ করে ভালো করে ধোয় নি জায়গাটা। আমার চুল বাঁচিয়ে ওরা ভালো করে আমার সারা গা জল দিয়ে ধুয়ে দিল।

সারা গা জলে ভিজে যাওয়ার পর আমার মুখে, গলায়, ঘাড়ে, আমার হাত উপর দিকে উঠিয়ে দুই বগলে, স্তনে, পেটে, দু পায়ে আর যোনীদেশে সাবানের একটা আস্তরণ ফেলে দিল। সামনেটা ভালো করে সাবান মাখিয়ে পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা রমার হাতে সাবানটা হস্তান্তরিত করে দিল। অনুভব করলাম পেছন থেকে রমা আমার সারা পিঠে নরম ভাবে প্রথমে সাবান মাখাল।

পিঠ শেষ করে আমাকে বসার জায়গা থেকে সামান্য উঠিয়ে আমার নরম পাছার ওপরও সাবানের একটা আস্তরণ ফেলে দিল, ভেজা মসৃণ আঙুলের যেন ছোঁয়া পেলাম আমার পাছার খাঁজে আর পায়ু ছিদ্রের মুখে। একটা অদ্ভুত শিরশিরানি খেলে গেল শিরদাঁড়া বেয়ে। রত্নাদি ইতিমধ্যে এক বালতি জল টানতে টানতে নিয়ে এসেছেন। রমার সাবান মাখানো হয়ে গেলে ওর হাত থেকে সাবানটা ফেরত নিয়ে মায়া এক মগ জল আমার পিঠের ওপর দিয়ে ঢেলে দিল।

পেছন থেকে রমা হাত দিয়ে ঘষে ঘষে পিঠ থেকে আর পাছার ওপর থেকে সমস্ত সাবানের ফ্যানা সরিয়ে দিচ্ছিল। আরও দুই তিন মগ জল ঢালার পর আবার আমাকে বসিয়ে পিছন থেকে শক্ত করে ধরে রাখল রমা। আমার গায়ে ভালো করে জল ঢেলে ধুয়ে পরিষ্কার করে তিনজনে মিলে আমাকে সেখান থেকে উঠিয়ে টানতে টানতে বাথরুমের বাইরে ঘরের মধ্যে নিয়ে এল।

এতক্ষনে রমার শরীরের দিকে চোখ পড়ল ওর গা থেকেও অদ্ভুত নোংরা ঘামের গন্ধ আসছে নাকে। ওর হাতে পায়ে লক্ষ্য করলাম সরু সরু কিছু লোম আছে, যোনীদেশ একই রকম ঘন জঙ্গলে ঢাকা। আর বগলতলিতেও ঘন চুলের জঙ্গল। এরা কি একটু নিজের খেয়াল রাখার সময় পায় না। রমার ক্ষেত্রেও একটা জিনিস লক্ষ্য না করে পারলাম না।

সেটা হল মায়ার মতন ওরও তলপেটে ভালো মতন স্ট্রেচ মার্কের দাগ আছে, অর্থাৎ মায়ার মতন রমাও কোনও কোনও না কোনও সময়ে গর্ভবতী হয়েছিল। ওর স্তন দুটো ছোট, কিন্তু ক্যাম্বিশ বলের মতন একদম গোল আর ফোলা ফোলা, বোঁটাটাও বেশ বড় আর কেমন যেন একটা গোলাপি আভা স্তন বৃন্তের চারপাশের বলয়ে।

ওরা তিনজনে মিলে তোয়ালে দিয়ে ভালো করে আমার সারা শরীরের জল মুছিয়ে দিয়ে আমার নগ্ন শরীরটাকে বিছানার উপর চিত করে শুইয়ে দিয়ে ওরা তিনজন বাথরুমে চলে গেল স্নান করতে। ভেতর থেকে ওদের ভাসা ভাসা গলার আওয়াজ আর জল ঢালার শব্দ পাচ্ছিলাম এই ঘর থেকে। নগ্ন হয়ে শুয়ে শুয়ে ওদের স্নান শেষ হবার অপেক্ষা করছি, আর তো কিছুই করার নেই এখন।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় গল্প

বিবাহিতা বড় বোনের জন্য

এই গল্পটা আমাদের লিখে পাঠিয়েছেন “মৌসুমি তামান্না চম্পা”। আমরা তার মত করেই গল্পটা শেয়ার করছি। -------------------------------------------------------------- সময়টা ১৯৯৬ সালের শুরুর দিকে। ঢাকার শ্যামলীতে একটা ফ্ল্যাটে থাকি আমি আর আমার বিবাহিতা বড় বোন   চম্পা। আমার নাম রাসেল। চাকুরী সুত্রে দুলাভাই গত পাঁচ বছর যাবত দুবাই প্রবাসী। বছরে দুবার সপ্তাহ দুয়েকের জন্য দেশে আসে দুলাভাই , ঐ সময়টুকু বাদ দিলে বাসায় লোক বলতে শুধু আপু আর আমি। কাজের মহিলা দিনের একবেলা আসে কাজ শেষে চলে যায়। আপুকে দেখাশোনার দায়িত্ব পালনের জন্য বাবা আমাকে তখন ঢাকায় গুলশান তিতুমীর কলেজে ইংলিশে অনার্স ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। আমার বয়স তখন ২০ , চম্পার বয়স ৩১। আপুর কোনো বাচ্চাকাচ্চা হয়নি তখনো। আপু দেখতে অনেকটা টেলিভিশন নায়িকা শমী কায়সারের মতোই। গায়ের ত্বক দুধের মতো ফর্সা মাঝারি গঠনের শরীর , ভরাট ডবকা তারপুরার মতো পাছা , ফোলা ফোলা স্তন , লম্বায় ৫ ' ৪"। আপুর থাই , পাছা চওয়া হওয়ার কারনে হাইটের তুলনায় আপুকে আরো লম্বা দেখায়। রাস্তায় চলাফেরার সময় ভড়াট পাছার ঢেউ রাস্তার ছেলে বুড়ো সবাইকে পাগল করে দিত। চম্পার ফর্স...

বাঙালি বধূর বিদেশীর কাছে চুদা খাওয়া

আমার নাম তুশি সারোয়ার। আমি বাংলাদেশি, তবে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় থাকি কারণ আমার স্বামী আলম সারোয়ার সিডনীতে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে জব করেন। আমি, আমার স্বামী, আর আমাদের ৪ বছরের ছোট্ট সন্তান এই নিয়ে সিডনীর একটি এপার্টমেন্টে আমাদের ছোট্ট সুখের সংসার। আমদের বিয়ে হয়েছে ৬ বছর হল। বিয়ের পরই আমার শ্বশুর-শাশুড়ি অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসতে বলেছিলেন। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল এটা ঠিক হবেনা। কারণ আমার শ্বশুর-শাশুড়ির একমাত্র ছেলের বউ আমি। বিয়ের পরপরই যদি চলে আসি সেটা খারাপ দেখায়। তাই আমি বিয়ের পর ৪ বছর বাংলাদেশেই শ্বশুর-শাশুরির সাথে ছিলাম। আলম এসময় অস্ট্রেলিয়ায় ছিল। তবে ও ছুটি পেলেই বাংলাদেশে চলে যেত। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে খুবই ভালবাসেন, কারণ তাদের কোনো মেয়ে নেই। আমার স্বামীই তাদের একমাত্র সন্তান। তাঁরা বলেন যে আমাকে পেয়ে নাকি তাদের মেয়ের অভাব ঘুচে গেছে। আমার স্বামী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্বামী। আমাকে ও খুব ভালবাসে। আমিও ওকে খুব ভালবাসি। আমি যখন অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি তখন আলমের সাথে আমার বিয়ে হয়ে যায়। আলম তখন বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে জব করছে অস্ট্রেলিয়ায়। অবশ্য এর আগে বাংলাদেশে দু’ বছর জব করেছে। আলমদ...

বউকে পরপুরুষের সাথে দেখার ইচ্ছাপূরণ

এই গল্পটি আমাদের লিখে পাঠিয়েছেন “মৌসুমি তামান্না চম্পা” । আমরা তার পাঠানো গল্পটি তার মতো করেই শেয়ার করছি। ============================================= আমি একজন ৩৯ বছরের বাঙালী পুরুষ। আমার স্ত্রী চম্পার বয়স ৩২ বছর। আমাদের ৬ বছরের একটা মেয়ে আছে। চম্পা বিয়ের আগে থেকেই বেশ ফিগার সচেতন, নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করে। ওর ফিগার এখন  ৩৭-৩০-৩৯, বেশ লোভনীয় ফিগার যেকোনো পুরুষের জন্য। আমার বহুদিনের সুপ্ত বাসনা যে আমার স্ত্রীকে অন্য পুরুষ চুদবে আর আমি সেটা দেখবো। কিন্তু চম্পাকে কখনো ইচ্ছার কথাটা বলার সাহস পাইনি। একদিন হঠাৎ করেই সেই ইচ্ছাটা পুরন হয়ে গেলো। আমি ও আমার বৌ বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখানেই আমার অনেকদিনের ইচ্ছাটা পুরন হয়ে যায়। কয়েক মাস এক নাগাড়ে অফিসের কাজ করে হাপিয়ে উঠেছি। মেয়ের পরীক্ষা শেষ, সে খালা বাড়িতে বেড়াতে গেছে। ভাবলাম এই সুযোগে আমি ও চম্পা কিছুদিনের জন্য কোথাও থেকে বেরিয়ে আসি। চম্পাকে বলতেই আনন্দে লাফিয়ে উঠলো। অফিস থেকে ৬ দিনের ছুটি নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্রের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। সেখানে পৌছে কোন হোটেলেই রুম পেলাম না। ফিরে যাবো কিনা ভাবছি এমন সময় একটা হোটেলের ম্যানেজার বললো, সৈকত বেশ কিছু দূরে...

আমার ও স্ত্রীর ফ্যান্টাসি

আমি প্রথমে আমার পরিচয় দিয়ে শুরু করছি. আমার নাম সৌরভ. আমার বয়স ৩০ বছর. আমার বয়স যখন ২৩ বছর তখন আমি আমার লেখাপড়া শেষ করে একটা সরকারী অফীসে চাকরী শুরু করি. আমার মা তখন আমার উপর বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করে. তাদের চাপের কারণে আমি মেয়ে দেখতে শুরু করি. আমি একটা ছোট শহরে থাকতাম. আমাদের শহরেই আমি একটা মেয়েকে দেখতে যাই. ওর নাম মিমি. আর বয়স তখন ছিল ১৯ বছর. আমি ওকে প্রথম দেখাতেই ওর প্রেমে পড়ে যাই. ও খুব সাধারণ একটা মেয়ে ছিল কিন্তু ওর চেহারাটা খুব কিউট. আমি আমার পেরেন্টসদেরকে জানাই যে আমি মিমিকে বিয়ে করতে রাজী. পরিবারিক ভাবে আমার আর ওর বিয়ে হয়ে গেলো. বিয়ের পর আমরা আমার কাজের জায়গায় চলে এসে একটা ভাড়া বাড়িতে থাকতে লাগলাম. আস্তে আস্তে আমাদের দুইটা বাচ্চা হলো. একটা ছেলে আর একটা মেয়ে. আর দিনে দিনে মিমিও সেক্সী হয়ে উঠছে. ওক দেখলে বুঝা যেতো না যে ও দুই বাচ্চার মা. আমাদের ২ন্ড বাচ্চা হওয়ার পর আমরা কলকাতায় চলে আসি. কলকাতাতে আসার পর আমাদের খরচ অনেক বেড়ে যায়. তাই মিমি একটা ব্যাঙ্কে চাকরী নেয়. আস্তে আস্তে মিমির প্রমোশন হয়ে ও ম্যানেজার হয়ে যায়. ব্যাঙ্কে চাকরী করাতে মিমিক...

গৃহবধু ও বাড়ির দারোয়ান

 আমার নাম সমরিতা, ২৬ বছর বয়স এবং ঢাকায় বসবাস করি। আমি বিয়ে হয়েছে ২ বছর আগে এবং এখন পর্যন্ত কোন সন্তানাদি হয়নি। গায়ের রঙ মাঝারি আর শরিরের গঠন ৩২-২৬-২৫। রাস্তায় বেরোলে অনেকে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। এইটা আমার প্রথম গল্প ”নাভেলস্টোরিজ” এ, তাই যদি কিছু ভুল হয় আমায় ক্ষমা করে দেবেন। যাক এখন মূল গল্পে ফেরা যাক। এইটা একটি সত্যি ঘটনা যা এক বছর আগে ঘটেছিল। আমার স্বামী সফ্টওয়ার ইন্জিনীয়ার আর আমাদের বিবাহিত জীবন ভালই কাটছিল। এই ঘটনাটা বিয়ের এক বছর পরেই ঘটে। আমাদের যৌন জীবন বেশ সুখেই কাটছিল এবং আমি তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলাম। কিন্তু দুরভাগ্য আমার, বিয়ের ছয় মাস পর আমার স্বামিকে এক বছরের জন্য আমেরিকা যেতে হোলও কোম্পানির কাজে। ভিসা না পাওয়ার জন্য আমার যাওয়া হোল না। প্রথম প্রথম সেরকম কোন অসুবিধা না হলেও কয়েক মাস যেতে না যেতেই একাকিত্ত আমায় কুরে কুরে খেতে লাগল, আর তাই চাকরির খোজ করতে লাগলাম। কিন্তু আজকাল চাকরির যা বাজার সহজে কি আর পাওয়া যায়। যৌন সুখ থেকে বঞ্ছিত হওয়ার দুঃখও আমায় কস্ট দিতে লাগল। প্রথম প্রথম আমরা অনলাইন চ্যাট করতাম স্কাইপিতেও কল করতাম কিন্তু অর কাজের চাপ বাড়ার জন্য সে ব্যস্ত হয়ে পরে আর আমা...